আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): ইসরায়েলি হামলায় আহত ও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত ফিলিস্তিনিদের চিকিৎসায় বাধা দিচ্ছে ইসরায়েল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, গাজার বাইরে নিয়ে চিকিৎসা না করায় ইতোমধ্যে ৯০০ ফিলিস্তিনি মারা গেছেন।
সংস্থাটির প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রিয়াসুস গাজা থেকে রোগী স্থানান্তরের পথ খুলে দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, অপেক্ষায় রেখে মানুষের স্বাস্থ্য ও সুস্থতা ক্ষুন্ন করা অমানবিক।
ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা থেকে প্রায় ১৬ হাজার ৫০০ রোগী এখনও স্থানান্তরের অপেক্ষায় রয়েছেন। ইসরায়েলি বাধায় তাদের চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে। জ্বালানি, ওষুধ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ঘাটতির কারণে গাজার হাসপাতালগুলো রোগী ধারণক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।
টেড্রোস আধানম এক্স পোস্টে জানান, ‘আমি ৩০টি দেশকে ধন্যবাদ জানাই, যারা রোগীদের সেবা গ্রহণের জন্য তাদের দরজা খুলে দিয়েছে এবং অন্যদেরও এতে যোগদানের আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রায় ৪০০০ শিশুসহ ১৬ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি রোগী গাজার বাইরে জরুরি সেবা গ্রহণের জন্য স্থানান্তরের অপেক্ষায় রয়েছে।’ চিকিৎসার সব পথ খুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
যুদ্ধের সময় ইসরায়েলি বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে হাসপাতাল এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করে। চিকিৎসাকর্মীরাও আক্রমণের শিকার হয়েছেন। জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিস জানিয়েছে, ইসরায়েল কমপক্ষে দেড় হাজার স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসককে হত্যা করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০২৪ সালের মে থেকে এ পর্যন্ত ৫ হাজার ৫০০ শিশুসহ ৮ হাজার রোগীকে চিকিৎসার জন্য গাজা থেকে বাইরে স্থানান্তর করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, দক্ষিণ গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। সর্বশেষ হামলায় রোববারও তিন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে দখলদার বাহিনী। গত দুই বছরে ইসরায়েলের কারাগারে ৫৮ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের মানবাধিকার সংস্থা ফিজিশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস। তাদের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজা থেকে শত শত বন্দি নিখোঁজও রয়েছে। এতে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে পারে।
মানবাধিকার সংস্থাটি প্রতিবেদন তৈরিতে ফরেনসিক রিপোর্ট পর্যবেক্ষণ করে। তা ছাড়া আইনজীবী, কর্মী, আত্মীয়স্বজন ও সাক্ষীদের সাক্ষাৎকার নেয়। তাতে ওই সংখ্যক মৃত্যুর তথ্য উঠে আসে। তা ছাড়া শারীরিক সহিংসতা, চিকিৎসা অবহেলা ও অপুষ্টির মতো কারণগুলোও পর্যবেক্ষণ করেছে সংস্থাটি। যুদ্ধের প্রথম আট মাসে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মধ্যে গড়ে প্রতি চার দিনে একজনের মৃত্যু হয়।
Your Comment