২ আগস্ট ২০২৫ - ০১:৫৫
গাজায় প্রথমবার বিমান থেকে ত্রাণ ফেললো ফ্রান্স ও স্পেন

গাজায় মানবিক বিপর্যয়ের মুখে শুক্রবার প্রথমবারের মতো আকাশপথে ত্রাণ সহায়তা পাঠিয়েছে ফ্রান্স ও স্পেন।

আহলে বাইত (আ.) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা (আবনা): গাজায় মানবিক বিপর্যয়ের মুখে শুক্রবার প্রথমবারের মতো আকাশপথে ত্রাণ সহায়তা পাঠিয়েছে ফ্রান্স ও স্পেন। এমন সময় দেশ দুটি এই উদ্যোগ নিয়েছে যখন ইসরায়েলের অবরোধে গাজা ধীরে ধীরে দুর্ভিক্ষের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘ-সমর্থিত বিশেষজ্ঞরা। 


শুক্রবার এক্স-এ (সাবেক টুইটার) দেওয়া ইংরেজি বার্তায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, চরম মানবিক সংকটের মুখে গাজায় বিমান থেকে আমাদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তবে শুধু বিমান থেকে খাদ্য সরবরাহ যথেষ্ট নয়। ইসরায়েলকে অবশ্যই পূর্ণ মানবিক প্রবেশাধিকার দিতে হবে, যাতে দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধ সম্ভব হয়।’

ম্যাক্রোঁ আরও জানান, জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও জার্মানির সহায়তায় এই মানবিক অভিযান পরিচালিত হয়েছে।

ফ্রান্সের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, কয়েক দিনের মধ্যে গাজায় আরও বহু টন খাদ্য সহায়তা বিমান থেকে ফেলা হবে। পাশাপাশি স্থলপথে সহায়তা পাঠানোর উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।

স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসে ম্যানুয়েল আলবারেস শুক্রবার জানান, তার দেশ ১২ টন খাদ্য সহায়তা গাজায় বিমান থেকে ফেলেছে। এতে ২৪টি প্যারাশুট ব্যবহার করা হয়। প্রতিটি প্যারাশুট ৫০০ কেজি খাদ্য বহনে সক্ষম ছিল।

স্পেনের এই খাদ্য সহায়তা প্রায় ১১ হাজার মানুষের জন্য পর্যাপ্ত হবে বলে জানানো হয়। দেশটির আরও কিছু খাদ্য সহায়তা মিসর হয়ে গাজায় প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী আলবারেস।

এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, গাজাবাসীর ওপর চাপিয়ে দেওয়া এই দুর্ভিক্ষ মানবতার জন্য এক লজ্জাজনক অধ্যায়। ইসরায়েলের উচিত সব স্থল সীমান্ত স্থায়ীভাবে খুলে দেওয়া।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি সতর্ক করে বলেছেন, কেবল বিমান থেকে খাদ্য সরবরাহ করে পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব নয়। এক্স-এ তিনি লিখেছেন, বিমান থেকে সহায়তা পাঠানো ট্রাকের চেয়ে অন্তত ১০০ গুণ ব্যয়বহুল।

সম্প্রতি ইসরায়েল গাজায় আরও কিছু ত্রাণ ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দিলেও মানবিক সংস্থাগুলোর অভিযোগ, সীমান্তে কড়া চেকিং ও সীমিত প্রবেশপথের কারণে সহায়তা পৌঁছাতে চরম বিলম্ব হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের একটি প্রাণঘাতী হামলার পর ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ শুরু হয়। টানা ২১ মাসের এই যুদ্ধে গাজা উপত্যকার খাদ্য সরবরাহ চেইন ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতিসংঘ-সমর্থিত বিশেষজ্ঞরা মঙ্গলবার জানিয়েছেন, অবিলম্বে ও নির্বিঘ্ন প্রবেশাধিকার না পেলে সেখানে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।

Tags

Your Comment

You are replying to: .
captcha