১৫ মার্চ ২০২৫ - ২২:৪২
Source: Parstoday
জাপানে মার্কিন অপরাধযজ্ঞের ৩টি বেদনাদায়ক ঘটনা

পার্সটুডে: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় টোকিওতে মার্কিন বোমা হামলার ৮০তম বার্ষিকী উদযাপন করেছে জাপান, যেখানে মাত্র এক রাতে আনুমানিক এক লাখ মানুষ নিহত হয়েছিল।

গত সপ্তাহে,দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় টোকিওতে মার্কিন বোমা হামলার ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে টোকিওর সুমিদা ওয়ার্ডে একটি স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছিল যেখানে বোমা হামলায় নিহতদের অনেকের দেহাবশেষ রয়েছে। অনুষ্ঠানে জাপানের  রাজপরিবারের দুই সদস্য,টোকিওর গভর্নর এবং বেঁচে যাওয়া কিছু ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। পার্সটুডের খবর অনুযায়ী ১৯৪৫ সালের ১০ মার্চ ভোরে আমেরিকান বি-২৯ বোমারু বিমান টোকিও শহরের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আগুন  বোমা ফেলে।

মার্কিন এই ভয়াবহ হামলায় প্রায় ২,৭০,০০০টি আবাসিক ইউনিট পুড়ে যাওয়ার পাশাপাশি প্রায় এক লাখ মানুষ নিহত হয়। তবে এই পাশবিক হামলায় নিহতদের সঠিক সংখ্যা এখনও অজানাই রয়ে গেছে।

অবশ্য টোকিওতে বোমা হামলা জাপানের উপর আমেরিকার একমাত্র বোমা হামলা ছিল না। হিরোশিমা এবং নাগাসাকি শহরগুলোও মার্কিন আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু ছিল।

এই প্রবন্ধে জাপানে মার্কিন অপরাধযজ্ঞের মাধ্যমে প্রভাবিত তিনটি বেদনাদায়ক ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে:

১. এক সেকেন্ডের দশ লক্ষ ভাগের এক ভাগে কয়েক লক্ষ ডিগ্রি মাত্রার তাপ সবকিছুকে এক মুহূর্তে বাষ্পে পরিণত করে

হিরোশিমায় মার্কিন হামলায় সেকেন্ডের প্রথম মিলিয়ন ভাগের এক ভাগ তাপশক্তি মহাকাশে নির্গত হয়েছিল, যা দেড় কিলোমিটার ব্যাসার্ধের একটি অঞ্চলে আগুনের গোলায় পরিণত হয়েছিল এবং কয়েক মিলিয়ন ডিগ্রির সমতুল্য তাপ হিরোশিমার উপরে কয়েক সেকেন্ডের জন্য আকাশকে জ্বলিয়ে তুলেছিল। পৃথিবীতে যখন তাপপ্রবাহ এসেছিল, তখন তাপমাত্রা ছিল কয়েক হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেড় কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে সবকিছু হঠাৎ করে বাষ্পে পরিণত হয়ে ছাই হয়ে যায়। ৪ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের একটি এলাকায় ভবন এবং মানুষ হঠাৎ আগুন ধরে যায়। তাপের পর বিস্ফোরণ তরঙ্গের ধ্বংসাত্মক প্রভাব দেখানোর পালা। অত্যন্ত উত্তপ্ত গ্যাস নির্গত হওয়ার কারণে বিস্ফোরণ তরঙ্গ ঘন্টায় ১,০০০ কিলোমিটার বেগে ভ্রমণ করে বাতাসের একটি শক্ত প্রাচীরের মতো ছিল যা ২ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে সবকিছুকে ধুলোয় পরিণত করেছিল। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে সেই মুহূর্তে প্রায় ৭০,০০০ মানুষ গলে মারা গিয়েছিল এবং আরও কয়েক হাজার মানুষ গুরুতর আহত এবং পুড়ে গিয়েছিল।

২. জিনগত পরিবর্তন এবং অস্বাভাবিকতা

পারমাণবিক বোমা হামলার পর হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে ৭০,০০০ শিশুর ওপর পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। নাগাসাকিতে ৫০০ থেকে ৮০০ শিশুর বাড়িতে পরীক্ষা করা হয়েছিল। সেই সময়ে জিনগত ক্ষতির কোনও প্রমাণ পাওয়া যায় নি। তবে ২০০৮ সালে বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের এবং তাদের সন্তানদের উপর নতুন গবেষণা পরিচালিত হয়েছিল যা ডিএনএ'তে জিনগত পরিবর্তন এবং বিভিন্ন অস্বাভাবিকতা নিশ্চিতভাবে চিহ্নিত করেছিল।

৩. হিরোশিমার ছায়া

হিরোশিমায় বিস্ফোরণের পর রাস্তাগুলোতে মানুষ,সাইকেল এবং জিনিসপত্রের ভয়ঙ্কর ছায়া খোদাই করা হয়েছিল যা এখন "হিরোশিমার ছায়া" নামে পরিচিত। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে বোমার তীব্রতা মাটিতে ছায়া ফেলেছিল। তবে বিজ্ঞান দেখায় যে বোমা হামলার আগে রাস্তায় এই চিহ্নগুলো বিদ্যমান ছিল এবং শক্তিশালী বোমাগুলো আশেপাশের এলাকার রঙ নষ্ট করে দিয়েছিল যা আতঙ্কিত মানুষের ছায়ার মতো দেখাচ্ছিল।#

342/

Your Comment

You are replying to: .
captcha