১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ - ১৫:৩৮
প্রতিরোধ শক্তির ব্যাপারে আমেরিকা ও ইসরাইলের ধারণা সম্পূর্ণ ভুল

ইকনা- ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা আজ সকালে ইরানের বিভিন্ন শহরের নারীদের বিভিন্ন অংশের একটি গ্রুপ সাথে অনুষ্ঠিত এক সভায় আঞ্চলিক সমস্যার কথা উল্লেখ করে বলেন: সিরিয়ায় যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল এবং ইহুদিবাদী শাসক ও আমেরিকার অপরাধ এবং তাদের প্রতি অন্যদের সহায়তায় শত্রুরা ভেবেছিল যে প্রতিরোধের বিষয়টি শেষ হয়ে গেছে, অথচ তাদের ধারণা সম্পূর্ণরূপে ভুল।

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, সিরিয়ায় যে ঘটনা ঘটেছে এবং ইহুদিবাদী ইসরাইল ও আমেরিকা যে অপরাধযজ্ঞ চালাচ্ছে সেসবের ভিত্তিতে তারা ভেবেছে প্রতিরোধ শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু তারা  মারাত্মক ভুলের মধ্যে রয়েছে। দখলদার ইসরাইল, আমেরিকা এবং তাদের কিছু সহযোগী এমন ভুল করছে।

ইরানের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার হাজার হাজার নারী আজ (মঙ্গলবার) সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।

সর্বোচ্চ নেতা আরও বলেন, সিরিয়ার পথ দিয়ে হিজবুল্লাহকে অবরুদ্ধ করতে পারবে এটা ভেবে ইহুদিবাদী ইসরাইল এ জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। আসলে যার শেকড় উপড়ে যাবে সেটি হলো দখলদার ইসরাইল।


আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেন, লেবাননের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর সাবেক মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ এবং ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সাবেক প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারের আত্মা জীবিত। তাদের দেহ চলে গেছে, কিন্তু তাদের চিন্তা-চেতনা টিকে আছে এবং তাদের পথ থেমে যায়নি। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, গাজায় প্রতিদিন হামলা হচ্ছে এবং মানুষ শহীদ হচ্ছে। প্রতিদিনই এটা ঘটছে। তবু তারা দৃঢ়তার সঙ্গে প্রতিরোধ অব্যাহত রেখেছে। লেবাননও প্রতিরোধ করছে।

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী আজকের সমাবেশে প্রায় দুই শতাব্দী আগে দাস মুক্তির মার্কিন স্লোগানের লুকানো উদ্দেশ্য তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, দক্ষিণের কৃষিক্ষেত্র থেকে দাসদেরকে সরিয়ে সেদেশের উত্তরের কারখানাগুলোতে নিয়ে যাওয়াই ছিল এই স্লোগানের পেছনের উদ্দেশ্য। বর্তমানেও ফ্যামিনিজম, স্বাধীনতা ও নারী অধিকারের স্লোগানগুলোর আড়ালে অমানবিক এবং রাজনৈতিক লক্ষ্য-উদ্দেশ্য লুকিয়ে রয়েছে। এগুলোর কিছু এখনই স্পষ্ট এবং কিছু লক্ষ্য পরবর্তীতে স্পষ্ট হবে।

তিনি মহানবী হজরত মুহাম্মাদ (স.)'র কন্যা হজরত ফাতিমা জাহরা (সা. আ.)-কে সৃষ্টির অন্যতম বিস্ময় বলে অভিহিত করেছেন। নারী সম্পর্কে ইসলামী নীতিমালার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইসলামে নারী ও পুরুষ একে অপরের পরিপূরক। হায়াতে তাইয়্যেবা অর্জনের প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে, বিজ্ঞান ও শিল্প-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বুদ্ধিবৃত্তিক ও আত্মিক সক্ষমতার ক্ষেত্রে, সামাজিক-রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রভাব বিস্তারে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে এবং আন্তর্জাতিক বিষয়াদিতে নারী ও পুরুষের মধ্যে কোনো তফাৎ নেই।

হজরত ফাতিমা (সা. আ.)'র অবস্থান

হজরত ফাতিমা জাহরা (সা. আ.)-এর বিভিন্ন দিক তুলে ধরে সেগুলোকে সৃষ্টিজগতের বিস্ময়কর ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করেন সর্বোচ্চ নেতা। তিনি বলেন, শিয়া ও সুন্নি বর্ণনা অনুসারে তাঁর ক্রোধ মানে আল্লাহর ক্রোধ এবং তার সন্তুষ্টি আল্লাহর সন্তুষ্টি নিয়ে আসে, এটি অনেক বড় ও বিস্ময়কর বিষয়। সর্বোচ্চ নেতা বক্তব্যের শুরুতে সবাইকে হজরত ফাতিমা (সা. আ.)'র শুভ জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান। 

আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বিশ্বে নারী ইস্যুতে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির অস্তিত্বের কথা তুলে ধরে বলেন, পুঁজিবাদ এবং পুঁজিবাদের অনুসারী রাজনীতিবিদরা গণমাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে মিথ্যাচার ও অসততার মাধ্যমে  কথিত দার্শনিক ও মানবতাবাদী তত্ত্বের আড়ালে বিশ্বে নারী ইস্যুতে হস্তক্ষেপ করছে এবং তাদের অবৈধ স্বার্থ উদ্ধার করছে। নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য এসব তত্ত্বের অশুভ ও অন্যায় উদ্দেশ্য আড়াল করছে তারা।

তিনি বলেন, অসততা ও ভণ্ডামিকে পশ্চিমা উপনিবেশবাদী ও পুঁজিবাদীরা স্বাভাবিক কৌশল বলে মনে করে এবং নারী স্বাধীনতার স্লোগানের আড়ালে তারা স্বল্প বেতন দিয়ে নারীদেরকে কারখানায় নিয়ে এসেছে। এটা তাদের ভন্ডামির উদাহরণ বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, দক্ষিণের কৃষিক্ষেত্র থেকে দাসদেরকে সরিয়ে সেদেশের উত্তরের কারখানাগুলোতে নিয়ে যাওয়াই ছিল এই দাস মুক্তির স্লোগানের পেছনের উদ্দেশ্য। বর্তমানেও ফ্যামিনিজম, স্বাধীনতা ও নারী অধিকারের শ্লোগানগুলোর  আড়ালে অমানবিক এবং রাজনৈতিক লক্ষ্য-উদ্দেশ্য লুকিয়ে রয়েছে। 4254647#


342/