আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): পাকিস্তানের পারাচিনার শহরের একটি কাঁচাবাজারে বোমা বিস্ফোরণে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিয়া মুসলিমের শাহাদতের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থা (মাজমা)।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসলামের শত্রু এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের নেতৃত্বাধীন মধ্যপ্রাচ্যে তাদের মিত্রদের ষড়যন্ত্রের অংশ এ অপরাধকর্ম, যেটা মুসলিম নামধারী ভাড়াটে তাকফিরিদের দ্বারা বাস্তবায়িত হচ্ছে।
মাজমা’র বিবৃতি:
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
«وَمَنْ يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيهَا وَغَضِبَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهُ وَأَعَدَّ لَهُ عَذَابًا عَظِيمًا»
‘কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকে হত্যা করলে তার শাস্তি জাহান্নাম; যেখানে সে স্থায়ী হবে এবং আল্লাহ্ তার প্রতি অসন্তুষ্ট হবেন, তাকে লানত করবেন, আর তার জন্য মহাশাস্তি প্রস্তুত রাখবেন’। [সূরা নিসা : ৯৩]
কোন অপরাধে পাকিস্তানের পারাচিনারের শিয়াদেরকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে!?
প্রতিদিনই পারাচিনারের অসহায় শিয়ারা তাকফিরি ওয়াহাবিদের নির্যাতন ও অত্যাচারের স্বীকার হচ্ছে!!!
এটা কার অজানা যে, এ সকল নৃশংস অপরাধকর্ম ইসলামের শত্রু এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের নেতৃত্বাধীন মধ্যপ্রাচ্যে তাদের মিত্রদের ষড়যন্ত্রের অংশ; যা মুসলিম নামধারী ভাড়াটে তাকফিরিদের দ্বারা বাস্তবায়িত হচ্ছে।
পারাচিনারের শহীদরা হচ্ছেন এমন শহীদ; যারা নিজেদের কোন ভুলে নয় বরং অন্যের গোঁড়ামীপূর্ণ ভ্রান্ত আকিদার শিকারে পরিণত হয়ে নিজেদের জীবন খুইয়েছেন।
এমন প্রকাশ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিপরীতে পাশ্চাত্যের গণমাধ্যম, মানবাধিকারের দ্বাবীদার দেশগুলো এবং আন্তর্জাতিক মহলের লজ্জাজনক নিরবতা এটাই প্রমাণ করে যে, বর্তমানে মানবাধিকার ইস্যুটি আমেরিকার মত বিশ্বের অপর শক্তিধর দেশগুলোর রাজনৈতিক অস্ত্রে পরিণত হয়েছে। এ সকল দেশের উচিত আন্তর্জাতিক সমাজকে জবাব দেয়া।
সম্প্রতি বছরগুলোতে পাকিস্তানের যে সকল মুসলমানের রক্ত ঝরেছে, সেই রক্ত কি এতটাই মূল্যহীন যে, তার জন্য একটু প্রতিবাদও করা যায়নি?
আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থা (মাজমা) পারাচিনারের শহীদদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে, পাকিস্তানে ইসলামি সমাজের ঐক্য বিনষ্টকারী যে কোন প্রকার পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানায় এবং এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা রোধে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানোর জন্য পাক সরকারের প্রতি আহবান জানায়।
আমরা আশাবাদি যে, এ সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহ, ইসলামি সম্মেলন সংস্থা, ন্যাম, জাতিসংঘ ও এর নিরাপত্তা পরিষদসহ অন্যান্য সংস্থা নিজের মানবিক ও ধর্মীয় দায়িত্ব পালনার্থে সচেষ্ট হবে এবং এ পদক্ষেপের সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে কাঠগড়ায় তুলবে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতি আমাদের আবেদন, এ ধরনের ঘটনা ও অপরাধকর্মের সংবাদ ব্যাপকভাবে প্রচার করে পাকিস্তানের মজলুম জনতার ফরিয়াদ বিশ্ববাসীর দরবারে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করুন এবং সৃষ্ট দূরত্ব পূরণে সচেষ্ট হোন।
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ প্রতিশোধ গ্রহণকারী’
আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থা
৩ বাহমান, ১৩৯৫
২২ জানুয়ারি, ২০১৭
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (২১ জানুয়ারি) পাকিস্তানের কুররাম এজেন্সি অঞ্চলের শিয়া অধ্যুষিত পারাচিনার শহরের একটি কাঁচাবাজারে বোমা হামলায় অন্তত ২৩ জন শহীদ এবং ৩৫ জন আহত হন।#