‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
বুধবার

১২ অক্টোবর ২০২২

৬:০৪:৪৯ PM
1313025

গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন স্থগিত ঘোষণা

গাইবান্ধা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়।

ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বুধবার (১২ অক্টোবর) অপরাহ্নে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হলো।

এর আগে, নানা অনিয়মের অভিযোগে  দুপুর পর্যন্ত মোট ৫১টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।


আজ সকাল ৮টায় সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার ১৪৫টি কেন্দ্রের  ৯৫২টি বুথে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ শুরু হয়।   ভোট চলাকালে  বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে  সাঘাটা উপজেলার বগেরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের ও কর্মী সমর্থকের উপস্থিতিতে চারজন প্রার্থী একযোগে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। ভোট বর্জনকারী  প্রার্থীরা হলেন, জাতীয় পার্টি সমর্থিত এ এইচ এম গোলাম শহীদ, বিকল্পধারার প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. নাহিদুজ্জামান ও মাহবুবুর রহমান।

জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী এ এইচ এম গোলাম শহীদ সাংবাদিকদের জানান,  ভোটকেন্দ্র থেকে তার নিজের ও অন্যান্য প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয় এবং তাঁদের কর্মী সমর্থকদের কেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়া হয়। এ অবস্থায়  তাঁরা চার প্রার্থী একযোগে ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সকালে সিসি ক্যামেরায় ভোটের পরিস্থিতি দেখে সিইসি বলেছিলেন,  ভোট নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। আমরা স্বচক্ষে গোপন কক্ষে অবৈধভাবে প্রবেশ করে ভোট দিয়ে দিতে দেখেছি। তাই ভোটকেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে।

গাইবান্ধা-৫ আসনের নির্বাচনী এলাকায় মোট এক হাজার ২৪২টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। ১৪৫টি ভোটকেন্দ্রের ভেতরে দুটি করে ২৯০ এবং ৯৫২টি ভোটকক্ষের গোপন বুথ ছাড়া সবকটিতে সিসিটিভি স্থাপন করা হয়।

এরপর তফসিল অনুযায়ী শুরু হয় ভোটগ্রহণ। কিন্তু শুরুতেই বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ আসতে থাকে ইসিতে।

আজ  দুপুরে  ঢাকায়  নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল জানান , নির্বাচনে তিনি ব্যাপক অনিয়ম দেখেছেন। যেখানে অনিয়ম বেশি, সেখানে ভোট গ্রহণ স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। প্রথমে তিনটি। এরপর দুপুর  ১২টা নাগাদ মোট ৪৪টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচন পরিস্থিতি প্রসঙ্গে  এক প্রশ্নের উত্তরে  কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে । আপনারাও দেখতে পাচ্ছেন। গোপন কক্ষে অন্যরা ঢুকছে, ভোট সুশৃঙ্খলভাবে হচ্ছে না। তবে কেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেল, তা আমরা এখনো বলতে পারব না।’

ইভিএম নিয়ে অভিযোগ এসেছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে সিইসি বলেন, ‘ইভিএমের  কোনো দোষত্রুটি দেখতে পাচ্ছি না। মানবিক আচরণের ত্রুটির কারণে এমনটা হচ্ছে।’ একই ধরনের প্রতীক দেওয়া গেঞ্জি পরে অনেককে ভোট দিতে দেখেছেন বলে জানান সিইসি। আচরণবিধি লঙ্ঘন করে এসব কাজ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এক  প্রশ্নের উত্তরে সিইসি বলেন, ‘এরাই ডাকাত। এরাই দুর্বৃত্ত। যাঁরা আইন মানেন না, তাঁদেরই আমরা ডাকাত বলতে পারি, দুর্বৃত্ত বলতে পারি। আমাদের সবাইকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। নির্বাচন কমিশন এখানে বসে সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারবে না।’

উল্লেখ্য, নির্বাচনের দিন ভোটারদের নিরাপত্তা দিতে এবং  সুষ্ঠ নির্বাচনী পরিবেশ  বজায় রাখতে কয়েক প্লাটুন র‍্যাব, আনসার সদস্য ছাড়াও ১ হাজার ২৮৫ জন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।#


342/