‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
সোমবার

৬ জানুয়ারী ২০২৫

৬:৪০:৫৪ PM
1520676

আমেরিকার থাড সিস্টেম কি ইয়েমেনি ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবেলা করতে সক্ষম?

পার্সটুডে-ফিলিস্তিনি জনগণের সমর্থনে ইয়েমেনিরা ইসরাইলের অভ্যন্তরে যেসব ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, ইসরাইলে মোতায়েন আমেরিকার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাড (THAAD) সেসব ক্ষেপণাস্ত্র আটকাতে অক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে।

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান যখন নিজেদের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন এবং শহীদ ইসমাইল হানিয়াহ, সৈয়দ হাসান নাসরুল্লাহ, মেজর জেনারেল সাইয়েদ আব্বাস নিলফুরুশান এবং ফিলিস্তিনের নিরপরাধ নারী ও শিশুদের ওপর ইসরাইলি হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে ১ অক্টোবর, ২০২৪-এ, ট্র-প্রমিজ-২ অভিযান চালিয়েছিল তখন শত শত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরাইলের বিভিন্ন অঞ্চলকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল; তখনও ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অক্ষমতা প্রমাণ হয়েছিল। আইআরজিসি'র ক্ষেপণাস্ত্রগুলি ইহুদিবাদী ইসরাইলের নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা লক্ষ্যবস্তুগুলোতে নির্ভুলভাবে হামলা করেছিল। শতকরা ৯০ ভাগ ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করইছল তখন।

ইরানের ট্রু-প্রমিজ-২ অভিযানের পর, আমেরিকা ইহুদিবাদী ইসরাইলে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাড সিস্টেম মোতায়েন করেছিল। ইহুদিবাদী মিডিয়াসহ পশ্চিমা মিডিয়াগুলো ইসরাইলে আমেরিকার থাড সিস্টেম প্রতিষ্ঠার খবর ব্যাপকভাবে প্রচার করে। অথচ 'প্যালেস্টাইন-২' নামে ইয়েমেনের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তেল আবিবকে লক্ষ্যবস্তু করে বাস্তবে ওই থাড ব্যবস্থার অসারতা এবং অকার্যকারিতা প্রমাণ করেছে।

পার্সটুডের এই নিবন্ধে আমরা এখন আমেরিকার থাড অ্যান্টি-মিসাইল সিস্টেমের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরার চেষ্টা করবো:

Terminal High Altitude Area Defense-এর সংক্ষিপ্ত রুপ হলো থাড। এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটি আমেরিকার তৈরি। যুদ্ধ অঞ্চলে নিযুক্ত বাহিনী, গুরুত্বপূর্ণ জনসংখ্যা কেন্দ্র, সংবেদনশীল অবকাঠামোগুলোকে স্বল্প-পাল্লা, মাঝারি-পাল্লা এবং দূর-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর হামলার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।

ইতিহাস

মার্কিন কংগ্রেস ১৯৯১ সালে জাতীয় ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা আইন পাস করে। এই আইন অনুসারে, আমেরিকার এমন একটি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরির কথা ছিল যা ৯০-এর দশকের মাঝামাঝি নাগাদ জরুরি পরিস্থিতিতে এবং সম্ভাব্য অভিযানগুলোতে ব্যবহার করা যেতে পারে।

১৯৯২ সালে,মার্কিন সেনাবাহিনী লকহিড মার্টিনকে ৬৮৯ মিলিয়ন ডলার মূল্যের এই প্রকল্পের প্রধান ঠিকাদার হিসেবে নির্বাচন করে। এর প্রাথমিক নাম ছিল Theater High Altitude Area Defense। ১৯৯৫ সালে এই প্রকল্পের প্রথম পর্বে প্রকল্পের প্রথম পরীক্ষা শুরু হয়েছিল এবং ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। এই পরীক্ষাগুলো থেকে প্রাপ্ত ফলাফল ছিল খুবই মূল্যবান। ওই মূল্যবান ফলাফলকে কাজে লাগিয়ে থাড ক্ষেপণাস্ত্রটি নতুনভাবে ডিজাইন করা হয়েছিল। প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্বের কাজ পরিকল্পনা অনুসারে ২০০০ সালে শুরু হয়েছিল এবং ২০০৮ সালে আমেরিকা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম থাড ফায়ার ইউনিটকে পরিষেবায় অন্তর্ভুক্ত করেছিল। প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্বের শুরু থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত, এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমটি কোন ব্যর্থতা ছাড়াই ১২টি পরীক্ষায় সফল হয়েছে।

গঠন

থাড-এর ৪টি প্রধান উপাদানের মধ্যে রয়েছে রাডার, যুদ্ধ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র, কমান্ড, নিয়ন্ত্রণ, কমিউনিকেশন অ্যান্ড ইনফরমেশন, লঞ্চার এবং ইন্টারসেপ্টর মিসাইল।

রাডার

থাড সিস্টেম রাডার বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত রাডারগুলোর একটি। ১০০০ কিলোমিটার দূরত্বের লক্ষ্যবস্তু সনাক্ত এবং ট্র্যাক করার ক্ষমতা এই রাডারের রয়েছে।

লঞ্চার

থাড লঞ্চারের প্রতিটি গাড়ি ৮টি ক্ষেপণাস্ত্র বহন করে এবং ৩০ মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে গুলি চালানোর জন্য প্রস্তুত হতে পারে। আবার ৩০ মিনিটেরও কম সময়ে পুনরায় লোড করা যায়।

ইন্টারসেপ্টর মিসাইল

থাড ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্রটি ৬.১৭ মিটার দীর্ঘ, ৩৭ সেমি ব্যাস, ওজন ৯০০ কেজি এবং এর রেঞ্জ ২০০ কিমি।

থাড যাদের কাছে রয়েছে

থাড ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার নির্মাতা আমেরিকা ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব এবং ইহুদিবাদী ইসরাইলের কাছেও এই ব্যবস্থা রয়েছে।#

342/