‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র :
সোমবার

২৬ মে ২০১৪

৬:১৬:৪৫ AM
611409

মহানবী (স.) গ্রান্ড প্রাইজ ফেস্টিভ্যালের সংবাদ ;

মহানবী (স.) এর পরিচয় তুলে ধরার ক্ষেত্রে অবহেলা করা হয়েছে : আখতারি

আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থার (মাজমা) মহাসচিব, মহানবী (স.) শীর্ষ সম্মেলনের প্রথম দিনে বক্তৃতাকালে বলেছেন : পবিত্র কুরআন, ইসলাম ধর্ম এবং মহানবী (স.) এর প্রতি কয়েক বছর যাবত যে সকল অবমাননা করা হচ্ছে তার জবাব দিতে এবং এ বিষয়ে উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তর দেয়ার উদ্দেশ্যে এ সম্মেলনের আয়োজন।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা আবনার রিপোর্ট : হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীন মুহাম্মাদ হাসান আখতারি গত শনিবার (২৪শে মে) তেহরানের ‘সুরাহ’ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত মহানবি (স.) শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তৃতাকালে ইরানের খোররামাবাদ শহর মুক্ত হওয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন : এ দিনে ইরাকি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে খোররামাবাদ শহর মুক্ত হওয়ার মাধ্যমে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের মাথা উঁচু হয়েছে। আর এ সফলতা অর্জনের নেপথ্যে ছিল আল্লাহর রাস্তায় শাহাদাত ও আত্মোত্সর্গ।
তিনি বলেন : প্রতিরক্ষা যুদ্ধের শহীদগণসহ সকল মুসলিম শহীদগণকে মহান আল্লাহ্ মহানবী (স.) এর সাথে হাশরে উত্তোলন করুন। আমি এ মহান দিবসে সকলকে অভিবাদন জানাই।
মহানবী (স.) শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের প্রতি ইঙ্গিত করে আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থার মহাসচিব বলেন : মহানবী (স.) এর মাবআস তথা নবুয়্যত প্রাপ্তি দিবসের সমসময়ে এ সম্মেলন আয়োজন করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। আমরা আশাবাদি যে, এ সম্মেলন হবে ষড়যন্ত্রকারীদের জবাব স্বরূপ।
হুজ্জাতুল ইসলাম আখতারী বলেন : পবিত্র কুরআন, ইসলাম ধর্ম এবং মহানবী (স.) এর প্রতি কয়েক বছর যাবত যে সকল অবমাননা করা হচ্ছে তার জবাব দিতে এবং এ বিষয়ে উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তর দেয়ার উদ্দেশ্যে এ সম্মেলনের আয়োজন।
তার সংযোজন : আমরা লক্ষ্য করেছি যে, সালমান রুশদি কর্তৃক ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ লেখার পর থেকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ষড়যন্ত্রকারীদের একটি চক্র মহানবি (স.) এর প্রতি অবমাননা অব্যাহত রেখেছে। অবশ্য মহানবী (স.) এর প্রতি অবমাননা এবং তাঁকে কটাক্ষ করার ঘটনা -এমনকি আল্লাহ্ প্রেরিত অপর নবীগণ (আ.) এর প্রতি অবমাননার বিষয়টিও- নতুন কিছু নয় বরং তাঁদের যুগেও ছিল। প্রতিটি নবীর যুগে তাদের শত্রুরা তাঁদেরকে কটাক্ষ ও উপহাস করত এবং মহানবী (স.) এর যুগেও এর ব্যতিক্রম ছিল না।
হুজ্জাতুল ইসলাম আখতারি বলেন : কিন্তু মূলতঃ সালমান রুশদি কর্তৃক অবমাননাকর ঐ গ্রন্থ লেখার পর থেকে এ বিষয়ে ঘৃন্য এক অধ্যায়ের সূচনা হয়। ইমাম খোমেনী (রহ.) শুরু থেকেই এ ষড়যন্ত্রের গভীরতা ও মূল উদ্দেশ্য অনুধাবন করতে পেরে বিশেষ সাহসিকতার সাথে সালমান রুশদির মুরতাদ হওয়ার ফতওয়া জারী করেন। কারণ তিনি জানতেন যে, যদি এ ঘটনা প্রসারের সুযোগ দেয়া হয় তবে নিশ্চিতভাবে সর্বক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়বে।
তিনি বলেন : শত্রুরা চলচ্চিত্র নির্মাণ, ব্যাঙ্গ চিত্র অঙ্কন, পবিত্র কোরআনে অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি জঘন্য কাজের মাধ্যমে অবমাননার এ নীতি অব্যাহত রেখেছে। দুঃখজনকভাবে আন্তর্জাতিক জায়নবাদ ও ঔপনিবেশিকদের সৃষ্ট এ মুভমেন্টের বিরুদ্ধে কোন কঠোর পদক্ষেপ আজ পর্যন্ত গৃহিত হয়নি, অথচ প্রত্যাশা ছিল এরচেয়ে অনেক বেশী।
মাজমার মহাসচিব বলেন : অবশ্য তাদের এ ষড়যন্ত্রের ফলাফল হয়েছে উল্টো। তাদের উদ্দেশ্যের বিপরীতে ইসলাম ধর্ম প্রসার লাভ করেছে এবং বহু অমুসলিম ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছে। কিন্তু মুসলমানদের উচিত ছিল এ ষড়যন্ত্রের বিপরীতে ইসলামের সম্মানবোধ রক্ষার্থে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
এ ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণবিক্ষোভের প্রতি ইশারা করে জনাব আখতারি বলেন : ইরানেও এ ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে অনেক গণবিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং এক্ষেত্রে ইসলামি বিপ্লবের মহান নেতার অবস্থান ছিল প্রশংসনীয়।
‘ফেতনা’ চলচ্চিত্রের প্রতি ইশারা করে তিনি বলেন : এ ক্ষেত্রে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও তা যথেষ্ট ছিল না। আমাদের উচিত অতিতের চেয়ে অধিক তত্পর হওয়া।
তার সংযোজন : এ ষড়যন্ত্রের মোকাবিলার জন্য একটি বৃহত পদক্ষেপ প্রয়োজন। আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থা বিশ্বের মুসলমানদের সাথে -বিশেষতঃ আহলে বাইত (আ.) এর অনুসারীদের সাথে- যোগাযোগ রক্ষাকারী একটি সংস্থা হিসেবে পবিত্র কোরআনের শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে চেষ্টা চালাচ্ছে এবং এ ক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করে।
হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীন আকতারি বলেন : এ নাগাদ মাজমা’র তত্ত্বাবধানে বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গ্রন্থ অনুবাদ ও রচনা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্বের মুসলমানদের প্রতি এ কাজে সহযোগিতার আহবান জানিয়েছি, আর আজকের এ ফেস্টিভ্যাল তারই ফসল।
মহানবী (স.) গ্রান্ড প্রাইজ ফেস্টিভ্যালের প্রধান বলেন : আমরা ইংরেজি ভাষাভাষীদের উদ্দেশ্যে আহবান জানিয়েছি যাতে তারা মহানবী (স.) বিষয় ভিত্তিক গ্রন্থ রচনা পূর্বক মহানবী (স.) এর পরিচয়কে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরে। কেননা বর্তমানে আমরা যে সকল অবমাননার সাক্ষী তার মূলে রয়েছে অজ্ঞতা।
তিনি বলেন : শিল্প ও চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সর্বোত্তমভাবে মহানবী (স.) এর পরিচয় তুলে ধরা সম্ভব।
তার সংযোজন : প্রথম পদক্ষেপে আমরা আশ্চর্যজনক ফল পেয়েছি। আমাদের আহবানে সাড়া দিয়ে ৮ শতাধিক লেখা, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ইত্যাদি আমাদের নিকট জমা পড়েছে। আর দ্বিতীয় ফেস্টিভ্যালকে আমরা ‘কোরআন ও মহানবি (স.)’ শিরোনামে আয়োজন করবো, যা এ ফেস্টিভ্যালের শেষের দিনে ঘোষণা করা হবে। যাতে এর মাধ্যমে আমরা মহানবি (স.) এর পরিচয়কে আরো ব্যাপকভাবে তুলে ধরতে পারি।
জনাব আখতারি বলেন : বর্তমানে মহানবি (স.) এর উপর বিভিন্ন অপবাদ আরোপ করা হয়। মানুষের প্রতি ভালবাসা ও ন্যায়পরায়নতাসহ বিভিন্ন উত্তম বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে পৃথিবীতে কেউই তাঁর সমকক্ষ নয়, এতদসত্ত্বেও আমরা তাঁর পরিচিতিকে সঠিকভাবে মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারিনি।
আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থার মহাসচিব বলেন : মহানবি (স.) এর দয়ার্দ্রতা ও মহানুভবতার বিষয়ে এখনো জনগণকে পরিচিত করতে না পারায় আমাদের উচিত তাঁর (স.) নিকট ক্ষমা চাওয়া। মানব সমাজের জানা উচিত যে, পরিত্রাণের জন্য শুধু মহানবি (স.) এর দামন এবং আল্লাহর রুজ্জুকে আঁকড়ে ধরতে হবে।
তিনি বলেন : আমি মহানবি (স.) এর প্রেমিকদের একজন সেবক হিসেবে, যারা এ রাস্তায় শ্রম দিয়েছেন এবং এতে অংশগ্রহণ করেছেন তাদের সকলের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।#