রেডিও তেহরানকে দেয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বা বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা, বিশিষ্ট রাজনৈতিক ভাষ্যকার রাজেকুজ্জামান রতন।
সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো। এটি গ্রহণ, উপস্থাপনা ও তৈরি করেছেন গাজী আবদুর রশীদ।
রেডিও তেহরান: জনাব রাজেকুজ্জামান রতন রেডিও তেহরানে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি।
রাজেকুজ্জামান রতন: আপনাকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
রেডিও তেহরান: রাজেকুজ্জামান রতন, বাংলাদেশে সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংকসহ তিন ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ম বহির্ভূতভাবে ঋণ দেয়া হয়েছে এবং এ নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় চলছে। বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন?
রাজেকুজ্জামান রতন: বাংলাদেশের মতো একটি দেশের জন্য এই ধরনের ঘটনা শুধু উদ্বেগজনক নয় এটা আতঙ্কজনকও বটে। সাধারণ মানুসের কষ্টের টাকা, সাধারণ মানুষের ভবিষ্যতের সঞ্চয় হিসেবে ব্যাংকে যে টাকাটা তারা রাখেন সেই টাকা থেকে প্রাপ্ত আয় ক্রমাগতভাতে জনগণের কমে যাচ্ছে। এখান থেকে প্রায় ১৩ লক্ষ কোটি টাকার মতো ঋণ দেয়া হয়েছে। আর সেই ঋণের মধ্যে প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকার মতো ঋণকে খেলাপি ঋণ বলা হয়েছে। এরমধ্যে গত সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা ঋণ অবলোপন করে দিয়েছে। এই পরিসংখ্যান দেখলে বোঝা যায় একটা দেশের প্রদত্ত ঋণের ৯ শতাংশের বেশি ঋণ খেলাপি। মাঝে মাঝে আবার খেলাপিঋণগ্রহীতাদের ঋণ নেয়ার দায় থেকে মুক্ত করে দেয়া হচ্ছে। এসব দেখেতে দেখতেই আমরা আবার নতুন করে দেখলাম একটা প্রতিষ্ঠান, একজন ব্যক্তির নামে প্রতিষ্ঠান-তিনি ইসলামি ব্যাংকের মতো একটি ব্যাংক থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে আর সেই ঋণের জন্য তাদের যে প্রয়োজনীয় শর্ত সে শর্তগুলো তারা পূরণ করেনি। এই ঘটনা বাংলাদেশের ব্যাংকিং ক্ষেত্রে কতবড় একটা আস্থার সংকট সৃষ্টি করল জনগণের আমানতের ক্ষেত্রে-এটা বলে বোঝানো যাবে না। এটি দেশের অর্থনীতিতে প্রচণ্ড ধাক্কা এবং ব্যাংক সংক্রান্ত মানুষের আস্থার উপর একটা বড় আঘাত নিয়ে এল।
রেডিও তেহরান: সাধারণ একজন মানুষ ব্যাংক থেকে অল্প কিছু টাকা ঋণ নিতে গেলে তাকে যত রকমের নিয়ম এবং তদন্ত আছে সেগুলো শেষে যৌক্তিক কাগজপত্র পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তবে ঋণ দেয়া হয়-অথচ এত টাকা এভাবে.. কি করে সম্ভব!
রাজেকুজ্জামান রতন: দেখুন, রাজনীতিতে যেমন দায়হীনতা আছে অর্থনীতিতেও সেই দায়হীনতার বিষয়টি এরমাধ্যমে প্রমাণিত হলো।
রেডিও তেহরান: জনাব রতন, বলা হচ্ছে, ইসলামী ব্যাংকে নতুন প্রশাসক নিয়োগ দেয়া এবং মালিকানা পরিবর্তনের পর থেকে এই ব্যাংক ধীরে ধীরে তার স্বাভাবিক কার্যক্রম হারিয়ে এই পথে এসেছে। ব্যাপারটা কি আসলে তাই?