‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : ABNA
বৃহস্পতিবার

২৫ মে ২০১৭

৬:৩৮:৩৪ AM
831798

আয়াতুল্লাহ ঈসা কাসেমের বাড়িতে হামলার নিন্দায় মাজমার বিবৃতি

যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দিত প্রেসিডেন্টের সৌদি সফর এবং লোক দেখানো সন্ত্রাসবাদ বিরোধী সম্মেলনের আয়োজনের পর আয়াতুল্লাহ ঈসা কাসেমের বাড়িতে হামলা করার মত দুঃসাহস দেখিয়েছে স্বৈরাচারী আলে খলিফা সরকার।

হলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা –আবনা-: গত মঙ্গলবার বাহরাইনের দিরাজ অঞ্চলে আয়াতুল্লাহ ঈসা কাসেমের বাড়িতে এ দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থা (মাজমা)।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এক বছর আগে আন্তর্জাতিক সকল আইন ও মানদণ্ড লঙ্ঘন করে আয়াতুল্লাহ ঈসা কাসেম এবং শিক্ষা, সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তৎপর ৪৭০ জন ব্যক্তিত্বের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয় বাহরাইন সরকার। বহুবার তারা শাইখ ঈসা কাসেমকে আটক করার সিদ্ধান্ত নিলেও জনপ্রিয় এ আলেমের বাড়ির সামনে দিবা-রাত্র সাধারণ জনগণের অবস্থান তাদেরকে এ দুঃসাহস দেখানো থেকে বিরত রেখেছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দিত প্রেসিডেন্টের সৌদি সফর এবং লোক দেখানো সন্ত্রাসবাদ বিরোধী সম্মেলন আয়োজনের পর আয়াতুল্লাহ ঈসা কাসেমের বাড়িতে হামলা করার মত দুঃসাহস দেখিয়েছে স্বৈরাচারী আলে খলিফা সরকার।

 

বিবৃতির মূল অংশ

 

بسم الله قاصم الجبارین مبیر الظالمین

«فمَن اعتدَی عَلَیکم فَاعتَدُوا علیه بمثلِ ما اعتدی علیکم».

“…সুতরাং যে কেউ তোমাদের উপর আক্রমণ করবে তোমরাও তাদের অনুরূপ আক্রমণ করবে…” (বাকারাহ : ১৯৪)

দীর্ঘ একবছর ধরে হুমকি দেয়ার পর আজ (২৩ মে) সকালে দিরাজ অঞ্চলের জনগণের বিরুদ্ধে আপাদমস্তক সজ্জিত বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়ে বাহরাইনের শীর্ষস্থানীয় ফকীহে’র বাসভবনেহামলা চালিযেছে দেশটির স্বৈরাচারী শাসক আলে খলিফা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক জায়নবাদের মিত্র এ সরকার আজ অসহায় জনগণের উপর হামলা চালিয়েছে। হামলায় এক ব্যক্তি শহীদ এবং বহু লোক আহত হয়েছে।

ঐ অঞ্চলে সকল ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে আয়াতুল্লাহ ঈসা কাসেমের বাড়িতে প্রবেশ করে আলে খলিফার ভাড়াটে সৈন্যরা তাঁকে গৃহবন্দী করে রাখে। এখনো পর্যন্ত তাঁর বিষয়ে কোন সংবাদ পাওয়া যায়নি।

একটি গণমুখী আন্তর্জাতিক সংগঠন হিসেবে আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থা –বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শত শত ব্যক্তিত্ব যার সদস্য পদের অধিকারী-, আলে খলিফা সরকার কর্তৃক নতুনভাবে শুরু করা এ অপরাধকর্মের তীব্র নিন্দা জানিয়ে নিম্নের কতিপয় বিষয়ের প্রতি বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছে:

১। বাহরাইনের দখলদার সরকারের সর্বশেষ পদক্ষেপ, আন্তর্জাতিক সমাজ ও বিশ্বনেতাদের নিরবতারই ফসল। যদি ৬ বছর আগ থেকে হত্যাকাণ্ড, অরাজকতা, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কর্তন, কারাগারে প্রেরণ, নির্যাতন, হামলা, বহিস্কার, নির্বাসন এবং নাগরিকত্ব বাতিলসহ যে সকল অন্যায় পদক্ষেপ স্বৈরাচারী এ সরকার নিয়েছে সেগুলোর যদি উপযুক্ত জবাব দেয়া হত, তবে বিশ্বের অন্যতম সৎকর্মশীল, উন্নত চরিত্রের অধিকারী ও পণ্ডিত ব্যক্তিত্বের অবমাননা এবং তার বাড়িতে হামলার ধৃষ্টতা দেখাত না বাহরাইনের গণতন্ত্র বিরোধী স্বৈরাচারী এ সরকার।

২। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এক বছর আগে আন্তর্জাতিক সকল আইন ও মানদণ্ড লঙ্ঘন করে আয়াতুল্লাহ ঈসা কাসেম এবং শিক্ষা, সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তৎপর ৪৭০ জন ব্যক্তিত্বের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয় বাহরাইন সরকার। বহুবার তারা শাইখ ঈসা কাসেমকে আটক করার সিদ্ধান্ত নিলেও জনপ্রিয় এ আলেমের বাড়ির সামনে দিবা-রাত্র সাধারণ জনগণের অবস্থান তাদেরকে এ দুঃসাহস দেখানো থেকে বিরত রেখেছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দিত প্রেসিডেন্টের সৌদি সফর এবং লোক দেখানো সন্ত্রাসবাদ বিরোধী সম্মেলন আয়োজনের পর আয়াতুল্লাহ ঈসা কাসেমের বাড়িতে হামলা করার মত দুঃসাহস দেখিয়েছে স্বৈরাচারী আলে খলিফা সরকার।

৩। অতএব, এখানে বলা প্রয়োজন যে, আয়াতুল্লাহ ঈসা কাসেমের কোনরূপ ক্ষয়ক্ষতির হলে এর জন্য সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র ও আলে সৌদ দায়ী থাকবে। যারা এ বছরগুলোত ঘোর সমর্থন ও সরাসরি সেনাবাহিনী প্রেরণের মাধ্যমে বাহরাইনের বিচার বিভাগে নিযুক্ত নিজেদের দোসরদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে।

৪। বাহরাইনের জনতা ও যুবসমাজ, সংখ্যায় লঘু হওয়া সত্ত্বেও শক্তিশালী মনোবল ও হিম্মতের অধিকারী। তারা গত ১১ মাস ধরে নিজেদের প্রিয় নেতা ও ধর্মীয় আলেমের বাড়ি ঘিরে রেখে যে কালজয়ী ও দৃষ্টান্তহীন নজীর স্থাপন করেছেন, এ পরিস্থিতিতেতারা তাদের শ্লোগান –মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিরক্ষা- ও কর্মধারা অব্যাহত রেখে ধর্ম ও জনগণের প্রকৃত সেবককে একা ফেলে যাবে না।

৫। সর্বশেষে এ বিষয়টি উল্লেখ করাকে প্রয়োজন মনে করছি যে,যদি জাতিসংঘ, ইসলামি সমন্বয় সংস্থা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বিশ্ব নেতারা, আন্তর্জাতিক সংগঠনসমূহ এবং আন্তর্জাতিক সমাজ আয়াতুল্লাহ শাইখ ঈসা কাসেমের নিঃশর্ত মুক্তির বিষয়ে অনতি বিলম্বে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তবে এ দেশ কঠিন বিপর্যয়ের মুখে পড়বে, যা সমগ্র বিশ্বেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

«وَ سَیَعلَمُ الَّذینَ ظَلَمُوا‌ ای مُنقَلَبٍ یَنقَلِبُون» (سوره شعراء ـ 227)

“অত্যাচারীরা শীঘ্রই জানবে কোন প্রত্যাবর্তনস্থলে তারা প্রত্যাবর্তন করবে” (শোয়ারা : ২২৭)

আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থা

২৬ শাবান ১৪৩৮

২ খুরদাদ ১৩৯৬

২৩ মে ২০১৭