‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : ParsToday
মঙ্গলবার

৭ জানুয়ারী ২০২০

৭:২৮:৫৪ AM
1000120

সুইস রাষ্ট্রদূত তলব; মার্কিন সন্ত্রাসবাদের কঠোর প্রতিশোধ নেয়া হবে: ইরান

ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকির প্রতিবাদে তেহরানে নিযুক্ত মার্কিন স্বার্থ দেখাশোনাকারী সুইস রাষ্ট্রদূতকে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে পাঠানো হয়েছে।

(ABNA24.com) জেনারেল সোলাইমানিকে হত্যার কঠিন প্রতিশোধ নেয়া হবে বলে ইরান যে হুমকি দিয়েছে তার জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক টুইটার বার্তায় পাল্টা হুমকি দিয়ে বলেছেন, ইরান যদি মার্কিন স্বার্থে আঘাত হানে তাহলে আমেরিকাও ইরানের ৫২টি অবস্থানে হামলা চালাবে। এরপরই সুইস রাষ্ট্রদূতকে তলব করে ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি তাকে জানিয়েছেন, "প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য, হুমকি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং ট্রাম্পের এ আচরণ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।" ইরানের উপররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, "ইরানের জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী দেশটির সরকার উপযুক্ত সময় ও স্থানে জেনারেল সোলাইমানিকে হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার আইনগত অধিকার রাখে।"

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, গত তিন  বছরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একটি বৈশিষ্ট্য সবার চোখে পড়ার মতো। আর তা হচ্ছে তিনি অত্যন্ত অহংকারী, ঔদ্ধত্য ও অন্যদেরকে অপমান অপদস্থকারী। ট্রাম্প যেমন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে আহাম্মক বলে অভিহিত করেন তেমনি রাজতন্ত্র শাসিত আরব নেতাদেরকেও দুধ দেয়া গাভীর সঙ্গে তুলনা করেন। ট্রাম্প এমন এক ব্যক্তি যে কিনা নিজেকে সারা বিশ্বের নেতা বলে মনে করে। প্রকৃতপক্ষে, ট্রাম্প মানসিক ভারসাম্যহীন ও নীতি-নৈতিকতা বর্জিত এমন এক ব্যক্তি যার অপরাধী কর্মকাণ্ডের কোনো সীমা পরিসীমা নেই এবং তার কর্মকাণ্ড অন্য জাতিগুলোর জন্য এমনকি খোদ আমেরিকার স্বার্থকেও বিপদাপন্ন করতে পারে কিনা সে বিবেচনাও তিনি করেন না।

গত কয়েক বছরে দেখা গেছে আমেরিকা যেদেশেই পা বাড়িয়েছে সেখানেই নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করেছে।

এ প্রসঙ্গে আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়াসহ আরো অনেক দেশের কথা উল্লেখ করা যায়। তবে এসব আচরণ ও কর্মকাণ্ডের জন্য আমেরিকাকে অনেক চড়া মূল্য দিতে হবে এবং স্বেচ্ছাচারিতার পরিণতির জন্য ট্রাম্পকে অবশ্যই অপেক্ষা করতে হবে। এদিকে, চীন, রাশিয়া তুরস্কসহ প্রতিবেশী অন্য দেশের প্রতিনিধিদের তেহরানে একের পর এক বার্তা প্রেরণ, টেলিফোনে যোগাযোগ এবং কর্মকর্তাদের আসা-যাওয়া থেকে বোঝা যায় তারা ইরান-মার্কিন উত্তেজনায় চিন্তিত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে মার্কিন সন্ত্রাসবাদের পরিণতির ব্যাপারে সব দেশ উদ্বিগ্ন।

এ অবস্থায় ইরানে ট্রাম্পের হামলার হুমকিকে দু'দিক থেকে মূল্যায়ন করা যায়। প্রথমত, আমেরিকা এটা ভাল করেই বুঝতে পেরেছে যে তারা ক্ষমার অযোগ্য অনেক বড় অপরাধ করেছে এবং এর জন্য তাদেরকে চড়া মূল্য দিতে হবে। এরপরও ইরানের প্রতিশোধ নেয়ার ঘোষণার বিরুদ্ধে ট্রাম্প ইরানে হামলার হুমকি দিয়ে আরেকটি ধৃষ্টতা দেখিয়েছে। কারণ ইরান উপযুক্ত সময় ও স্থানে প্রতিশোধ নেবে। আর দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে, ইরানের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের হুমকি উস্কানিমূলক।

যাইহোক, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এমন এক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ২০২০ সালের কার্যক্রম শুরু করেছেন যার সমাপ্তি টানার ক্ষমতা তার নেই। জেনারেল সোলাইমানি সবসময় বলতেন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের মার্কিন দাবি ডাহা মিথ্যা। সোলাইমানির শাহাদাতে গোটা ইরাক ও ইরানের জনগণ আজ শোকাচ্ছন্ন। ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কুদস্‌ ব্রিগেডের কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলাইমানি এবং ইরাকের হাশদ আশ শাবি'র সেকেন্ড ইন কমান্ড আবু মাহদি আল মুহানদিসের রক্ত দুই দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাওয়াদ জারিফ বলেছেন, প্রতিরোধ সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদেরও অবসান ঘটবে পশ্চিম এশিয়া থেকে।

...........
340

(ABNA24.com)