‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
সোমবার

২৯ মার্চ ২০২১

৮:১৭:৩৯ AM
1127184

ইরান-চীন ২৫ বছর মেয়াদি সহযোগিতা চুক্তি: সম্পর্ক বিস্তারে নয়া অধ্যায়ের সূচনা

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যু এবং অভিন্ন লক্ষ্য ও স্বার্থ রক্ষায় ইরান ও চীনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা বজায় রয়েছে। এ সহযোগিতা দ্বিপক্ষীয় কৌশলগত সম্পর্ককে আরো জোরদার করেছে।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা) : দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতাকে আরো এগিয়ে নেয়ার জন্য ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই তেহরানে এসেছেন। দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের লক্ষে ২৫ বছর মেয়াদি সহযোগিতা চুক্তি সই হয়েছে। ইরান ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের সুবর্ণজয়ন্তীকে সামনে রেখে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ চুক্তি এশিয়ার দুটি প্রাচীন  সভ্যতা ও বৃহৎ দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নয়া অধ্যায়ের সূচনা করবে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।

ইরান ও চীনের মধ্যে দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিস্তারের উদ্যোগকে দু'দিক থেকে মূল্যায়ন করা যায়। প্রথমত, কৌশলগত সর্বাত্মক সহযোগিতা বিস্তারে এর ভূমিকা। অনেক দিন ধরেই ইরান ও চীনের মধ্যে তিনটি বড় স্তরে অর্থাৎ আর্থ-রাজনৈতিক, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা এবং ভূ-রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক সহযোগিতা বজায় রয়েছে। এ অবস্থায় ২৫ বছর মেয়াদি সহযোগিতা চুক্তি সই দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে পূর্ণতা এনে দেবে।

ইরান ও চীনের ২৫ বছর মেয়াদি সহযোগিতা চুক্তির দ্বিতীয় গুরুত্বের দিকটি হচ্ছে এর ফলে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে তেহরান ও বেইজিং শক্তিশালী অবস্থানে থাকতে পারবে। পারস্য উপসাগর ও হরমুজ প্রণালীসহ আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় ইরান ও চীনের অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। এ কারণে চীন ও ইরানের দীর্ঘ মেয়াদি সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এর আগে ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী চীনের প্রেসিডেন্টকে দেয়া সাক্ষাতে সাম্রাজ্যবাদী কয়েকটি দেশ বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের স্বেচ্ছাচারী নীতির কথা উল্লেখ করে অন্য দেশের সঙ্গে সহযোগিতার ক্ষেত্রে তাদের ছলচাতুরী প্রসঙ্গে বলেছিলেন, 'এ কারণে স্বাধীন দেশগুলোর মধ্যে আরো বেশি সহযোগিতা গড়ে তোলা প্রয়োজন।' এরই আলোকে ইরান ও চীনের মধ্যে ২৫ বছর মেয়াদি সহযোগিতা চুক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দুপক্ষকেই জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরান ও চীনের মধ্যকার বর্তমান সহযোগিতা আঞ্চলিক নানা ইস্যুতেও অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ও আস্থা গড়ে ওঠার প্রমাণ। অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিস্তারের ক্ষেত্রে বলা যায় এর ফলে দু'দেশের মধ্যে জ্বালানি পরিবহন ও চীনের বেল্ট এন্ড রোড পরিকল্পনায় ইরানের জোরালো ভূমিকা রাখার সুযোগ সৃষ্টি হবে। ২০১৯ সালের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে দুদেশের ওপর ব্যাপক মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পরও বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২৪০০ কোটি ডলার। নিষেধাজ্ঞার এ কঠিন সময়ে দুদেশের সম্পর্ক শুধু জ্বালানি সরবরাহের মধ্যেই সীমিত নেই বরং আরো বহু ক্ষেত্রে সম্পর্ক বজায় রয়েছে।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাঈদ খাতিবযাদেহ বলেছেন, ইরান ও চীনের মধ্যকার ২৫ বছর সহযোগিতা চুক্তিতে রাজনৈতিক, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, সাংস্কৃতিক, কৃষি, অর্থনীতি, যোগাযোগ, বাণিজ্য, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, পর্যটন, জ্বালানি, অবকাঠামো নির্মাণ, টেলিযোগাযোগ, স্বাস্থ্য প্রভৃতি বিষয়ে সহযোগিতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। #

342/