আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): গাজায় চলমান সংঘাত ও ইসরায়েলি হামলায় হাজার হাজার মানুষ এখন কবরস্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন। ঘরবাড়ি ধ্বংস হওয়া বা অন্য কোনো নিরাপদ স্থান না থাকায় তারা বাধ্য হয়েছেন মৃতদের জন্য পবিত্র কবরস্থানকে জীবিতদের জন্য শেষ আশ্রয় হিসেবে ব্যবহার করতে।
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও মানবিক পরিস্থিতি এখনও ভয়ঙ্কর।
আল জাজিরার প্রতিবেদক হিন্দ খুদারি দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস থেকে জানিয়েছেন, “কবরস্থানগুলো আজ শুধু মৃতদের জন্য নয়; বহু পরিবার এখানে বসবাস করছে। এটি তাদের ইচ্ছা নয়, বেঁচে থাকার একমাত্র উপায়।”
উত্তর গাজার বেইত হানুন থেকে বাস্তুচ্যুত, ১২ সন্তানের বাবা রামি মুসলেহ বলেন, “কবরস্থান ছাড়া আর কোনো নিরাপদ জায়গা পাইনি। সন্তানদের কবরের পাশে বড় করতে হচ্ছে—এটা অসহনীয়।”
আরেক বাসিন্দা সাবাহ মুহাম্মদ যোগ করেন, “যে কবরস্থান একসময় মৃতদের জন্য পবিত্র ছিল, এখন তারা জীবিতদের দুর্দশার নীরব সাক্ষী।”
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজার প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ—অর্থাৎ অন্তত ১৯ লাখ—যুদ্ধ চলাকালে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। দক্ষিণ গাজার আশ্রয়কেন্দ্রগুলো অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে এবং জমি ভাড়া করার সামর্থ্য না থাকায় বহু পরিবার সীমিত মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভর করছে। ইউএনআরডব্লিউএর মতে, গাজায় প্রায় ৬১ মিলিয়ন টন ধ্বংসাবশেষ রয়েছে; পুরো পাড়া-মহল্লা অনেকাংশে ধ্বংস হয়ে গেছে।
অক্টোবর ১০ তারিখ থেকে নাজুক যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও, ইসরায়েল মানবিক সহায়তা প্রবেশে সীমাবদ্ধতা চালিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালত সম্প্রতি রায় দিয়েছে, গাজায় সহায়তা প্রবেশ করতে হবে। তবে বর্তমানে কেবল কেরেম শালোম সীমান্তপথে কেন্দ্র ও দক্ষিণ গাজার জন্য কনটেইনার প্রবেশ করছে; উত্তর অংশের সীমান্ত এখনো খোলা হয়নি।
Your Comment