‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : ABNA
বুধবার

৮ মে ২০২৪

৬:৪২:৩৬ AM
1457044

গাজায় মানবিক সহায়তায় আহলে বাইতের অনুসারীদের ঐক্য প্রয়োজন : আয়াতুল্লাহ রামাজানী

আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থার মহাসচিব বলেছেন: ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি গভীর দৃষ্টি দিলে স্পষ্ট হয় যে, ধর্ম ক্ষোভের জন্ম দেয় না বরং ক্ষোভ প্রশমিত করে। ধর্ম, মানুষের অস্তিত্বে বিদ্যমান সমাধান না হওয়া বিভিন্ন সমস্যার নিরসনে ভূমিকা রাখে এবং মানব আত্মার স্বস্তি ও শান্তির কারণ হয়। পাশাপাশি মানুষের সাথে যোগাযোগ সম্প্রসারণে এক ধরণের দায়িত্ববোধের জন্ম দেয়।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থার সাথে সম্পৃক্ত ‘ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন অফ মুসলিম ডক্টরস উইদাউট বর্ডার’ কর্তৃক আয়োজিত "ধর্ম, স্বাস্থ্য ও মানবিক সহায়তা" শীর্ষক দ্বিতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৬ মে) সন্ধ্যায় তেহরান ইউনিভার্সিটি অফ মেডিকেল সায়েন্সেসের কনফারেন্স হলে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থার মহাসচিব আয়াতুল্লাহ রামাজানী "ধর্ম, স্বাস্থ্য ও মানবিক সহায়তা" শীর্ষক দ্বিতীয় সম্মেলনে বক্তৃতাকালে বলেন: সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ফাউন্ডেশনের লক্ষ্যে পৌঁছুনো সম্ভব।

তিনি বলেন: প্রাচ্য ও পশ্চিমে অনেকে মানব চিন্তা থেকে ধর্মকে দূর করার চেষ্টা চালাতো। তাদের চেষ্টা ছিল মূলতঃ দ্বীনকে ধ্বংস ও নিশ্চিহ্ন করা। এর ধারাবাহিকতায় তারা দ্বীনকে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ইত্যাদি অঙ্গনে সীমাবদ্ধ করার চেষ্টাও করেছে।

আয়াতুল্লাহ রামাজানীর সংযোজন: ধর্ম একটি বিস্তৃত ক্ষেত্র; দ্বীনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টির প্রতি আমাদের মনোযোগী হওয়া উচিত তা হল দ্বীন সম্পর্কে একটি সঠিক ও গভীর দৃষ্টিভঙ্গিতে পৌঁছুনো। ধর্ম বহুমাত্রিক একটি বিষয়, এটি বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ দু’দিককেই গুরুত্ব দেয়। মানব আত্মার তরবিয়্যত ও প্রতিপালন যেমন এতে গুরুত্ব রাখে তেমনি মানব স্বাস্থ্যও।

বিশেষজ্ঞ কাউন্সিলের এ সদস্য বলেন: কিছু লোক ধর্মকে ক্ষোভ সৃষ্টির কারণ হিসাবে উল্লেখ করে থাকে এবং একে একপ্রকার আত্মিক ও মানসিক চাপ বলে পরিচয় করাতে চায়। ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি গভীর দৃষ্টি দিলে স্পষ্ট হয় যে, ধর্ম ক্ষোভের জন্ম দেয় না বরং ক্ষোভ প্রশমিত করে। ধর্ম, মানুষের অস্তিত্বে বিদ্যমান সমাধান না হওয়া বিভিন্ন সমস্যার নিরসনে ভূমিকা রাখে এবং মানব আত্মার স্বস্তি ও শান্তির কারণ হয়। পাশাপাশি মানুষের সাথে যোগাযোগ সম্প্রসারণে এক ধরণের দায়িত্ববোধের জন্ম দেয়।

তার সংযোজন: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে একসময় কেউ কেউ বলত, এই উন্নয়নের কারণে ধর্ম ও ধর্মীয় শিক্ষার সাথে মানুষের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে। এমনকি পশ্চিমা বিশ্বে এমনও একটি দলের উদ্ভব হলো যারা বলতো, ঐশী ধর্ম বাইরে আমাদের (তৈরি) অন্য ধর্ম থাকতে পারে। মূলতঃ ধর্মীয় শিক্ষার বিষয়ে এদের গভীর জ্ঞান নেই।

তিনি বলেন: দিনের পর দিন আধ্যাত্মিকতার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। পশ্চিমা বিশ্বে আমরা বানোয়াট ও নকল আধ্যাত্মিকতার মুখোমুখি। আমেরিকা ও ইউরোপে এগুলোর সংখ্যা এখন প্রায় ৪ হাজার। যখন নকল ও জাল বলে কোন কথা আসে তখন তার অর্থ হলো আসল বলে কিছু আছে। আর যতদিন আসল থাকবে নকলের কোন স্থান নেই।

মাজমা’র মহাসচিব বলেন: বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাগুলিতে এই আধ্যাত্মিকতা বিবেচ্য নয়। কিন্তু আজ, শরীরীক দিক ছাড়াও, তারা সামাজিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক দিকের কথাও বলছে। এর মানে আমরা যতই এগিয়ে যাচ্ছি বিশ্ব সমাজে ধর্ম ও আধ্যাত্মিকতার প্রয়োজনীয়তা ততই বাড়ছে।

আয়াতুল্লাহ রামাজানী কোরোনা চলাকালীন সময়ের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন: ঐ সময় চিকিৎসক, নার্স, ধর্মীয় ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা জিহাদ করেছিলেন এবং নিজেদের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলেছিলেন; এ পথে তাদের অনেকে শহীদও হয়েছেন। ইসলামি বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা বলেছেন: ‘কতই না ভালো হত যদি মানবিক সহায়তার এই সৌন্দর্যগুলোকে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হতো’। যদি কেউ এমন দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী হয়, তবে কখনই সে বন্ধ পথের মুখোমুখি হবে না।

বক্তৃতার শেষ অংশে আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থার সমাবেশের মহাসচিব, ফিলিস্তিন ইস্যুর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন: বর্তমান পরিস্থিতিতে গাজায় মানবিক সহায়তার বিষয়ে আহলে বাইতের (আ.) অনুসারীদের ঐক্য প্রয়োজন। যারা মানবতার রক্ষক তাদের উচিত ঐক্য ও সংহতির মাধ্যমে গাজার এতিম শিশুদের জন্য স্বস্তিদায়ক পরিবেশ তৈরি করা। আজ গাজায় মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে মানবিক সহায়তা সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন।#176