আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): ফিলিস্তিনপন্থি অধিকার সংগঠন প্যালেস্টাইন অ্যাকশন গ্রুপ জানিয়েছে, সিডিনি, ব্রিসবেন ও মেলবোর্নে ব্যাপক জনসমাগম হয়েছিল। তাদের দাবি এক ব্রিসবেনেই অন্তত ৫০ হাজার মানুষসহ দেশব্যাপী সবমিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিন লাখ বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে আসে।
অবশ্য বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা নিয়ে তাদের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ব্রিসবেনে হাজার দশেকের মতো মানুষের জমায়েত হয়েছিল। সিডনি ও মেলবোর্নে বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা নিয়ে তাদের পক্ষ থেকে কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
সিডনিতে বিক্ষোভের একজন আহ্বানকারী জশ লিজ বলেছেন, আমরা গাজায় গণহত্যার অবসান এবং আমাদের সরকারের কাছে ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞার দাবি জানাতে এখানে একত্রিত হয়েছি।
উপস্থিত বিক্ষোভকারীদের অনেকের হাতে ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা। তারা স্লোগানে দিচ্ছিলেন, ‘ফিলিস্তিন মুক্ত করো’ (ফ্রি, ফ্রি প্যালেস্টাইন)।
এদিকে, বিক্ষোভের কারণে অনিরাপদ পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে অস্ট্রেলীয় ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বকারী এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল অফ অস্ট্রেলিয়ান জুয়রির সহ-প্রধান নির্বাহী অ্যালেক্স রিভচিন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে তিনি বলেছেন, এই ধরনের বিক্ষোভ একটি অনিরাপদ পরিবেশ তৈরি করছে। এমনটা হওয়া উচিত নয়।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের সরকারের ফিলিস্তিনকে শর্তসাপেক্ষ স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণার পর চলতি সপ্তাহে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কঠোর সমালোচনা করেছেন। ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও কানাডার মতো দেশগুলোর পদক্ষেপ অনুসরণ করে আলবানিজের নেতৃত্বাধীন লেবার সরকার এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকে অস্ট্রেলিয়া ও ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও উত্তেজনাপূর্ণ হয়েছে।
আগস্টের ১১ তারিখে অস্ট্রেলিয়া সরকার ওই ঘোষণা দেওয়ার কয়েকদিন আগে সিডনির বিখ্যাত হারবার ব্রিজে কয়েক হাজার মানুষ গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠা ও ত্রাণ সরবরাহের দাবিতে মিছিল করেছিলেন। আপাতদৃষ্টিতে তাই মনে হতে পারে, জনতার চাপে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আলবানিজ প্রশাসন।
২০২৩ এর ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অনুপ্রবেশ করে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। তাদের হামলায় অন্তত এক হাজার ২০০ জনের প্রাণহানি ও ২৫০ জন জিম্মি হওয়ার দাবি করে আসছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। এর প্রতিক্রিয়ায়, হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্য সামনে রেখে গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে নেতানিয়াহু সরকার।
বিভিন্ন সংস্থা ও গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৬০ হাজার ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। সেখানকার খাদ্য পরিস্থিতি দীর্ঘদিন ধরে চরম সংকটে থাকলেও, সম্প্রতি সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি ঘোষণা করেছে জাতিসংঘ।
Your Comment