বার্তা সংস্থা আবনা : পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে তেহরিকে তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) সঙ্গে অন্য উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলোর সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। শত শত জঙ্গী আফগানিস্তানের কুনার ও নানগারহার প্রদেশে টিটিপি’র অবস্থানে হামলা চালিয়েছে। এ সংঘর্ষে অন্তত একজন নিহত ও তিন জন আহত হয়েছে।
তালেবান সূত্র থেকে দাবি করা হয়েছে, লশকরে তৈয়্যেবা, আনসারুল ইসলাম, মোহমান্দ ফোর্সসহ স্থানীয় অন্য উগ্রবাদীরা একযোগে আফগানিস্তানে পাকিস্তানি তালেবান অবস্থানগুলোতে হামলা করেছে।
এর আগের খবরে বলা হয়েছিল, আফগান তালেবানরা এ হামলায় আক্রমণকারী গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা করছে। কিন্তু পরে আফগান তালেবান প্রধান মোল্লা ওমরের প্রতি টিটিপি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানালে সংঘর্ষ সে সময় এড়ানো সম্ভব হয়েছিল।
তবে পরবর্তীতে প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীগুলো একযোগে টিটিপির বিরুদ্ধে হামলা শুরু করে। আফগান তালেবান এ হামলায় অংশ নেয়নি বলে টিটিপি’র ‘কমান্ডার জানিয়েছেন।
টিটিপি’র ‘মোহমান্দ ফোর্স’ অংশের প্রধান ওমর খালিকের মুখপাত্র মুকাররাম খোরাসানি পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক ডনকে জানিয়েছেন, আফগান সীমান্তবর্তী জারোবি দাররা নামের গ্রামের কাছে অবস্থিত শোংরাইতে তালেবান অবস্থানের ওপর শত শত জঙ্গি একযোগে হামলা করেছে।
এ হামলার জন্য লশকরে তৈয়্যেবাকে দায়ি করেছেন তালেবান মুখপাত্র মুকাররাম খোরাসানি। তালেবানের মোহমান্দ অংশের প্রধান দাবি করেছেন, এ হামলা প্রতিহত করা হয়েছে এবং হামলাকারীদের একজন নিহত ও তিন জন আহত হয়েছে।
অবশ্য, এ সব সংঘর্ষ নো ম্যানস ল্যান্ডে হয়েছে এবং সেখানে আফগান সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। ওইসব এলাকা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় হতাহতের সংখ্যা স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করার কোনো উপায় নেই।
কিন্তু তালেবানের অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে লশকরে তৈয়্যেবার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ গোষ্ঠীটি কেবলমাত্র কাশ্মির এলাকায় ততপর রয়েছে বলে তাদের সঙ্গে টিটিপির কোনো সম্পর্কই নেই।
অবশ্য যে সব উগ্রবাদী হামলার মুখে পড়েছে তাদের বেশিরভাগ টিটিপি’র সদস্য। তারা সেনা অভিযানের হাত থেকে বাঁচার জন্য প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের মোহমান্দ, বাজৌর, মালখান্দ ডিভিশন এবং খাইবার এলাকা থেকে পালিয়ে এসে এখানে আশ্রয় নিয়েছে।
উগ্রবাদী অপর কমান্ডার শাহ সাহেব হত্যার সঙ্গে এ সংঘর্ষের সম্পর্ক রয়েছে। নিহত ওই কমান্ডার অন্য একটি গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দিতেন এবং এ গোষ্ঠী আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছিল। এ গোষ্ঠী ২০০৬ সাল থেকে মোহমান্দ এজেন্সিতে ততপর ছিল।
ওমর খালিদ খোরাসানি নেতৃত্বাধীন টিটিপি’র জঙ্গিরা ২০০৮ সালের জুলাইয়ে শাহ গোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে হামলা করে এবং শাহ সাহেবসহ অনেককে হত্যা করে। শাহ সাহেবের অনুগতদের বেশিরভাগকে অপহরণ করে হত্যা এবং মোহমান্দ উপজাতীয় এলাকা থেকে পুরো গোষ্ঠীটিকে নির্মূল করা হয়।
বর্তমানে এ গোষ্ঠীর বেশিরভাগ সদস্যই স্থানীয় জঙ্গি এবং তারা টিটিপি বিরোধী।