৭ জানুয়ারী ২০২৫ - ১৮:০৪
ইরান ও প্রতিরোধ সংগ্রামের বিরুদ্ধে কীভাবে তৎপরতা চালাচ্ছে সৌদি টিভি চ্যানেল?

সৌদি টিভি চ্যানেল আল-হাদাসের গত বছরের প্রতিবেদনগুলো বিশ্লেষণের পর বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বলেছেন, এই টিভি চ্যানেলটি ইহুদিবাদী ইসরাইলের লাউডস্পিকারে পরিণত হয়েছে। তাদের মতে, এই চ্যানেলটি দখলদার ইসরাইলের সেনাবাহিনীর সাথে সরাসরি সমন্বয়ের ভিত্তিতে কাজ করছে।

মিডিয়া পর্যবেক্ষক এবং বিশ্লেষকরা বলছেন, আল-আরাবিয়া এবং আল-হাদাসের মতো কিছু টিভি চ্যানেল পশ্চিম এশিয়ার ঘটনাবলী সম্পর্কে ইসরাইলি নীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ করছে।

মেহের বার্তা সংস্থার বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, এই চ্যানেল পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে সৌদি আরবের সফ্ট পাওয়ারের একটি হাতিয়ার। আল-আরাবিয়ার মতো চ্যানেলগুলো সৌদি আরবের আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে কাজ করছে। এই চ্যানেলটি ২০১২ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে সম্প্রচার শুরু করেছে।

আল-হাদাস আসলে আল-আরাবিয়া টিভি চ্যানেলের একটি সাব-চ্যানেল। এটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে আরব বিপ্লব এবং সিরিয়া সঙ্কটের প্রতি সমর্থনসহ এই অঞ্চলের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কাজ করছে। এই চ্যানেলটি কাতারের আল জাজিরা টিভি চ্যানেলের প্রধান প্রতিযোগী হওয়ার চেষ্টা করছে।

প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই আল-হাদাস সবচেয়ে বিতর্কিত আরব চ্যানেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। বারবার ভুয়া খবর প্রচার করেছে এবং মিডিয়া বিতর্ক তৈরি করেছে। এই অঞ্চলের প্রতিটি দেশকে নিয়েই বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করেছে এই চ্যানেল। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ইয়েমেনে সৌদি সামরিক আগ্রাসনের প্রথম দিকে আল-আরাবিয়ার সঙ্গে সুর মিলিয়ে আল-হাদাস গুজব রটিয়েছিল আনসারুল্লাহ আন্দোলনের নেতা আব্দুল মালিক আল-হুথির নিহত হয়েছে। প্রতিরোধ সংগ্রামকে দুর্বল করার জন্য তারা এই সংবাদ প্রচার করে।

এই খবর প্রচারের পর এই দুই চ্যানেল অন্য মিডিয়ায় উপহাসের পাত্রে পরিণত হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যম ঠাট্টাচ্ছলে বলতে থাকে- ঐ দুই গণমাধ্যম আব্দুল মালিক আল-হুথিকে হত্যা করেছে। ইরাকের ক্ষেত্রেও একই কাজ করেছে। ২০১৯ সালের নভেম্বরে ইরাক সরকার শর্ত ও নীতিমালা লঙ্ঘন করায় আল-হাদাথ এবং আল-আরাবিয়া চ্যানেলের লাইসেন্স স্থগিত করে। ঐ বছর ইরাকি সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছিল এবং দু'টি চ্যানেলের বিরুদ্ধেই বিক্ষোভকারীদের উসকানি দেওয়ার অভিযোগ উঠে। অভিযোগের ভিত্তিতে লাইসেন্স স্থগিত করা হয়।

ইরানের বিরুদ্ধেও মিথ্যাচার করেছে আল-হাদাস টিভি চ্যানেল। পশ্চিমা সূত্রের বরাত দিয়ে তারা প্রচার করেছে, মাহান এয়ারের ফ্লাইটের মাধ্যমে তেহরান থেকে বৈরুতে বিশেষ পণ্য পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে ইরান। এমন খবরে প্রভাবিত হয়ে লেবাননের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ঐ ফ্লাইটের যাত্রীদেরকে তল্লাশি করে ও পণ্যগুলোও খতিয়ে দেখে। এরপর লেবাননের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বিমানে সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি। লেবাননের নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপের প্রতিবাদ জানিয়েছে সেদেশের অনেকেই।

হিজবুল্লাহ এবং ইহুদিবাদী ইসরাইল যখন যুদ্ধবিরতির মধ্যে রয়েছে তখন আল-হাদাসের এমন ভিত্তিহীন ও মিথ্যা খবর প্রকাশ দর্শকদের সঙ্গে প্রতারণার বড় দৃষ্টান্ত। হিজবুল্লাহ এবং ইহুদিবাদী ইসরাইল যখন যুদ্ধবিরতির মধ্যে রয়েছে তখন আল-হাদাসের এমন ভিত্তিহীন ও মিথ্যা খবর প্রকাশ দর্শকদের সঙ্গে প্রতারণার বড় দৃষ্টান্ত। এই খবরটি হিজবুল্লাহর সাথে এই চ্যানেলের শত্রুতা এবং ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাথে তাদের যোগসাজশকেই তুলে ধরে।#

342/