ইসরায়েলের সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে গাজায় ৮০০ জনেরো বেশি খেলোয়াড় নিহত হয়েছেন।

৯ আগস্ট ২০২৫ - ২২:২৯

আহলে বাইত (আ.) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা (আবনা): ইসরায়েলের সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে গাজায় ৮০০ জনেরো বেশি খেলোয়াড় নিহত হয়েছেন। ধারাবাহিক বোমাবর্ষণ, চরম খাদ্য সংকট ও অবকাঠামো ধ্বংসের ফলে গাজার ক্রীড়াঙ্গন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের কর্মকর্তারা। 



প্যালেস্টাইনি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (পিএফএ) জানিয়েছে, গত ২২ মাসে গাজায় নিহত ৮০৮ ক্রীড়াবিদের মধ্যে ৪২১ জন ফুটবলার, যাদের প্রায় অর্ধেকই শিশু। সর্বশেষ প্রাণ হারিয়েছেন সাবেক জাতীয় দলের তারকা সুলেইমান আল-ওবায়েদ (৪১), যিনি বুধবার মানবিক সহায়তার জন্য অপেক্ষা করার সময় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন।

তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদুলো জানিয়েছে, গাজায় জন্ম নেওয়া ওবায়েদ ছিলেন পাঁচ সন্তানের জনক এবং ফিলিস্তিনের ফুটবলের ইতিহাসে অন্যতম উজ্জ্বল নাম। জাতীয় দলের হয়ে তিনি ২৪টি আনুষ্ঠানিক ম্যাচ খেলেছেন ও দুটি গোল করেছেন।

পিএফএ জানায়, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ফুটবলারদের মধ্যে নিহত বা অনাহারে মৃতের সংখ্যা ৪২১, যার মধ্যে ১০৩ জন শিশু।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৬১ হাজার ৩৬৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে অন্তত ২০০ জনের বেশি অবরোধের কারণে অনাহারে মারা গেছেন।

দ্বিতীয় বছরে প্রবেশ করা এই হামলা ফিলিস্তিনি ক্রীড়াঙ্গনকে প্রায় নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। বহু খেলোয়াড়, কোচ ও রেফারি নিহত হয়েছেন; ক্রীড়া অবকাঠামোর ৯০ শতাংশই ধ্বংস, পুড়িয়ে ফেলা বা গণকবর হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।

পিএফএ জানিয়েছে, গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি হামলায় আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে ২৮৮টি ক্রীড়া অবকাঠামো। এর মধ্যে স্টেডিয়াম, জিম ও ফুটবল ক্লাব রয়েছে। ধ্বংস হওয়া স্থাপনাগুলোর মধ্যে পিএফএর সদর দপ্তরও রয়েছে। তথ্য অনুযায়ী, ২৬৮টি ধ্বংস গাজায় এবং ২০টি পশ্চিম তীরে; এর অর্ধেকই সরাসরি ফুটবলের সঙ্গে সম্পর্কিত।

এদিকে, গাজায় তীব্র খাদ্য সংকট ও অপুষ্টি ক্রীড়াজীবন প্রায় সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দিয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, অবরোধের পর থেকে অন্তত ১৯৩ জন অনাহারে প্রাণ হারিয়েছেন।

জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলেছে, ইসরায়েলের অব্যাহত অবরোধে খাদ্য, জ্বালানি ও ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ থাকায় গাজায় ব্যাপক দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ক্রীড়াবিদসহ গাজার বাসিন্দারা খেলাধুলা ছেড়ে বেঁচে থাকার সংগ্রামে মনোযোগ দিচ্ছেন।

Tags

Your Comment

You are replying to: .
captcha