সৌদি যুবরাজের উদ্দেশ্য হলো ইরানের ক্ষমতাকে সঙ্কুচিত করে এনে তাকে পারস্য উপসাগরে সৌদি কর্তৃত্ব মানতে বাধ্য করা।
মোহাম্মদ আইয়ুব
ভাষান্তর: নূরে আলম মাসুদ
আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): গত ২৬শে নভেম্বর ইয়াহুতে, সৌদি যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমান কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ বিশ্লেষণ করে একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। আবনা পাঠকদের উদ্দেশ্যে ঐ প্রবন্ধের নির্বাচিত অংশের বাংলা অনুবাদ এখানে তুলে ধরা হল।
৬৮০ খ্রিষ্টাব্দ। নবী মুহাম্মদের (সা.) মৃত্যুর পঞ্চাশ বছরও পার হয়নি। ত্রিশ সহস্রাধিক সদস্যের এক সেনাদল মোতায়েন করলো ৩৩ বছর বয়সী তৎকালীন উমাইয়্যা খলিফা ইয়াজিদ। উদ্দেশ্য, নবীজির (সা.) নাতি হুসাইন বিন আলীর নেতৃত্বাধীন মাত্র ৭২ জনের এক ক্ষুদ্র দলকে মোকাবিলা করা। কারণ তিনি (ইমাম হুসাইন) উমাইয়্যা পরিবারতান্ত্রিক শাসনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। ফলশ্রুতিতে কারবালায় ফোরাত নদীর তীরে সংঘটিত হলো এক যুদ্ধ। যুদ্ধে ইমাম হুসাইন ও তার সঙ্গীদের প্রায় সকলকেই হত্যা করা হয়। নবী পরিবারের নারী ও শিশুদেরকে বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হয় উমাইয়্যা খেলাফতের রাজধানী দামাস্কাসে।
ইতিহাসের এই ঘটনাই শিয়াদের রাজনৈতিক পরিচয়কে সুসংহত করলো। আলীর শিয়া, অর্থাৎ হযরত আলীর অনুসারী। আলী ইবনে আবি তালিব [আ.], যিনি ছিলেন নবীজির (সা.) জামাতা, ইমাম হুসাইন পিতা, খুলাফায়ে রাশেদীনের চতুর্থ খলিফা এবং শিয়াদের প্রথম ইমাম। উমাইয়্যা খেলাফতকে যারা বৈধ বলেছিলো (তিনশ’বছর পর যারা সুন্নী নামে পরিচিত হয়,) তাদের সাথে শিয়াদের ধর্মীয় মতপার্থক্য পরবর্তী দুই শতাব্দী ধরে প্রকাশিত হয়। (যদিও অধিকাংশের ধারণা হলো ধর্মীয় মতপার্থক্যের কারণেই রাজনৈতিক মতপার্থক্য সৃষ্টি হয়েছিলো, কিন্তু আসলে) রাজনৈতিক বিভেদের থেকেই ধর্মীয় বিভেদটা শুরু হয়।
এ যুগের খলিফা ইয়াজিদ ইবনে মুয়াবিয়ার রাজনৈতিক উত্তরসূরী হলেন মুহাম্মদ বিন সালামন। সৌদি আরবের তেজোদীপ্ত যুবরাজ। তার বয়সও ৩৩ বছর। তিনিও সম্ভবতঃ শিয়াদেরকে শেষ করার এক যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, ৬৮০ খ্রিষ্টাব্দে যেমনটা করেছিলো ইয়াজিদ। মধ্যপ্রাচ্যে বিশেষতঃ সৌদি আরব ও ইরানের ক্ষমতার ভারসাম্যের কথা মাথায় রেখে লেবাননের হিজবুল্লাহকে প্রথম টার্গেট করেছেন তিনি। সৌদি আরবের সামরিক সক্ষমতার তুলনায় হিজবুল্লাহ অতি ক্ষুদ্র, কিন্তু তবু এই হিজবুল্লাহর উপরেই কারবালার ঘটনার পুনরাবৃত্তি করার ব্যাপারে যেন মনস্থির করেছেন যুবরাজ বিন সালমান। ঠিক যেভাবে সপ্তদশ শতকে ইয়াজিদের বাহিনী ধ্বংস করেছিলো হুসাইনের [আ.] ছোট্ট দলকে।
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরিকে রিয়াদে জোর করে আটকে রাখা হলো এই যুদ্ধের প্রথম ধাপ। সৌদি অর্থপুষ্ট হয়েও কেন তিনি জাতীয় ঐক্যের সরকারে হিজবুল্লাহকে স্থান দিলেন - সৌদির চোখে এটাই তার অপরাধ।
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে একদিকে হিজবুল্লাহর অংশগ্রহণ, অপরদিকে সৌদি ও তার পশ্চিমা সহযোগী কর্তৃক একে শিয়া-সুন্নি সাম্প্রদায়িক যুদ্ধ হিসেবে উপস্থাপন করা -এসবের ফলে লেবাননের ভিতরে সাম্প্রদায়িক বিভক্তি বাড়ছিলো; আর সেটাকে কমিয়ে আনার জন্যেই সাদ হারিরি জাতীয় ঐক্যের সরকারে হিজবুল্লাহকে স্থান দিয়েছিলেন। উপরন্তু সরকার থেকে হিজবুল্লাহকে বাদ দিলে দেশ শাসন করাও কঠিন হয়ে যেত। কারণ সৌদির চেয়ে কম হলেও হিজবুল্লাহর সামরিক সক্ষমতা এখন লেবাননের আর্মির চেয়ে বেশি। লেবাননের প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠী শিয়া; আর তাদের উপর হিজবুল্লাহর যথেষ্ট প্রভাব। হিজবুল্লাহকে বাদ দিলে সরকারের প্রতি এই বিশাল জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক সমর্থনও ঝুঁকির মুখে পড়ত।
হিজবুল্লাহকে সৌদি আরব দেখে তার শত্রুদেশ ইরানের ছায়া হিসেবে। এই ইরানের সাথেই সে পারস্য উপসাগরে কর্তৃত্বের প্রতিযোগিতায় আটকা পড়ে আছে। এ এমন এক প্রতিযোগিতা, যা কোনো রীতিনীতির তোয়াক্কা করে না। সৌদি যুবরাজের আসল উদ্দেশ্য হলো ইরানের ক্ষমতাকে সঙ্কুচিত করে এনে তাকে পারস্য উপসাগরে সৌদি কর্তৃত্ব মানতে বাধ্য করা। সপ্তম শতকে ইমাম হুসাইন (আ.) কর্তৃক ইয়াজিদের শাসন মেনে না নেয়াকে ইয়াজিদের শাসনের ধর্মীয়-রাজনৈতিক বৈধতার প্রতি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হয়েছিলো; ঠিক একইভাবে আজকে ইরান কর্তৃক সৌদি কর্তৃত্ব মেনে না নেয়ায় ওয়াহাবী আলে সৌদ মনে করছে তাদের নেতৃত্বের ধর্মীয়-রাজনৈতিক বৈধতা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। কেননা শক্তিশালী শিয়া রাষ্ট্র ইরানও নিজেকে আদর্শ ইসলামী রাষ্ট্র হিসেবে দেখিয়ে থাকে, এবং সৌদিকে ইসলাম ও মুসলিম স্বার্থের একচ্ছত্র নেতা হিসেবে মানতে নারাজ। সপ্তম শতকের মত একইভাবে আজ সৌদি-ইরান দ্বন্দ্বে ক্ষমতা ও ধর্মীয় বৈধতার ইস্যু পরস্পর জড়িত হয়ে গিয়েছে।
তবে এই দুইয়ের মাঝে একটা বড় পার্থক্য আছে। ইমাম হুসাইনের মত কয়েক ডজন সদস্যের দল নয় ইরান যে তাদেরকে সহজেই পরাজিত করা যাবে। বরং ইরান নিজ ক্ষমতাবলেই অত্র অঞ্চলের একটা বড় রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। অপরদিকে বিশ্বের পাঁচভাগের একভাগ তেলের অধিকারী সৌদি আরব চাইলে অল্প সময়ের ভিতরেই ইরানের চেয়ে বহুগুণ বেশি ব্যয় করতে সক্ষম। কিন্তু অত্র অঞ্চলে টাকা দিয়ে প্রভাব কেনার সাম্প্রতিক সৌদি প্রচেষ্টাগুলো ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। এই ব্যর্থতার মাঝে সিরিয়ায় আসাদ-বিরোধী গ্রুপগুলোর পরাজয়ও অন্তর্ভুক্ত। সেখানে ইরান ও রাশিয়ার সহায়তায় আসাদ সরকার তার শত্রুদেরকে প্রায় মুছে ফেলেছে। এছাড়াও ছোট্ট দেশ কাতারকে একঘরে করার সৌদি প্রচেষ্টা শুধু ব্যর্থই হয়নি, বরং কাতারকে ইরানের প্রভাবে যেতে বাধ্য করেছে।
সর্বোপরি, হুথি বিপ্লবীদেরকে উৎখাত করার জন্য সৌদি আরব ইয়েমেনে যে নির্বিচার বোমা হামলা করছে, সেটাও শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছে। ইয়েমেনের অধিকাংশ এলাকা এখনও হুথিদের নিয়ন্ত্রণে। মার্কিন মদদে পরিচালিত সৌদি আরবের এই হামলায় ইয়েমেন অবর্ণনীয় কষ্টের শিকার হয়েছে বটে, তবে হুথিদের ক্ষমতা বিন্দুমাত্র খর্ব করতে পারেনি সৌদি আরব। শেষকথা হলো, প্রচুর অর্থ-সম্পদ ব্যয় করেও অত্র অঞ্চলে বিশ্বস্ত বন্ধু তৈরী করতে ব্যর্থ হয়েছে সৌদি আরব, তা সে বন্ধু আদর্শিকই হোক, কি কৌশলগতই হোক।
ওয়াহাবী আদর্শকে রপ্তানী করার সৌদি প্রচেষ্টা শুধু যে ব্যর্থই হয়েছে তা নয়, বরং তা ব্যাকফায়ার করে উল্টো সৌদির জন্য বিপদ বাড়িয়েছে। আল কায়েদা, আইসিস এর মত চরমপন্থী ধর্মীয়-রাজনৈতিক মতাদর্শ এই ওয়াহাবী মতবাদেরই শাখা। আর তারাই এখন সৌদি রাজতন্ত্রকে এক অনিসলামিক মুনাফিক রাষ্ট্র হিসেবে দেখছে, পরিণত হয়েছে সৌদির ঘোরতর শত্রুতে। সৌদি আরব হয়ত টাকাপয়সা ব্যয় করে নিজের পক্ষে সমর্থন কিনতে পারবে, কিন্তু সৌদির এই প্রভাব নিতান্তই যৎসামান্য এবং আমলে নেয়ার মত নয়।
অপরদিকে ইরানকে দেখুন। কঠোর অর্থনৈতিক অবরোধ সত্ত্বেও মধ্যপ্রাচ্যে তাদের সফল পররাষ্ট্রনীতি গর্ব করার মত; যদিও বড় শক্তিগুলো সম্মিলিতভাবে ইরানের আঞ্চলিক প্রভাবকে খর্ব করার কোনো চেষ্টা বাকী রাখেনি। ইরাকে তেহরানের প্রভাব অনেক। আইআরজিসির হাতে ট্রেনিং পাওয়া শিয়া মিলিশিয়া ইরাকের আইসিসবিরোধী যুদ্ধের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ইরাক সরকারের উপর এই শিয়া মিলিশিয়ার প্রভাব এমনকি আমেরিকার চেয়েও বেশি; যদিও ইরাকের মাটিতে মার্কিন সেনাঘাঁটি আছে। ইরানের সাহায্যপুষ্ট আসাদ সরকার খুব দ্রুত বিরোধী শক্তিগুলোকে হঠিয়ে দিচ্ছে, আর আইসিসের ফেলে যাওয়া এলাকাগুলোর দখল নিচ্ছে। মিত্র হিজবুল্লাহর মধ্যদিয়ে লেবাননে ইরানের ক্রমবর্ধমান প্রভাব সৌদি আরবকে ভয় পাইয়ে দিয়েছে: হারিরি নাটকই তার প্রমাণ।
বিভিন্ন রিপোর্ট থেকে এটাই বোঝা যাচ্ছে যে, ইরাক, সিরিয়া ও লেবাননের একটানা সংলগ্ন ভূমি বর্তমানে তেহরানের বন্ধুপ্রতিম বিভিন্ন বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। শামে ইরানের ক্ষমতা বিস্তারের সুযোগ করে দিচ্ছে তারা। ফলশ্রুতিতে অত্র অঞ্চলে একটি ‘অক্ষ’সৃষ্টির ভবিষ্যৎবানী পূরণ হতে চলেছে। এই অর্জনের পিছনে বড় কারণ হলো ইরানের সাথে হিজবুল্লাহর মৈত্রী, আর সিরিয়াসহ অন্যান্য অঞ্চলে ইরানের উদ্দেশ্যের প্রতি হিজবুল্লাহর অটল সমর্থন।
যাইহোক, এই মৈত্রীর সাফল্যের পিছনে বড় রহস্য হলো, তেহরান হিজবুল্লাহর প্রতিটি পদক্ষেপে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে না। বরং হিজবুল্লাহ এমন একটি স্বায়ত্বশাসিত সংগঠন, যা ইরানের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে চলে এই কারণে যে তাদের স্বার্থগুলো মিলে যায়; তেহরান থেকে আদেশ নিয়ে হিজবুল্লাহ চলে না। এই দুই পক্ষের স্বার্থগুলো যে পাশাপাশি চলে শুধু তা-ই না, (লেবানের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে ও ইজরাইলের প্রতি) হিজবুল্লাহর পলিসিকে ইরান দৃঢ় সমর্থন দেয়। এই পলিসিগুলো দক্ষিণ বেইরুতেই তৈরী হয়, তেহরানে নয়।
একারণে ইরান ও হিজবুল্লাহর মাঝে যে মাত্রার আস্থা বিদ্যমান, তা সৌদি ও তার আঞ্চলিক মিত্রদের থেকে গুণগতভাবেই ভিন্ন। অপরদিকে সৌদি আরব তার মিত্রদের লক্ষ্যকে নিজের লক্ষ্যের সাথে এক করার চেষ্টা করে। একদিক থেকে একতরফা অর্থনৈতিক সহায়তা ও অপরদিক থেকে প্রশ্নহীন আনুগত্য -এটাই হলো সৌদির চোখে মিত্রদের স্বায়ত্বশাসন! GCC-কে আজকে যে সঙ্কট মোকাবিলা করতে হচ্ছে, তার মূলে হলো মিত্রদের কাছ থেকে এই নিঃশর্ত আনুগত্যের আশা। বাহরাইন ও UAE-র অল্প কয়েকজন ধনী শাসক ছাড়া জিসিসিতে সৌদির প্রতি সমর্থন দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে। মিত্রদের প্রতি সৌদির এহেন “অর্থসহায়তা ও নিঃশর্ত আনুগত্যের”দৃষ্টিভঙ্গির অর্থই হচ্ছে, চলার পথ কঠিন হয়ে গেলে এই মৈত্রীও শূন্যে মিলিয়ে যাবে দ্রুত।
এমতাবস্থায় মুহাম্মদ বিন সালমান যদি আশা করে যে পারস্য উপসাগর ও বৃহত্তর মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আকাঙ্খার কাছে ইরান নতিস্বীকার করবে, তাহলে সেটা চরম অবাস্তব একটা ব্যাপার হবে। ইরান-সৌদি দ্বন্দ্বকে যে সৌদি আরব শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্ব হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছে, এটাও ব্যাকফায়ার করতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনারব সুন্নি দেশ তুরস্ক; আর আগে তুর্কি-ইরান সম্পর্ক যতটুকু ছিল, কাতার সঙ্কটের পর তা ইতিমধ্যেই লক্ষ্যণীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সৌদি তাঁবু থেকে বেরিয়ে সুন্নি রাষ্ট্র কাতারের ইরান-ঘনিষ্ঠ হওয়া দেখে উপসাগরীয় অঞ্চলে ভবিষ্যতে কী কী ঘটতে পারে, তার একটা আঁচ পাওয়া যায়। উল্লেখ করা যেতে পারে যে, সৌদি আরব ছাড়া কাতার একমাত্র ওয়াহাবী রাষ্ট্র, আর তাই প্রতিবেশী সৌদির সাথে তাদের আদর্শিক ঘনিষ্ঠতাই প্রত্যাশিত ছিল। সৌদি অক্ষে আছে কুয়েত, ওমান; কিন্তু ওমানের আগে থেকেই তেহরানের সাথে সুসম্পর্ক, তাদের ৩০-৪০% জনগণ শিয়া। সম্ভবতঃ ওমান হলো দ্বিতীয় দেশ, যা সৌদি অক্ষ থেকে বেরিয়ে যাবে।
ইরানের প্রতি বিন সালমানের আগ্রাসী নীতি আর উস্কানিমূলক ধর্মীয়-রাজনৈতিক রেটোরিক এই পথকে আরো তরান্বিত করবে। আর যদি সামরিক ক্ষমতা প্রদর্শনের মহড়া হয়েই যায়, তবুও সৌদি বাহিনী ইরানের আইআরজিসি ও সেনাবাহিনীর সাথে তাল মিলাতে পারবে না। কারণ যুদ্ধের পোড় খাওয়া ইরানের সেনাবাহিনী ও আইআরজিসির যেকোনো নতুন পরিস্থিতিতে নিজেদেরকে টিকিয়ে রাখার খ্যাতি আছে। তাদের সাথে সৌদি বাহিনী পেরে উঠবে না, যতই তাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের থেকে নেয়া প্রথম শ্রেণীর সামরিক সরঞ্জাম থাকুক না কেন। একারণেই সৌদি আরব অনবরত চেষ্টা করে যাচ্ছে ইরানের শত্রু ট্রাম্প প্রশাসনকে উস্কানি দিতে, যেন ইরান ও হিজবুল্লাহর সাথে সৌদি দ্বন্দ্বকে তারা নিজেদের মত করে দেখে ইরানের সাথে যুদ্ধ জড়ায়। অন্যভাবে বলতে গেলে, যেমনটা একজন বিশ্লেষক বলেছেন, রিয়াদ চায় শেষ মানুষটিকে দিয়ে হলেও আমেরিকা যেন তেহরানের সাথে যুদ্ধ করে।
অভিন্ন শত্রুর মোকাবিলা করতে ইজরাইলের সাথে মৈত্রী গড়ার সাম্প্রতিক সৌদি প্রচেষ্টাও সম্ভবতঃ ব্যাকফায়ার করবে। কারণ এতে তার আরব বিশ্ব ও বৃহত্তর মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্বের বৈধতা শেষ হয়ে যাবে। যদি না বিন সালমান অতিসত্বর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা না দেখায়, তাহলে তার অপরিণামদর্শী পদক্ষেপ আর রেটোরিক-ই তার পরাজয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াবে এবং পুরো অঞ্চলকে অগ্নিগর্ভ করে তুলতে পারে। ইয়াজিদ ও হুসাইনের মধ্যে কারবালার ময়দানের যে দ্বিতীয় যুদ্ধ বিন সালমান শুরু করতে চাইছে, তা সংঘটিত হতেও পারে, কিন্তু ফলাফল সম্ভবতঃ প্রথম যুদ্ধের থেকে ভিন্নতর হবে।#
সূত্র : https://www.yahoo.com/news/saudi-arabia-apos-great-gamble-020600426.html