আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): বুধবার ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর অঞ্চলের দুই এলাকা জুদেয়া ও সামারিয়াকে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অন্তর্ভুক্ত করতে বিল পাস হয় নেসেটে।
বিলটি উত্থাপনের পর ১২০ আসনের নেসেটে এটি মাত্র এক ভোটের ব্যবধানে পাস হয়।
বিলটির পক্ষে ভোট পড়েছে ২৫টি, বিপক্ষে পড়ে ২৪টি। বাকি ৭১ জন ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিলেন, যার মধ্যে নেতানিয়াহু নিজে এবং লিকুদ পার্টির বেশ কয়েকজন এমপি আছে।
তবে জোট সরকারের অংশ হিসেবে থাকা জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন–গভির এবং অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোতরিচের দল এর পক্ষে ভোট দেয়।
এদিকে ইসরায়েলের পার্লামেন্টারি বিধি অনুসারে, আইনে পরিণত হতে বিলটির চার দফা ভোটাভুটি পেরোতে হবে। পরবর্তী ধাপে বিলটি নেসেটের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা কমিটিতে পাঠানোর কথা। তবে নেতানিয়াহু নির্দেশ জারি করার পর আপাতত বিলটির ওপর দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ দফার ভোট হচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর অঞ্চলের জুদেয়া ও সামারিয়া দখল করেছিল ইসরায়েল। তার পর থেকে এখন পর্যন্ত পশ্চিম তীরের এই দুই ভূখণ্ড ইসরায়েলের দখলেই আছে।
তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জাতিসংঘের দৃষ্টিতে পশ্চিম তীর ইসরায়েলের দখলদারির আওতায় থাকা একটি অঞ্চল। ২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) স্পষ্টভাবে রায় দিয়েছিল যে, পশ্চিম তীরসহ ফিলিস্তিনের অন্য ভূখণ্ডে ইসরায়েলের উপস্থিতি অবৈধ। রায়ে বলা হয়, যত দ্রুত সম্ভব ইসরায়েলকে সেসব অঞ্চল থেকে সেনা ও অবৈধ বসতি প্রত্যাহার করতে হবে।
এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলকে প্রকাশ্যে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে। টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলে, ‘পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত করার প্রশ্নই আসে না।
আমি এ বিষয়ে আরব দেশগুলোকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। তারা আমাদের বড় সমর্থন দিয়েছে। এমন কিছু ঘটলে ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের সব সমর্থন হারাবে। আরও বলে, ইসরায়েলের উচিত এখন গাজায় যুদ্ধবিরতি ও শান্তি আলোচনায় মনোযোগ দেওয়া, নতুন দখল নয়।’
অন্যদিকে বিল অনুমোদনের সময়ই ইসরায়েলে অবস্থান করছিল যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। বৃহস্পতিবার সে তেলআবিবে সাংবাদিকদের বলে, ‘ইসরায়েল পশ্চিম তীর নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করতে পারবে না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কথাতে এমন কোনো বিষয় নেই। যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান স্পষ্ট, আমরা এই পদক্ষেপ সমর্থন করব না।’
এছাড়াও বিলটি পাস হওয়ার পর তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্কো রুবিও বলে, ‘তারা (ইসরায়েল) নেসেটে একটি বিল পাস করেছে, আমাদের পক্ষ থেকে এই বিলকে কোনো সমর্থন দেওয়া হবে না। কারণ আমরা এটিকে গাজায় শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছি।’
Your Comment