‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : নিজস্ব প্রতিবেদক
রবিবার

১৮ অক্টোবর ২০১৫

২:৫১:১৭ AM
715635

সন্ত্রাসীদের হামলা থেকে শোক মজলিশগুলোকে সুরক্ষিত রাখতে মাজমার কিছু পরামর্শ

মসজিদ ও ইমামবাড়িসহ যে সকল স্থানে শোক মজলিশ অনুষ্ঠিত হয় সেগুলোর পরিচালকদের উচিত, নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে আযাদারিতে অংশগ্রহণ করতে আসা আযাদারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

হলে বাইত বার্তা সংস্থা (আবনা) : সৌদি আরবের সিহাত ও দাম্মাম শহরের ‘হুসাইনিয়া হায়দারিয়া’ ও ‘মাসজিদুল হামযাহ’তে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় –যাতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আহলে বাইত (আ.) এর ভক্ত শহীদ হয়েছেন- আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থা (মাজমা) গুরুত্বপূর্ণ এক বিবৃতি প্রকাশ করেছে।

মাজমার ঐ বিবৃতিতে এ হামলার নিন্দা জানিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, মসজিদ ও ইমামবাড়িসহ যে সকল স্থানে শোক মজলিশ অনুষ্ঠিত হয় সেগুলোর পরিচালকদের উচিত, নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে আযাদারিতে অংশগ্রহণ করতে আসা আযাদারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

গণমুখী এ সংস্থার পক্ষ থেকে স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে, বারংবার এ ধরনের রক্তক্ষয়ী ঘটনার পূণরাবৃত্তি থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে, মধ্যপ্রাচ্যের কিছু কিছু দেশের সরকার আহলে বাইত (আ.) এর অনুসারীদের জীবন রক্ষার কোন ইচ্ছা অথবা ক্ষমতা রাখে না।

 

বিবৃতির মূল অংশ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

«وما نقموا منهم إلا أن يؤمنوا بالله العزيز الحميد».

 

পূনরায় হযরত সাইয়্যেদুশ শোহাদা ইমাম হুসাইন (আ.) এর শোক অনুষ্ঠান যুগের ইয়াযিদদের হামলার শিকার হয়েছে। মিশে গেছে আহলে বাইত (আ.) এর একদল অনুসারীর রক্ত তাদের মাওলা ইমাম হুসাইন (আ.) এর রক্তের সাথে।

ওয়াহাবি তাকফিরিদের অপরাধকর্ম সমস্ত পশ্চিম এশিয়া –সিরিয়া থেকে ইরাক এবং ইয়েমেন থেকে পাকিস্তান- জুড়ে ছেয়ে গেছে। গত শুক্রবার রাতে সিহাত ও দাম্মামের দু’টি বাড়িতে চালানো সন্ত্রাসী হামলায় ইমাম হুসাইন (আ.) এর একদল অনুসারী শাহাদত বরণ করেছেন।

আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থা, বর্বর এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে, শহীদদের পরিবারের প্রতি শোক ও সমবেদনা এবং আহতদের দ্রুত সুস্থ্যতা কামনা করে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আযাদারিতে রত মুহিব্বিনে আহলে বাইত (আ.) এর দৃষ্টিকে নিম্নের কয়েকটি বিষয়ের প্রতি আকর্ষণ করছে।

 

১. ইমাম হুসাইন (আ.) এর স্মরণে আয়োজিত আযাদারি, সকল যুগে ইসলামকে জিইয়ে রেখেছে এবং মুসলিম সমাজে ইসলামি শিক্ষাকে পূণঃজীবন দান করেছে। যেভাবে ইমাম খোমেনি (রহ.) বলেছেন : ‘এই মহররম ও সফরের মাধ্যমেই ইসলাম টিকে আছে’। এ কারণেই ইসলাম, কুরআন ও আহলে বাইত (আ.) এর শত্রুরা সর্বদা শোক অনুষ্ঠান আয়োজনের বিরোধিতা করেছে এবং করছে। আর এ সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার জন্য সর্বদা তারা চেষ্টা চালিয়েছে।

 

২. গত শুক্রবার রাতে সিহাত শহরের আযাদাররা সন্ত্রাসী হামলার পর যেভাবে ‘লাব্বাইকা ইয়া হুসাইন’ ও ‘হাইহাত মিন্নায যিল্লাহ’ (অপমান আমাদের থেকে দূরে) শ্লোগান দিয়েছে, তা থেকে তাদের দৃঢ় সংকল্পের বিষয়টিই স্পষ্ট হয়। এ ধরনের হামলা যেন আযাদারদের ভয়ের কারণ না হয় এবং এর মাধ্যমে ইমাম হুসাইন (আ.) এর শোক মজলিশ লোকশূণ্য না হয়।

 

৩. এ ক্ষেত্রে ‘ইমাম হুসাইন (আ.) এর আযাদারিতে অংশগ্রহণ করতে আসা লোকদের জীবনের নিরাপত্তা’র বিষয়টিও অত্যন্ত গুরুত্ববহ। বারংবার এ ধরনের রক্তক্ষয়ী ঘটনার পূণরাবৃত্তি থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে, মধ্যপ্রাচ্যের কিছু কিছু দেশের সরকার আহলে বাইত (আ.) এর অনুসারীদের জীবন রক্ষার কোন ইচ্ছা অথবা ক্ষমতা রাখে না। অতএব, এক্ষেত্রে মসজিদ ও ইমামবাড়িসহ যে সকল স্থানে শোক মজলিশ অনুষ্ঠিত হয় সেগুলোর পরিচালকদের উচিত নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে আযাদারিতে অংশগ্রহণ করতে আসা আযাদারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

 

৪. এছাড়া খতিব ও বক্তাদের দায়িত্ব হচ্ছে, এ সকল সন্ত্রাসী হামলার নেপথ্য কারণসমূহকে স্পষ্ট করা এবং তাকফিরিদের প্রকৃত রূপকে জনসাধারণ সামনে তুলে ধরে বিভেদ ও সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ সৃষ্টিকারী সকল পদক্ষেপের প্রসার রোধ করা।

 

পূনরায়, কাপুরুষোচিত এ হামলার নিন্দা জানিয়ে শহীদদের জন্য সুউচ্চ মর্যাদা, আহতদের জন্য দ্রুত সুস্থ্যতা এবং শহীদদের পরিবারের জন্য ধৈর্য্য ও যথাযোগ্য প্রতিদান কামনা করি।

 

আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থা

৩ মহররম

 

বলাবাহুল্য, গত শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সৌদি আরবের শিয়া অধ্যুষিত ‘আশ-শারকিয়া’ অঞ্চলের দু’টি শোক মজলিশে তাকফিরি সন্ত্রাসীদের হামলায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আহলে বাইত (আ.) এর অনুসারী শহীদ হয়েছেন।#