আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা) : স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে এসেছে তারা বিগত তিন বছরে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে আসা শিখ, হিন্দু ও খ্রিষ্টান সংখ্যালঘুদের কাছ থেকে নাগরিকত্ব চেয়ে করা আট হাজার দুই শ চুয়াল্লিশটি আবেদনপত্র পেয়েছে। সেসব দরখাস্তের জবাব ধীরে ধীরে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। ২০১৪ সালে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের অনুকূলে বহু আইনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এসব পরিবর্তন ছিল ভারতীয় সংবিধান বিরোধী। আইন ও বিচার সংক্রান্ত ওইসব পরিবর্তন ছিল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। পরিবর্তিত এসব আইনে সংখ্যালঘু মুসলমানদের অধিকার ব্যাপকভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে। এই আইনগুলির মধ্যে একটি হল ২০১৯ সালের সংশোধিত নাগরিকত্ব প্রদান। ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে এ আইনে শুধুমাত্র নির্যাতিত অমুসলিমদের নাগরিকত্ব প্রদান করার বিধান রাখা হয়েছে।
নাগরিকত্ব অর্জন ভারতীয় সংবিধানের অন্যতম প্রধান একটি বিধান। যেখানে সমতার ভিত্তিতে, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, ভাষা ও শ্রেণী নির্বিশেষে সকলেরই ভারতীয় নাগরিকত্ব পাবার অধিকার রয়েছে। অথচ মুসলমানরা সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিশিষ্ট রাজনীতি বিশ্লেষক দেবারতি গূহ এ সম্পর্কে বলেন: মুসলমানদেরকে ভারতীয় নাগরিকত্ব লাভের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার ঘটনা নয়া দিল্লি সরকারের দ্বৈতনীতি ও বৈষম্যের সুস্পষ্ট প্রমাণ। এটা যে কেবল ভারতীয় সংবিধান পরিপন্থি তাই নয় বরং তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ নীতিরও বিরোধী।
হিন্দুত্ববাদী নরেন্দ্র মোদী সরকার যে মুসলিম সম্প্রদায়কে উপেক্ষা করছে কিংবা বলা যায় মুসলমানদের বিরুদ্ধে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে, তার আরেকটি প্রমাণ বাবরী মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা। মোদী সরকার দাবি করছে তারা শুধু নির্যাতিত সংখ্যালঘুদেরকেই নাগরিকত্ব দিচ্ছে। অথচ মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানরা সীমাহীন নির্যাতনের মুখে দেশ ছেড়ে এলেও তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়টি বেমালুম ভুলে গেছে। ধর্মীয় মানদণ্ডে করা এই বিবেচনা রাষ্ট্রীয় বৈষম্যের শামিল বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।#
342/