‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : নিজস্ব প্রতিবেদক
বৃহস্পতিবার

২৭ নভেম্বর ২০১৪

১:২০:১৮ PM
654391

আয়াতুল্লাহ ঈসা কাসেমের বাড়ীতে হামলার নিন্দায় মাজমা’র বিবৃতি

যে উদ্দেশ্যে আয়াতুল্লাহ ঈসা কাসেমের বাড়ীতে কাপুরুষোচিত হামলা চালানো হয়েছে সে উদ্দেশ্যে তারা পৌঁছুতে পারবে না। এ ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে জনগণের মনোবলকেও দূর্বল করেত পারবে না তারা।

আহলে বাইত বার্তা সংস্থা (আবনা) : বাহরাইনের শীর্ষস্থানীয় আলেম আয়াতুল্লাহ শাইখ ঈসা কাসেমে’র বাড়ীতে বাহরাইনের স্বৈরাচারী সৈন্যদের হামলার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থা; ‘মাজমা’।
বাহরাইনে লোক দেখানো নির্বাচনে পরাজয়ের প্রতি ইশারা করে মাজমা’র ঐ বিবৃতিতে আলে খলিফা’র পদক্ষেপকে কাপুরুষোচিত বলে আখ্যায়িত করে বলা হয়েছে : যে উদ্দেশ্যে আয়াতুল্লাহ ঈসা কাসেমের বাড়ীতে কাপুরুষোচিত হামলা চালানো হয়েছে সে উদ্দেশ্যে তারা পৌঁছুতে পারবে না। এ ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে জনগণের মনোবলকেও দূর্বল করেত পারবে না তারা।
বিবৃতির কিছু অংশের অনুবাদ :
بسم الله الرحمن الرحیم
الذِينَ يَنْقُضُونَ عَهْدَ اللهِ مِنْ بَعْدِ مِيْثاقِه وَيَقْطَعُوْنَ مَا أَمَرَ اللهُ بِه أَنْ يُوْصَلَ وَيُفْسِدُونَ فِي الأَرضِ أُولئِكَ هُمُ الخاسِرُوْنَ. (سوره بقره ــ 27)
‘(বিপথগামী ওরাই) যারা আল্লাহর সঙ্গে অঙ্গীকারাব্ধ হওয়ার পর তা ভঙ্গ করে এবং মহান আল্লাহ্ যা অবিচ্ছিন্ন রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন, তা ছিন্ন করে, আর পৃথিবীর বুকে অশান্তি সৃষ্টি করে। ওরা যথার্থই ক্ষতিগ্রস্থ’। [বাকারাহ : ২৭ ]
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يُعْجِبُکَ قَوْلُهُ فِي الْحَياةِ الدُّنْيا وَ يُشْهِدُ اللَّهَ عَلى‏ ما في‏ قَلْبِهِ وَهُوَ أَلَدُّ الْخِصامِ وَ إِذا تَوَلَّى سَعى‏ فِي الْأَرْضِ لِيُفْسِدَ فيها وَ يُهْلِکَ الْحَرْثَ وَالنَّسْلَ وَاللَّهُ لا يُحِبُّ الْفَسادَوَ إِذا قيلَ لَهُ اتَّقِ اللَّهَ أَخَذَتْهُ الْعِزَّةُ بِالْإِثْمِ فَحَسْبُهُ جَهَنَّمُ وَ لَبِئْسَ المِهاد (سوره بقره ــ 206-204)
‘আর এমন কিছু লোক রয়েছে যাদের পার্থিব জীবনের কথাবার্তা তোমাকে চমত্কৃত করবে। আর তারা সাক্ষ্য স্থাপন করে আল্লাহকে নিজের মনের কথার ব্যাপারে। প্রকৃতপক্ষে তারা কঠিন ঝড়াটে লোক’। ‘যখন ফিরে যায় তখন চেষ্টা করে যাতে সেখানে অকল্যাণ সৃষ্টি করতে পারে এবং শস্যক্ষেত্র ও প্রাণনাশ করতে পারে। আল্লাহ্ ফাসাদ ও দাঙ্গা-হাঙ্গামা পছন্দ করেন না’। ‘আর যখন তাকে বলা হয় যে, আল্লাহকে ভয় কর, তখন তার পাপ তাকে অহঙ্কারে উদ্বুদ্ধ করে। সুতরাং তার জন্যে দোযখই যথেষ্ট। আর নিঃসন্দেহে তা হল নিকৃষ্টতর ঠিকানা’। [বাকারাহ : ২০৪-২০৬]
লোক দেখানো নির্বাচনে পরাজয়ের পর –বাহরাইনের ৭০ ভাগেরও বেশী লোক যে নির্বাচন বয়কট করেছে- স্বৈরাচারী সরকারের আপাদমস্তক অস্ত্রে সজ্জিত নিরাপত্তা বাহিনী’র সদস্যরা এদেশের শীর্ষস্থানীয় ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ ঈসা কাসেমের বাড়ীতে হামলা চালিয়েছে। এ সময় বাড়ির সদস্যদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে তাদের মাঝে ত্রাস সৃষ্টি করে এবং এ নেতার বাড়ীর প্রতিটি স্থানে তল্লাশী চালিয়েছে। এর পর নিরাপত্তা বাহিনী’র সদস্যরা আয়াতুল্লাহ ঈসা কাসেমের পরিবারের সদস্যদের পরিচয় পত্রের ছবি তুলে নিয়ে যায়।
প্রকৃতঅর্থে কাপুরুষোচিত এ হামলা এদেশের নৈতিক, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা জনিত বিপর্যয়েরই বহিঃপ্রকাশ। বাহরাইন হচ্ছে এমন একটি দেশ যার শাসকরা লোহা এবং আগুন হাতে নিয়ে দেশের জনগণকে শাসন করে থাকে। আর লোক দেখানো নির্বাচনের মাধ্যমে এ বাস্তবতাকে তারা ঢাকতে ব্যর্থ হয়েছে।
এ ধরনের হামলা, হুমকি ও অবমাননা এখনো বন্ধ হয়নি, যা এদেশের সংবিধান বিরোধী। লোক দেখানো নির্বাচনের ৫ দিন বাকি থাকতেই ৩৯টি বাড়িতে হামলা চালানো হয়। ২০১৪ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসগুলো ছিল বাহরাইনের জনগণের জন্য সবচেয়ে কঠিন সময়। এ দিনগুলোতে ৬০১টি বাড়ীতে হামলা চালিয়েছে সরকারী বাহিনী। জোর পূর্বক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করানোর জন্য বাহরাইনের জনতার উপর এ চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে।
এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মত বাহরাইনের শীর্ষস্থানীয় ও প্রভাবশালী ধর্মীয় এ ব্যক্তিত্বের বাড়ীতে হামলা চালানো হল।
আয়াতুল্লাহ শাইখ ঈসা কাসেমের তাকওয়া ও ইলম সম্পর্কে মুসলিম বিশ্ব এবং বাহরাইনের সাহসী জনতা ভালভাবেই অবগত।
যে উদ্দেশ্যে আয়াতুল্লাহ ঈসা কাসেমের বাড়ীতে কাপুরুষোচিত হামলা চালানো হয়েছে সে উদ্দেশ্যে তারা পৌঁছুতে পারবে না। এ ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে জনগণের মনোবলকেও দূর্বল করেত পারবে না তারা।
বর্তমানে স্পর্শকাতর এ মুহূর্তে আমরা স্পষ্ট ভাষায় আয়াতুল্লাহ ঈসা কাসেমের প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করছি। একইভাবে এ নেতার উপর হামলা ও অবমাননার আমরা নিন্দা জানাই এবং তাঁর প্রতি হামলাকে আমরা আহলে বাইত (আ.) এর সকল অনুসারীর উপর হামলা বলে জ্ঞান করি।
মারজায়ে তাকলিদগণ, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংস্থা এবং কেন্দ্রসহ সকল আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতি আহবান জানাই যাতে তারাও এ নেতার সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে।
বিবৃতির শেষে মহান আল্লাহর দরবারে হাত তুলে মু’মিনদের জন্য রহমত, ক্ষমা, অনুগ্রহ, দয়া ও সাহায্য প্রার্থনা করি।
আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থা
৪ সফর, ১৪৩৬ হিজরী (২৬ নভেম্বর, ২০১৪)