৭ মে ২০২৫ - ২২:০৩
Source: Parstoday
বেন গুরিয়ন বিমান বন্দরে ইয়েমেনি আক্রমণ; প্রতিরোধ সংগ্রামের ইতিহাসে টার্নিং পয়েন্ট: আতওয়ান

পার্সটুডে- আরব বিশ্বের বিখ্যাত বিশ্লেষক আব্দুল বারি আতওয়ান দখলদার ইসরাইলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রশংসা করেছেন।

পার্সটুডের তথ্য বলছে, আরব বিশ্বের বিখ্যাত বিশ্লেষক আব্দুল বারি আতওয়ান সোমবার লিখেছেন- "দখলদার ইসরাইলের বেন গুরিয়ন বিমান বন্দরের কেন্দ্রস্থলে প্যাসেঞ্জার লাউঞ্জের কাছে একটি ইয়েমেনি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করেছে। ইসরাইলের ব্যাপক গোপনীয়তা সত্ত্বেও হতাহতের খবর এসেছে, লাখ লাখ বসতি স্থাপনকারী ভয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে লুকিয়েছে এবং কয়েক ডজন আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থা তাৎক্ষণিকভাবে তেল আবিবে তাদের ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে। এটি আরব-ইসরাইল যুদ্ধের ইতিহাসে একটি উজ্জ্বল পয়েন্ট এবং ইয়েমেনি সেনাবাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিটের জন্য একটি বড় অর্জন।"

তিনি আরও বলেছেন, "মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ও ফ্রিগেটগুলোকে নিষ্ক্রিয় করার ক্ষেত্রে ইয়েমেনি ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিটের সাফল্য এবং লোহিত সাগর ও বাব আল-মান্দাবে উপনিবেশবাদীদের জাহাজ চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞার পর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার এই সাফল্য তাদের মর্যাদা ও অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে।"

ইয়েমেনি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে যুদ্ধের সমস্ত সমীকরণ বদলে দিয়েছে। তিনি বলেন, ছয়টি কারণে এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা গুরুত্বপূর্ণ।

১- "প্যালেস্টাইন-২" ক্ষেপণাস্ত্রটি ফিলিস্তিনের সমর্থনে এবং গাজায় গণহত্যার বিরোধিতা করে নিক্ষেপ করা হয়েছে। এর মধ্যদিয়ে এটা ফুটে উঠেছে যে, দখলদার ইসরাইলে কোনো ধরণের নিরাপদ অঞ্চলের অস্তিত্ব নেই। সব অঞ্চলই ইয়েমেনি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোনের আওতায় রয়েছে।

২- দখলদার ইসরাইলের সব উন্নত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যর্থ হয়েছে। এসব আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে- রয়েছে: হেটয, থাড, পেট্রিয়ট এবং আয়রন ডোম। এসব প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ব্যর্থতা থেকে এটা স্পষ্ট, ক্ষেপণাস্ত্রের সাহায্যে পরিচালিত অভিযানটি ছিল অত্যন্ত উন্নত ধরণের এবং ক্ষেপণাস্ত্রটিকে ঠেকানো তাদের পক্ষে  কোনো ভাবেই সম্ভব ছিল না।

৩- এই ক্ষেপণাস্ত্রটি কোনও বৃহৎ শক্তি থেকে আসেনি; অন্য আরব দেশগুলো যেমন শক্তিধর দেশগুলোর কাছ থেকে বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কিনছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ইয়েমেনিরাই তৈরি করেছে এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প অডিও ও ভিডিওর মাধ্যমে এই সত্যটি স্বীকার করেছেন।

৪- এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হলো- এটি ১৪ মিনিটেরও কম সময়ে ২,২০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্ব অতিক্রম করে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে, যা প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সমস্ত সামরিক একাডেমির কোর্সে অন্তর্ভুক্ত হবে এবং এটি একটি নতুন পর্যায়ের সূচনা।

৫- তেল আবিবের কেন্দ্রস্থলে এই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের মধ্যদিয়ে যেমন অভূতপূর্ব সামরিক অর্জন সম্ভব হয়েছে তেমনি ইসরাইলি প্রশাসন, সেনাবাহিনী এবং বসতি স্থাপনকারীদের জন্য মানসিক পরাজয় এনেছে। লাখো-কোটি আরব ও মুসলিম বিশেষ করে প্রতিরোধ সংগ্রামীদের জন্য এটি একটি আশার আলো।

৬- এই আক্রমণটি মার্কিন হামলার ব্যর্থতা তুলে ধরেছে। আমেরিকা এখন পর্যন্ত ১,৩০০-এরও বেশি হামলা চালিয়েছে।

আব্দুল বারি আতওয়ান আরও বলেছেন, "ইসরাইল-মার্কিন শয়তানি শক্তির মোকাবেলায় আরব ও ইসলামী প্রতিরোধের জন্য রোববার ছিল একটি ঐতিহাসিক ও উজ্জ্বল দিন।"#

Your Comment

You are replying to: .
captcha