আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): ‘ফুড ফর লাইফ’ কর্মসূচীর নামে ইসকনের খাবার বিতরণ এবং মুসলিম কোমলমতি অবুঝ শিশুদেরকে দিয়ে হিন্দু ধর্মের শ্লোগান দেয়ানো নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, তা এখন মুখে মুখে কিন্তু কিছু বিষয়ে আমাদের চোখ মনে এড়িয়ে গেছে।
নীচের কয়েকটি বিষয়ের প্রতি পাঠকদের মনোযোগ আকর্ষণ করছি।
১। ইসকনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আগে ঐ সকল স্কুলের কর্তৃপক্ষ বা হেড মাস্টারদেরকে খুঁজে বের করে তাদের পদত্যাগ দাবী করা উচিত। তাদের সম্মতিতেই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। অন্যথায় আজ ইসকন তো কাল অন্য কেউ এমন কাজের ধৃষ্টতা দেখাবে।
২। এ ঘটনায় সাধারণ মুসলমানরা কি নির্দোষ? শিশুগুলো মুসলিম। তাদেরকে এতটুকু শিক্ষা দেয়া উচিত ছিল যে, কি খেতে হয় আর কি খেতে নেই। বাংলাদেশের শিশুরা তো আর অভুক্ত থাকে না। বিশেষ করে যে সকল শিশুরা স্কুলে যায় তাদের টিফিন পর্যন্ত অভিভাবকরা সাথে দিয়ে দেন। তাহলে যে কেউ খাবার অফার করলে তারা খাবে কেন? এর অর্থ হচ্ছে বেসিক শিক্ষাতেই গলদ। আজ ভাতের লোভে শ্লোগান দিচ্ছে, পরদিন বড় হয়ে চাকরির লোভে, এরপর নারীর লোভে এরপর গাড়ী-বাড়ী ইত্যাদির লোভে তারা শ্লোগান দেবে।
৩। নিজের কথাই ভাবুন। আজ আপনি প্রতিবাদ করছেন, কিন্তু আপনার মুখে তো এ প্রতিবাদ মানায় না। কারণ জয় শ্রীরাম বলে যে খাবার রান্না হয় সেটা খেতে আপত্তি তো আপনার কোন কালেই ছিল না। তাহলে আপনার শিশুর বেলায় প্রতিবাদ কেন করছেন। আপনারাই শিশুদেরকে শিখিয়েছেন কিভাবে খেতে হয়। নাকি অন্য কেউ?! তাহলে তারা হাত দিয়ে খেলেও আপনার শিক্ষা, চামচ দিয়ে খেলেও আপনার শিক্ষা।
৩। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় মিডিয়া কর্মীদের নিবর দর্শকের ভূমিকা পালন। এ বিষয়ে গ্রহণযোগ্য কোন বিশ্লেষণ, প্রতিবাদ, নিউজ কেন চোখে পড়ছে না?
৪। যে এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে সে এলাকার লোকগুলোকেও এক্ষেত্রে উদাসীন দেখা গেছে। বাংলাদেশের কোন এক কোনায় যদি এক অজ্ঞাত লোক ইসলাম ধর্মের বিপরীতে কথা বলে তাহলে প্রতিবাদ করে তার ছবি-লেখা ভাইরাল করার দায়িত্ব আমাদেরই। কিন্তু জাতি ধ্বংস করার এমন ষড়যন্ত্রের বিপরীতে ঐ এলাকার মানুষ একটি প্রতিবাদ মিছিল করেছে বলে চোখে পড়েনি।
৫। সবচেয়ে মজার বিষয় হল, টুপি পরিহিত ছাত্রদের খাদ্য গ্রহণের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে এবং বোরখা পরিহিতা এক নারীকেও দেখা যাচ্ছে ছবিতে। এ দু’টোই হচ্ছে ইসলামি পোশাক বলে বিবেচিত। অর্থাৎ উদ্দেশ্য প্রবণভাবেই এ কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
সবশেষে একটি কথা বলতে চাই, যদি মুসলমানরা এ ন্যাক্কারজনক পদক্ষেপের প্রতিবাদ না জানায় তাহলে আগামীতে আরও বড় বড় কর্মসূচী বাস্তবায়নে নামবে সংঘবদ্ধ এ গোষ্ঠী। তখন আমাদের আর করার কিছু থাকবে না। যদি সামান্য হাত কেটে যায় তাড়াতাড়ি পরিস্কার করে মলম লাগিয়ে সেটা সারিয়ে তোলা সম্ভব। কিন্তু ঐ সামান্য ক্ষতকে অবহেলা করলে তা ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে; যখন আর করার কিছু থাকে না।#