‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
সোমবার

২১ নভেম্বর ২০২২

৬:৩০:৫০ PM
1325143

আফগানিস্তানে মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনীর যুদ্ধাপরাধ তদন্তে আন্তর্জাতিক দাবি সোচ্চার হচ্ছে

আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাবাহিনীর যুদ্ধাপরাধ তদন্তের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের আহ্বানের একই সময়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বা এইচআরডাব্লিউও দেশটিতে মার্কিন বাহিনীর ধ্বংসাত্বক হামলার তদন্তের দাবি জানিয়েছে।

এইচআরডাব্লিউ তার সর্বশেষ প্রতিবেদনে ঘোষণা করেছে যে আফগানিস্তানে বিদেশি বাহিনীর উপস্থিতির ২০ বছরে তারা এমনসব নথি পেয়েছে যার মাধ্যেমে এটা প্রমাণিত হয় যে মার্কিন বাহিনী মিথ্যা তথ্য বা মিথ্যা অনুমানের ভিত্তিতে কয়েক ডজন আফগান বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে। সংস্থাটি তার প্রতিবেদনে আরো লিখেছে যে ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে যখন আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর হামলার মাত্রা বেড়ে যায় তখন সেখানে অনেক বেসামরিক লোক নিহত হয়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দাবি, আফগানিস্তানে সব ধরনের হামলার সাথে সম্পর্কিত নথি সরবরাহ করতে হবে বিশেষ করে যেসব হামলায় সিআইএ সরাসরি জড়িত ছিল।

মার্কিন বাহিনী এবং ন্যাটো আফগানিস্তানের ২০ বছরের দখলদারিত্বের সময় অসংখ্য যুদ্ধাপরাধ করেছে যা আমেরিকার জনগণের পাশাপাশি বিশ্ব সমাজ এসব অপরাধীদের বিচার চায়। আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাবাহিনীর অপরাধ তদন্তের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিচারকদের উদ্যোগের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ ও হুমকির অস্তিত্ব থাকা সত্ত্বেও  আন্তর্জাতিক আইনি প্রতিষ্ঠানটি যুদ্ধাপরাধের তদন্তে তার ভূমিকা পালনের চেষ্টা করছে।

এমন পরিস্থিতিতে যেখানে আফগানিস্তানে যুদ্ধাপরাধের জন্য মার্কিন সৈন্যদের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অনুরোধ বেড়েছে গত সপ্তাহে বিবিসি তার সর্বশেষ প্রতিবেদনে ঘোষণা করেছে যে যুদ্ধের বছরগুলোতে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর অভিযানে ৬৪ আফগান শিশু নিহত হয়েছে যেখানে কেবল ব্রিটিশ সরকারই আনুষ্ঠানিকভাবে ১৬টি মামলা গ্রহণ করেছে।

এছাড়া, একটি ব্রিটিশ দাতব্য সংস্থা ঘোষণা করেছে যে আফগানিস্তানে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর হাতে নিহত বেসামরিক মানুষের সংখ্যা এখন পর্যন্ত যতটা ঘোষণা করা হয়েছে তার চেয়ে বেশি। সংস্থাটি ঘোষণা করেছে যে আফগানিস্তানে ন্যাটোা বাহিনীর হামলায় ১৩৫ আফগান শিশু নিহত হয়েছে। 

যদিও কিছু কর্মকর্তার স্বীকৃতি এবং পশ্চিমা মিডিয়ায় প্রকাশিত নথির ভিত্তিতে আফগানিস্তানে মাার্কিন ও ন্যাটো বাহিনীর দ্বারা সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে হোয়াইট হাউস এখনোও এই অপরাধের দায়ভার স্বীকার করতে এবং আফগানিস্তানে যুদ্ধে নিহতদের পরিবারদের ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে ।

এশিয়ার মানবাধিকার প্রধান এবং আফগানিস্তানের সিনিয়র মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ প্যাট্রিসিয়া গসম্যান বলেছেন; অনেক ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য আফগানিস্তানে যুদ্ধের সময় ঘটে যাওয়া ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত কার্যক্রম এড়িয়ে গেছে যার মাধ্যমে বলা যায় যে পশ্চিমা দেশগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং বেসামরিক নাগরিকদের বিশেষ করে আফগান  নারী ও শিশুদের হত্যার বিষয়ে জবাবদিহী করতে মোটেও ইচ্ছুক নয়। 

২০১৫ সালে কুন্দুজ শহরে ডক্টরস উইদাউট বর্ডার হাসপাতালে মার্কিন বাহিনী বিমান হামলা চালায় যার ফলে কয়েক ডজন লোক নিহত এবং বহু আহত হয়েছিল। আর এটি আফগানিস্তানে মার্কিন যুদ্ধাপরাধের ঘটনাগুলোর মধ্যে একটি যা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটর ফাতু বেনসুদা বিশ্ববাসীর নজরে এনেছিলেন। .

বাগরাম কারাগারসহ আফগানিস্তানের গোপন কারাগারে বন্দীদের নির্যাতন মার্কিন সামরিক বাহিনীর আরেকটি অপরাধমূলক কাজ যা আফগানিস্তানসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন স্তরে সমালোচিত হয়ে আসছে। #

342/