৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ১১:০০
গাজা অভিমুখে ৪৪ দেশের ১০০ জাহাজ

শ্বের ৪৪টি দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে প্রায় ১০০টি জাহাজের সমন্বয়ে গঠিত এই বহরটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সমুদ্র মিশন হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): ইসরায়েলের কঠোর অবরোধ উপেক্ষা করে ইউরোপ থেকে গাজার জনগণের জন্য মানবিক সহায়তা নিয়ে সমুদ্রপথে যাত্রা শুরু করেছে একটি বিশাল নৌবহর।



বিশ্বের ৪৪টি দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে প্রায় ১০০টি জাহাজের সমন্বয়ে গঠিত এই বহরটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সমুদ্র মিশন হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

অভিযানের আয়োজকরা জানিয়েছেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে গাজার জনগণের প্রতি আন্তর্জাতিক সংহতির বার্তা পৌঁছে দেওয়াই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য।

এই নৌমিশনের সংগঠক ‌গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা জানিয়েছে, ছয়টি মহাদেশের বিভিন্ন দেশ—যেমন স্পেন, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইউরোপের অন্যান্য দেশ—এই মিশনে অংশ নিচ্ছে।

অংশগ্রহণকারীরা কেউই কোনো রাষ্ট্র বা রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন না, বরং সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায়, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছেন।

নৌবহরের প্রথম অংশে ডজনখানেক ছোট আকারের জাহাজ রয়েছে, যেগুলোতে চিকিৎসক, মানবিক কর্মী, স্বেচ্ছাসেবী এবং জরুরি সহায়তা সামগ্রী বহন করা হচ্ছে।

বহরটি গত ৩১ আগস্ট স্পেনের একটি বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে এবং ৪ সেপ্টেম্বর তিউনিসিয়ায় পৌঁছে দ্বিতীয় দলের সঙ্গে একত্রিত হয়েছে।

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা সূত্রে জানা গেছে, নিরাপত্তার কারণে জাহাজগুলোর নির্দিষ্ট অবস্থান, সংখ্যা ও গন্তব্য বন্দরগুলোর নাম গোপন রাখা হয়েছে। তবে প্রায় ৩,০০০ কিলোমিটার সমুদ্রপথ পাড়ি দিতে তাদের ৭-৮ দিন সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই অভিযান পরিচালনা করছে চারটি প্রধান আন্তর্জাতিক কোয়ালিশন। এতে অংশ নিয়েছেন চিকিৎসক, সমাজকর্মী, শিল্পী, ধর্মীয় নেতা, আইনজীবী ও সমাজবিজ্ঞানীরা। সবাইকে একত্রিত করেছে একটি অভিন্ন লক্ষ্য— গাজার ওপর অবরোধ ও চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করা।

বার্সেলোনার প্লাসা দেল রেই-তে অনুষ্ঠিত একটি সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকরা বলেন, আমরা মানবিক মর্যাদাকে প্রাধান্য দিচ্ছি। আমরা সংঘাত চাই না, বরং শান্তিপূর্ণভাবে গাজার জনগণের জন্য সহায়তা পৌঁছে দিতে চাই।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সাল থেকে ইসরায়েল গাজার আকাশ ও জলসীমা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। এই অবরোধের ফলে খাদ্য, ওষুধসহ বিভিন্ন জরুরি সামগ্রী প্রবেশে কঠোর বাধা তৈরি হয়েছে।

গাজা এখন কার্যত বাইরের বিশ্বের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন।

২০০১ সালে ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজার ইয়াসির আরাফাত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ধ্বংস হয়ে যায়। এরপর থেকে স্থল ও আকাশপথে প্রবেশের সুযোগ সীমিত হওয়ায় সমুদ্রপথই এখন মানবিক সহায়তার একমাত্র বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

ফ্লোটিলা মিশনের সদস্যদের মতে, এই অভিযান কেবল একটি ত্রাণ মিশন নয়, বরং এটি একটি প্রতীকী বার্তাও বহন করছে—গাজা যেন বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন না থাকে এবং অবরোধ যেন অবিলম্বে প্রত্যাহার করা হয়।

Tags

Your Comment

You are replying to: .
captcha