২১ নভেম্বর ২০২৫ - ২১:৫৪
ফিলিস্তিনি হলুদ রেখার ৩০০ মিটার ভেতরেই ইসরায়েলি বাহিনী ।

যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী উপকূলভূমির ভেতর আরও গভীরে গিয়ে অবস্থান নেওয়ায় গাজাবাসীর জনজীবন আরও সংকুচিত এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): ইসরায়েলি বাহিনী ও ট্যাঙ্ক গাজা সিটির পূর্বাংশে তথাকথিত ‘হলুদ রেখা’ পার হয়ে প্রায় ‘৩০০ মিটার’ ভেতরে চলে গেছে।




এই রেখা হলো সেই অনির্দিষ্ট সীমানা যেখানে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ইসরায়েলি বাহিনী অবস্থান বদল করে পিছু হটেছিল।


সংস্থাটি বলেছে, ‘এলাকায় চলমান গোলাবর্ষণের কারণে বহু পরিবারের ভাগ্য এখনো অজানা’ এবং হলুদ রেখা সম্প্রসারণ যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি স্পষ্ট অশ্রদ্ধা।


আল-জাজিরার প্রতিবেদক হিন্দ খুদারি বৃহস্পতিবার গাজা সিটি থেকে জানান, ইসরায়েলি সৈন্যরা শুজায়েয়ার পূর্বাঞ্চলে নতুন অবস্থান চিহ্নিত করতে হলুদ রঙের ব্লক ও সাইনবোর্ড বসাচ্ছিল। খুদারি বলেন, ‘তবে পুরো সীমানা চিহ্নিত করা হয়নি।

ফলে অনেক ফিলিস্তিনি জানেই না ঠিক কোথায় রয়েছে এই লাইন।’ এই প্রতিবেদক আরও বলেন, ‘শুজায়েয়ায় নতুন অগ্রসরতার ফলে আরও বেশি মানুষ তাদের ঘরে ফিরতে পারছে না। মানুষ বলছে, তাদের ধীরে ধীরে পশ্চিম দিকে ঠেলে এক খাঁচার মধ্যে আটকে ফেলা হচ্ছে।’ 

হলুদ রেখা লঙ্ঘনের এই খবর নিয়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। তবে পুরো গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা ফের তীব্র হয়ে উঠেছে এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় নতুন আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে আরও ৮৮ জন। 

চিকিৎসকরা জানান, খান ইউনিসের পূর্বে বানি সুউহেইলার এক বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় তিনজন নিহত হয়েছে, নিহতদের মধ্যে এক শিশু কন্যাও ছিল। আহত হয়েছে আরও ১৫ জন।

আল-জাজিরার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে ইসরায়েল অন্তত ৪০০ বার এই চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। ৩৬ বছর বয়সী বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি মোহাম্মদ হামদুন্না এএফপিকে বলেন, ‘প্রতিদিনই মানুষ মরছে, গোলাবর্ষণ থামে না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো তাঁবুতে থাকি। শহরগুলো ধ্বংসস্তূপ, সব সীমান্ত বন্ধ, জীবনের ন্যূনতম চাহিদাগুলোও নেই।’ 

গাজার তুফাহ এলাকার ৩৩ বছর বয়সী লিনা কুরাজও এএফপিকে জানান, যুদ্ধ পুরোপুরি আবার শুরু হয়ে যাওয়ার আতঙ্কে দিন কাটছে। একই এলাকার কুরাজ বলেন, ‘যখনই একটু আশা জাগে, তখনই গোলাবর্ষণ ফিরে আসে। এই দুঃস্বপ্নের শেষ কোথায়?’

Tags

Your Comment

You are replying to: .
captcha