‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : ParsToday
রবিবার

১৯ জানুয়ারী ২০২০

৯:৪৩:৫২ AM
1003601

১১ মার্কিন সেনা আহত

ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় মার্কিন সেনাদের ক্ষয়ক্ষতির খবর বের হতে শুরু করেছে

মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি'র কুদস ব্রিগেডের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলাইমানি শহীদ হওয়ার পর পাল্টা জবাবে ইরানও ইরাকে অবস্থিত মার্কিন আইন আল আসাদ সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমে নিজ সেনাদের প্রাণহানি বা ক্ষয়ক্ষতির খবর অস্বীকার করলেও এখন ধীরে ধীরে এ সংক্রান্ত নানা খবরাখবর প্রকাশিত হচ্ছে।

(ABNA24.com) নিউজ ওয়েবসাইট 'ডিফেন্স ওয়ান''র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আহত অন্তত ১১ মার্কিন সেনাকে চিকিৎসার জন্য কুয়েত ও জার্মানিতে স্থানান্তর করা হয়েছে। মার্কিন সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও বিষয়টি স্বীকার করা হয়েছে। মার্কিন সেনাবাহিনীর মুখপাত্র বিল এরিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, আহতদের কিছু সংখ্যককে জার্মানিতে ও কিছু সংখ্যককে কুয়েতের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। তাদের অধিকাংশই মাথায় ও ব্রেনে আঘাতপ্রাপ্ত। তবে বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, ইরাকের আইন আল আসাদ ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কোনো মার্কিন সেনা মারা যায়নি। তবে প্রচণ্ড বিস্ফোরণের কারণে সেখানে অবস্থিত সেনারা ব্রেনে আঘাত পেয়েছে।

বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে মার্কিন সেনা বাহিনী ও পেন্টাগন দাবি করছে তারা সবেমাত্র এ সংক্রান্ত খবর পেয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক স্পারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা বারবার বলে আসছিলেন ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কোনো সেনা হতাহত হয়নি। কিছুই হয়নি বলে মিথ্যা কথা বলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বহুবার তাদের মর্যাদা রক্ষার চেষ্টা করেছেন। কারণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম কোনো মার্কিন ঘাঁটিতে এতবড় হামলার ঘটনা ঘটেছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরেকটি কারণে ইরানের হামলাকে গুরুত্বহীনভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন যাতে ইরানের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত হতে না হয়। কারণ সম্ভাব্য ওই যুদ্ধের পরিণতির ব্যাপারে ওয়াশিংটন ও তার মিত্ররা ভালভাবেই অবহিত আছে। ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বহুবার ইরানের বিরুদ্ধে বাগাড়ম্বর করেছেন। ইরানের প্রতিশোধ নেয়ার ঘোষণাকে তিনি গুরুত্বহীন হিসেবে তুলে ধরে দাবি করেছিলেন কোনো মার্কিনী আহত হয়নি শুধুমাত্র কিছু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মাত্র।

ট্রাম্পের এসব কথাবার্তা থেকে বোঝা যায়, তিনি কেবল ফাঁকা বুলি আওড়ান এবং ইরানের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়ানোর সাহস তার নেই। এমনকি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আগে তিনি হুমকি দিয়েছিলেন ইরান হামলা চালালে তারাও ইরানের ৫২টি স্থানে হামলা চালাবে। মিথ্যাবাদী হিসেবে কুখ্যাতি অর্জনকারী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আবারো মিথ্যাবাদী হিসেবে সাব্যস্ত হলেন এবং এটা তার সরকার ও পেন্টাগনের জন্য নতুন করে কেলেঙ্কারি হয়ে দেখা দিয়েছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মার্কিন গণমাধ্যমগুলো ধীরে ধীরে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করছে এবং ধারণা করা হচ্ছে এ ধারা অব্যাহত থাকবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছিলেন ইরানি হামলায় কোনো হতাহত হয়নি। এ অবস্থায় ১১ জন সেনার আহত হওয়ার খবর প্রকাশিত হওয়া থেকে তার মিথ্যাচারিতার বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়েছে। আমেরিকার ভেতরে ও বাইরে এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। মার্কিন সেনাদের পরিবারের কেউ কেউ সিএনএনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে মার্কিন সেনাদের ভাগ্যে কি ঘটেছে সে সম্পর্কে তাদের কাছে কোনো তথ্য না থাকার কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এ থেকে বোঝা যায় মার্কিন সরকার নিজের মান ইজ্জত রক্ষা করতে গিয়ে হতাহতের বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে।

..........
340