আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): ইউরোপীয় সংসদের সাবেক এক সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল কাসেম সোলেইমানির হত্যাকাণ্ডকে যুদ্ধ অপরাধ বলে আখ্যায়িত করে বলেছেন, এ পদক্ষেপের মাধ্যমে গোটা প্রতিরোধ আন্দোলনকে ধ্বংস করতে চেয়েছে সাম্রাজ্যবাদীরা এবং শুধু ইরানকে আঘাত করার উদ্দেশ্যে তাদের ছিল না।
এক মাসে আগে সদস্য পদের মেয়াদ শেষ হওয়া জাভিয়ার কৌসো বলেন: ইরানের কুদস ব্রিগেডের এ জনপ্রিয় জেনারেলকে হত্যার মূল উদ্দেশ্য ছিল ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলনকে ধ্বংস করা এবং ইরানকে আঘাত করা তাদের মূল লক্ষ্য ছিল না।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশী সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সাবেক এ সদস্য লেবাননের আল-মায়াদিন চ্যানেলকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন: জেনারেল সোলেইমানি’র হত্যাকাণ্ড ছিল ‘প্রকাশ্য যুদ্ধ অপরাধ’।
কৌসো বলেন: তারা একজন অফিসিয়াল সেনা কমান্ডারকে চরম বিশ্বাসঘাতকতার সাথে ইরাকে হত্যা করেছে। তারা জানতো যে, রেড লাইন ক্রস করে ইরাকে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব। তারা এমন এক ব্যক্তিত্বকে হত্যা করেছে, সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে যার ভূমিকা কারো অজানা নয়।
তিনি আরও বলেন: সন্ত্রাসবাদের শিকার হয়ে চরম বিপর্যস্ত মানুষগুলোর কাছে জেনারেল সোলেইমানি ছিলেন অত্যন্ত প্রিয় এক ব্যক্তিত্ব। সিরিয়ায় সন্ত্রাসীদের উপস্থিতির গোড়ার দিকে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে তিনি সিরিয়া সরকারের পাশে দাঁড়ান।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সাবেক এ সদস্য বলেন: [এ ঘটনা আমাদেরকে] একটি মহাযুদ্ধের মুখে দাঁড় করিয়েছিল। এ বিষয়ে ইরানকে অভিনন্দন জানানো উচিত যে, তারা নিজেদের প্রতি নিয়ন্ত্রণ রেখেছে এবং ধৈর্যধারণ করেছে। অত্যন্ত সূক্ষ্ম হামলা চালিয়েছে; যা ছিল একটি সতর্কবার্তা। বাস্তবিক অর্থে ইরান বোঝাতে চেয়েছে যে, এ অঞ্চল থেকে মার্কিনী দখলদারদের বের করতে তারা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা হাতে নেবে।
কৌসো’র তার বক্তব্যে হিজবুল্লাহর বিষয়ে বলতে গিয়ে বলেন: লেবাননের হিজবুল্লাহ কোন সন্ত্রাসী গ্রুপ নয়। এমন কোন গ্রুপ নয় যে, দেশের বাইরেও তাদের তৎপরতা রয়েছে অথবা যুদ্ধের বাইরে অন্য কোন বিষয়ে তারা তৎপর। অতএব, আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় তারা বৈধ প্রতিরক্ষা তৎপরতার সাথে জড়িত। যেহেতু হিজবুল্লাহ [প্রয়োজনের ক্ষেত্রে] লেবানন সরকারের সহযোগিতাও করে, এর থেকে বোঝা যায় তারা বৈধ একটি দল।
প্রসঙ্গত, গত ৩ জানুয়ারি ভোরে বাগদাদ বিমানবন্দরে সন্ত্রাসী মার্কিন বাহিনী কাপুরুষোচিত হামলা চালিয়ে ইরানের কুদস ফোর্সের কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলেইমানি, পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সের সেকেন্ড ইন কমান্ড আবু মাহদি আল-মুহানদিস ও তাদের সাথে থাকা অপর ব্যক্তিদেরকে হত্যা করে।
এর প্রাথমিক জবাবে ইরান গত ৮ই জানুয়ারি ১৩ ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরাকে অবস্থিত মার্কিনীদের অন্যতম সুরক্ষিত ঘাঁটি আইন আল-আসাদে নিখুঁত হামলা চালায়। হামলায় ব্যবহৃত ইরানের একটি মিসাইলও ভূপাতিত করতে পারেনি মার্কিন বাহিনী। আইআরজিসির ছোঁড়া সবকটি মিসাইলই ঐ ঘাঁটিতে বিস্ফোরিত হয়।#/176