আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা) : আজ (রোববার) সকালে বিমানবন্দরের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে তারা বিক্ষোভ করেন।
নারীর প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ, অশালীন ও অবমাননাকর বক্তব্য দিয়ে সমালোচিত ডা. মুরাদ দেশে ফিরলে তাকে গ্রেফতারের দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। এ সময় বিক্ষোভকারীরা মুরাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে বিমানবন্দর থানা পুলিশ এসে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, মুরাদ হাসান আমাদের মা-বোনের ইজ্জত নিয়ে কটূক্তি করেছেন। তার অনেক দুর্নীতি আছে। গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে থলের বেড়াল বেরিয়ে আসবে। তিনি দেশে ফিরলে তাকে গ্রেফতার করতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনে নামব আমরা।
জাইমা রহমানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য ও চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন ডা. মুরাদ হাসান। একই সঙ্গে জামালপুরের স্থানীয় আওয়ামী লীগের পদও হারান।
এরপর গত বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এমিরেটসের ফ্লাইটে দুবাই হয়ে কানাডার উদ্দেশে রওয়ানা দেন তিনি। তবে তাকে কানাডায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
কানাডা প্রবেশে ব্যর্থ হয়ে মুরাদ হাসান শনিবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) পথে রওনা দেন। কিন্তু আগে থেকে ভিসা না নেওয়ায় তাকে দুবাইয়ে ঢুকতে দেয়নি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
কানাডা ও দুবাই ঢুকতে না পেরে দেশে আসার প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার রয়েছে।
এদিকে, ডা. মুরাদ দুবাই থেকে সকাল ৭টা ৫৬ মিনিটের ফ্লাইটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের (ইকে-৫৮২) বিমানে দেশে ফিরছেন এমন খবরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকরা ভোর থেকেই ভিড় করেন। তবে নির্ধারিত ওই বিমানটি অবতরণ করলেও ওই ফ্লাইটে ডা. মুরাদ হাসান আসেননি।
মুরাদসহ ২ জনের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা
সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এবং নাহিদ রেইন্স নামের পেজ পরিচালনাকারী ও বিতর্কিত সঞ্চালক মুহাম্মদ মহিউদ্দিন হেলাল নাহিদের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় মামলা করা হয়েছে।
আজ (রোববার) ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ঢাকা বার ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক ফারুকী।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিরা ফেসবুক লাইভে 'উদ্দেশ্যমূলকভাবে জিয়া পরিবার এবং ব্যারিস্টার জাইমা রহমান সম্পর্কে অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ, নারী বিদ্বেষী এবং যেকোনো নারীর জন্য মর্যাদাহানিকর ভাষা' ব্যবহার করেছেন।
এতে বলা হয়েছে, ডা. মুরাদ হাসানের প্রদেয় এবং মুহাম্মদ মহিউদ্দিন হেলাল নাহিদ কর্তৃক ধারণকৃত সাক্ষাৎকারটি পরবর্তীতে মুরাদ হাসান তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রচার ও প্রকাশ করে জিয়া পরিবার তথা জিয়া পরিবারের কনিষ্ঠ সদস্য ব্যারিস্টার জাইমা রহমান এবং সর্বোপরি নারী সমাজের প্রতি অবমাননাকর, অপমানজনক এবং আইনত শাস্তিযোগ্য হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে অত্র মামলাটি দায়ের করা হলো।
এতে আরও বলা হয়, আসামিরা ব্যারিস্টার জাইমা রহমান ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রকাশ এবং প্রচারের মাধ্যমে দেশে রাজনৈতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা, বিদ্বেষ ও মানহানিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫/২৯/৩১/৩৫ ধারার অপরাধ করেছেন বলে এই মামলা দায়ের করা হয়। আগামীকাল এই মামলার শুনানি হতে পারে।
সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলার আবেদন
নারীদের নিয়ে চরম আপত্তিকর মন্তব্যের কারণে সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছে বিএনপি।
আজ ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম এই মামলার আবেদন করে। আগামীকাল সোমবার এ বিষয়ে শুনানি হবে।
ঢাকা ছাড়াও রংপুর বিভাগ বাদে অন্যান্য বিভাগের বিশেষ ট্রাইব্যুনালেও এ সংক্রান্ত মামলা করা হবে বলে বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান জানিয়েছেন।#
342/