‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
বুধবার

২১ ডিসেম্বর ২০২২

৮:৪৩:০৮ PM
1332769

বোরেল-আব্দুল্লাহিয়ান বৈঠক: পরমাণু সমঝোতা ও ইরান পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময়

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান জর্দানের রাজধানী আম্মানে দ্বিতীয় ‘বাগদাদ সম্মেলনের' অবকাশে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ'র পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা জোসেপ বোরেলের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। এ সাক্ষাতে ইরানের পরমাণু সমঝোতার বিষয়ে কথাবার্তা হয়েছে।

বৈঠকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিয়েনায় দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সংলাপ আবার শুরু করতে ইরানের প্রস্তুতির কথা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোকে রাজনীতি বাদ দিয়ে গঠনমূলক ভূমিকা নিতে হবে এবং ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সম্পর্কে বাস্তবতা উপলব্ধি করে চুক্তি সই করতে আসতে হবে। তিনি পরমাণু বিষয়ে তেহরানের স্পষ্ট অবস্থান তুলে ধরেছেন।

এ সাক্ষাতে জোসেফ বোরেলও ইরানের ব্যাপারে ইউরোপের নীতি অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেছেন, দু'পক্ষই পরমাণু সমঝোতার বিষয়টি অন্য সব কিছুর থেকে আলাদা মনে করে এবং ইউরোপ চায় ভিয়েনায় পরমাণু সমঝোতা সংক্রান্ত আলোচনা দ্রুত একটি সমাধানে পৌঁছাক। বৈঠক শেষে এক টুইটবার্তায় জোসেফ বোরেল বলেছেন, আবদুল্লাহিয়ানের সাথে আলোচনায় ভিয়েনা সংলাপের ভিত্তিতে যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে  আমরা সম্মত হয়েছি।

ধারণা করা হচ্ছে, ইরান তার অধিকার আদায়ে অটল থাকায়, দেশের অভ্যন্তরে দাঙ্গা ও গোলযোগ থেমে যাওয়ায় এবং বিশৃঙ্খলা অব্যাহত রাখতে ব্যর্থতা ও হতাশ হয়ে পড়ায় পরমাণু সমঝোতা পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়ে ইউরোপের নীতিতে পরিবর্তন এসেছে। অথচ মাত্র কিছুদিন আগেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমেরিকার সঙ্গে সুর মিলিয়ে ইরানে দাঙ্গা সৃষ্টিকারীদের প্রতি সমর্থন দিয়েছিল। এমনকি তারা ইরানে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা এবং দাঙ্গাবাজদের বিরুদ্ধে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছিল। ইউরোপীয় পরিষদে গত ১২ ডিসেম্বর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক বৈঠকে দেয়া যৌথ বিবৃতিতে তারা আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে ইরানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল। একই সাথে তারা দাঙ্গাকারীদের গ্রেফতার না করারও দাবি জানায়। এমনকি তারা ইরানি কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখার জন্য সবরকম উপায় অবলম্বনের কথাও বলেছিল। 

মার্কিন নেতৃত্বে পাশ্চাত্য বিশ্ব ইরানে বিশৃঙ্খলা শুরুর প্রথম থেকেই এটাকে কেন্দ্র করে ইরান সরকার ওপর ব্যাপক রাজনৈতিক চাপ ও অপপ্রচার চালায়। এমনকি তারা ইরানের সরকার পতন অত্যাসন্ন  মনে করে পরমাণু আলোচনা  থেকেও দূরে সরে যায়। সংলাপ বাদ দিয়ে তারা ইরানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদেরকে কিভাবে উস্কানি দেয়া যায় সেদিকেই মনোনিবেশ করে। এমনকি জাতিসংঘের নারী বিষয়ক কমিশনে ইরানের সদস্য পদও বাতিল করে দেয়। অন্যদিকে ইউরোপও ইরানের বিরুদ্ধে একই নীতি গ্রহণ করলে ইরান এর তীব্র প্রতিবাদ জানায়।

আম্মানে জোসেফ বোরেলের সাথে সাক্ষাতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরমাণু বিষয়টি ছাড়াও মানবাধিকার রক্ষার অজুহাতে ইরানে দাঙ্গাকারীদের প্রতি পাশ্চাত্যের সমর্থনের নিন্দা জানিয়েছেন।