‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
মঙ্গলবার

৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২

৮:০১:০৯ AM
1227190

নির্বাচন কমিশন গঠনে নাম পাঠানোর প্রস্তাবেও বিএনপি'র না

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার (ইসি) পদে নাম প্রস্তাবের যে আহ্বান জানিয়েছে নব-গঠিত সার্চ কমিটি বিএনপি তা নাকচ করে দিয়েছে।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা) : বাংলাদেশের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল এবং বিশিষ্ট নাগরিকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের এ নাম নাম প্রস্তাবের সিদ্ধান্ত নেয় নব গঠিত সার্চ কমিটি। গতকাল  রোববার বিকেলে কমিটির সভাপতি বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সভাপতিত্বে  সুপ্রিম কোর্ট জর্জেস লাউঞ্জে একঘন্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত প্রথম বৈঠকে  এ সিদ্ধান্ত নেয় হয়। 

সার্চ কমিটিকে নাম দেবে না বিএনপি 

 দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি  সাফ  জানিয়ে দিয়েছে আওয়ামীলীগের ঘরোয়া লোকদের নিয়ে গঠিত এই সার্চ কমিটি একটি অর্থহীন প্রচেষ্টা।  তাদের কাছে  কাছে এর কোনো মূল্য নেই। আর সে জন্য সার্চ  কমিটির কাছে  নাম প্রস্তাব করার কোনো প্রশ্নই উঠতে পারে না।’ 

আজ সোমবার রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নাটোর গুরুদাসপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল আজিজকে দেখতে গিয়ে এমন মন্তব্য করেন  বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

এ সময় বিএনপি মহাসচিব  বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির গঠন করা সার্চ কমিটির অধিকাংশ সদস্যই আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্কিত। গতবারও যেভাবে করেছে, ঠিক একইভাবে এবারও শুধু খোলস লাগিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণার করার জন্য... যে দেখো, আমরা সুন্দরভাবে করছি, সবার কাছ থেকে মতামত নিচ্ছি। তারপর শেষ পর্যন্ত দেখা যাবে যে হুদার (সাবেক নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা) ইসি নিয়োগ করেছে। এ সার্চ কমিটির মধ্যেও বেশির ভাগ লোকই আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্কিত। একজন তো আওয়ামী লীগের মনোনয়নও চেয়েছিলেন। এ ধরনের যে সার্চ কমিটি সরকার তৈরি করবে, সেটা আমরা আগে থেকেই জানি। জানি বলেই এ সার্চ কমিটি নিয়ে বিএনপি রাষ্ট্রপতির কাছে যাওয়ার ব্যাপারে না করে দিয়েছে।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘সার্চ কমিটি ও নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে আমরা আমাদের বক্তব্য খুব স্পষ্ট । আমরা মনে করি—আওয়ামী লীগ নিজেদের ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এবং আবার ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যা যা করা দরকার তাই করছে। অর্থাৎ তারা একটা আইন করে নিয়েছে, যেটা সম্পূর্ণভাবে জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে।’

বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ও সার্চ কমিটি যদি আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে হয়, এটা কখনও গ্রহণযোগ্য হবে না। কারণ নির্বাচনই গ্রহণযোগ্য হবে না যদি নির্বাচনকালীন ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ থাকে। অর্থাৎ নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না।’

এর আগে সার্স কমিটির  সদস্য  হিসেবে  সরকারকে  পরামর্শ দিয়েছেন এমন একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি এ,কে,  আজাদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেছেন, সার্স কমিটিকেই প্রথমে সকলের আস্থা অর্জন করতে হবে এবং  তারা যে তালিকা চৈরী করবে তা জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে। 

সার্চ কমিটির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা অবান্তর: তথ্যমন্ত্রী 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নাম সুপারিশ করার জন্য গঠিত সার্চ কমিটির সদস্যদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা অবান্তর বলে মনে করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ। 

সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) তথ্য মন্ত্রণালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে আলোচনাকালে  তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ছয় সদস্যদের মধ্যে চারটি পদই সাংবিধানিক, এরা সরকার এবং দলের কোনও প্রতিনিধি নয়। আর যে দু’জনকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করেছেন, তারা অত্যন্ত নিরপেক্ষ এবং শ্রদ্ধেয়। তাই সার্চ কমিটির সদস্যদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা সঠিক নয়। তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, নির্বাচন দলের অধীনে হয় না, কমিশনের অধীনে হয়। এ সময় একজন কনস্টেবলকেও বদলি করার ক্ষমতা সরকারের হাতে থাকে না। কাজেই সার্চ কমিটি, নির্বাচন কমিশন নিয়ে প্রশ্ন তোলা অবান্তর।’ 

নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিবের পদত্যাগ 

 এদিকে অনেকটা আকস্মিকভাবেই  নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব আবুল কাসেম ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন।  গত ২ ফেব্রুয়ারি এক মাসের বেতনের টাকা ফেরত দিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন আবুল কাসেম। পত্রটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে ইসি সচিবালয়।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, আবুল কাসেম ১৯৯০ সালের ২৪ মার্চ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে নির্বাচন কমিশনে যোগ দেন। ওই বছর নভেম্বরে সহকারী সচিব হিসেবে ইসি সচিবালয়ে যোগ দেন। ক্রমান্বয়ে পদোন্নতি পেয়ে তিনি ইসির যুগ্ম সচিব হন। ২০২০ সালে তার চাকরির বয়স শেষ হলে সরকার তাকে দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়। দীর্ঘদিন নির্বাচন ব্যবস্থাপনা-১ অনুবিভাগের দায়িত্বে ছিলেন আবুল কাসেম। কঠোর গোপনীয়তায় পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।

সূত্র আরও জানায়, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অন্যতম শর্ত হচ্ছে, এক মাসের আগাম নোটিশ দিয়ে বা এক মাসের বেতন ফেরত দিয়ে চাকরি থেকে পদত্যাগ করা যাবে। তিনি ২০১৯ সালে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ছিলেন। ২০২০ সালে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সাধারণ নির্বাচনেও রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন। 

পদত্যাগী ওই কর্মকর্তা তার ঘনিষ্ঠজনদের জানিয়েছেন, নতুন কমিশনে নিয়োগ পাবেন–এমন আশ্বাস পেয়েই তিনি পদত্যাগ করেছেন। অবশ্য ২০২০ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার সময় থেকেই তিনি ভবিষ্যতে ইসির কমিশনার হবেন–এমন গুঞ্জনও ইসি সচিবালয়ে ছিল।#

342/