‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : নিজস্ব প্রতিবেদক
রবিবার

২২ মার্চ ২০১৫

৫:২৮:৩৮ PM
678423

“নিঃসন্দেহে মর্মান্তিক এ হামলা ও হত্যাকাণ্ডে শুধুমাত্র আইএসআইএল দায়ী নয়। বরং যে সকল শক্তি সন্ত্রাসীদেরকে সশস্ত্র করে জনগণের উপর লেলিয়ে দেয় তারাও এ অপরাধকর্মের অংশীদ্বার।”

আহলে বাইত বার্তা সংস্থা (আবনা) : ইয়েমেনের রাজধানীতে দু’টি মসজিদে আত্মঘাতী হামলার নিন্দায় প্রদত্ত বিবৃতিতে আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থা (মাজমা) ঘোষণা করেছে যে, “নিঃসন্দেহে মর্মান্তিক এ হামলা ও হত্যাকাণ্ডে শুধুমাত্র আইএসআইএল দায়ী নয়। বরং যে সকল শক্তি সন্ত্রাসীদেরকে সশস্ত্র করে জনগণের উপর লেলিয়ে দেয় তারাও এ অপরাধকর্মের অংশীদ্বার।”
বিবৃতিতে বলা হয়েছে : বিশ্বের সকল মুক্তিকামী মানুষের নিকট আমাদের দাবী, তারা যেন মর্মান্তিক এ হামলার নিন্দা জানায় এবং জাতিসংঘ, ইসলামি সমন্বয় সংস্থাসহ বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থার উপর চাপ সৃষ্টি করার মাধ্যমে এ সন্ত্রাসবাদকে সমূলে উত্পাটন করা ক্ষেত্রে নিজেদের দায়িত্ব পালন করে।
এতে আরো বলা হয়েছে : বহুবার ঘোষণা করা হয়েছে যে, তাকফিরি এ সকল অপরাধীরা মুসলমান নয় এবং তাদের কর্মকাণ্ড ইসলাম ধর্মের সাথে কোন প্রকার সম্পৃক্ততা রাখে না, গতকালের (শুক্রবার) হামলা –যা মানুষের ইবাদতের স্থানে চালানো হয়েছে- আরো একবার এ সত্যতারই প্রমাণ দিল।
বিবৃতির পূর্ণ অংশ :

بسم الله القاصم الجبارین
গতকাল (শুক্রবার) যখন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পবিত্র কুরআনের ঐক্যের আহবানে –মু’মিনগণ, জুমআর দিনে যখন নামাযের জন্যে আহবান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ।” সূরা জুমুআহ : ৯- সাড়া দিয়ে জুমআর নামায আদায়ের জন্যে মসজিদে সমবেত হয়েছিল তখন আল্লাহ্‌র শত্রু ও মানবতার শত্রুরা ৩টি আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটানোর মাধ্যমে ১৪০ জনেরও অধিক নিরীহ মুসল্লিকে হত্যা এবং শত শত জনকে আহত করেছে।
দুঃখজনকভাবে এ বিস্ফোরণে ইয়েমেনের যায়দি সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট আলেম ও মারজা ‘আল্লামা শাইখ মুর্তাজা যায়দি আল-মাহতুরি’ও শহীদ হয়েছেন। তিনি হামলার শিকার ঐ মসজিদের পেশ ইমামও ছিলেন।
আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থা একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা হিসেবে –বিভিন্ন দেশে যার শত শত সমর্থক রয়েছে- নিম্নোক্ত কয়েকটি বিষয়ে মুসলিম বিশ্বের বিশিষ্ট জনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে :

১. বহুবার ঘোষণা করা হয়েছে যে, তাকফিরি এ সকল অপরাধীরা মুসলমান নয় এবং তাদের কর্মকাণ্ড ইসলাম ধর্মের সাথে কোন প্রকার সম্পৃক্ততা রাখে না, গতকালের (শুক্রবার) হামলা –যা মানুষের ইবাদতের স্থানে চালানো হয়েছে- আরো একবার এ সত্যতারই প্রমাণ দিল।

২. সকল আকিদায় প্রতিটি ধর্মের ইবাদতের স্থান সম্মানিত এবং নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে গন্য। এমতাবস্থায় আইএসআইএলের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা কোন আকিদার অনুসরণ করে পবিত্র স্থানসমূহে হামলা চালায় এবং নিরীহ মানুষের জীবন কেড়ে নেয়?

৩. নিঃসন্দেহে মর্মান্তিক এ হামলা ও হত্যাকাণ্ডে শুধুমাত্র আইএসআইএল দায়ী নয়। বরং যে সকল শক্তি সন্ত্রাসীদেরকে সশস্ত্র করে জনগণের উপর লেলিয়ে দেয় তারাও এ অপরাধকর্মের অংশীদ্বার।

৪. উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের সরকার প্রধানরা, ইয়েমেনের জনগণের ইচ্ছার বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে –জনগণ চায় নিজেদের ভবিষ্যত সম্পর্কে নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে- এবং এ সকল নিরীহ লোকের রক্তে তাদের হাতও রঞ্জিত।

৫. বিশ্বের সকল মুক্তিকামী মানুষের নিকট আমাদের দাবী, তারা যেন মর্মান্তিক এ হামলার নিন্দা জানায় এবং জাতিসংঘ, ইসলামি সমন্বয় সংস্থাসহ বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থার উপর চাপ সৃষ্টি করার মাধ্যমে এ সন্ত্রাসবাদকে সমূলে উত্পাটন করা ক্ষেত্রে নিজেদের দায়িত্ব পালন করে।

৬. শেষে, এ হামলায় সকল শহীদদের জন্য মহান আল্লাহর মাগফিরাত, আহতদের জন্য দ্রুত রোগমুক্তির জন্য দোয়া করি। পাশাপাশি শহীদ আল্লামা মাহতুরির জন্য –যিনি মাজমার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকেও উপস্থিত ছিলেন- মহান আল্লাহর নিকট সুউচ্চ স্থান কামনা করি।
يَرْفَعِ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا مِنكُمْ وَالَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ دَرَجَاتٍوَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِير.
“তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার এবং যারা জ্ঞানপ্রাপ্ত, আল্লাহ্ তাদের মর্যাদা উচ্চ করে দিবেন। আল্লাহ্ খবর রাখেন যা কিছু তোমরা কর।” (মুজাদালাহ : ১১)
আহলে বাইত বিশ্বসংস্থা,
১লা ফারভারদিন ১৩৯৪
২১শে মার্চ ২০১৫