‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
বুধবার

২১ জুলাই ২০২১

১১:৪০:৩৯ AM
1162001

আফগানিস্তানে দায়েশের বিস্তারে মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনীর সহযোগিতার রহস্য

আফগানিস্তান বিষয়ক রুশ প্রতিনিধি জামির কাবুলোভ আফগানিস্তানে দায়েশ তথা আইএস বা ইসলামিক স্টেট নামে কথিত তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে মার্কিন সেনা ও তাদের মিত্র দেশগুলোর সশস্ত্র বাহিনীর সহযোগিতার সম্পর্ক থাকার খবর ফাঁস করে বলেছেন, আফগানিস্তানে এই সহযোগিতার বিষয়ে আমরা তথ্য পেয়েছি।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা) : উত্তর আফগানিস্তানে দায়েশের একটি জমায়েতের কথা উল্লেখ করে কাবুলোভ বলেছেন, এই সন্ত্রাসীদেরকে অজ্ঞাত ও পরিচয়-চিহ্নহীন কয়েকটি হেলিকপ্টারে চড়িয়ে  বাগরাম সেনা-ঘাঁটিতে নেয়া হয় এবং সেখান থেকে তারা নানা অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি আরও বলেছেন, এ ধরনের ঘটনা অনেক ঘটেছে এবং এ জাতীয় ঘটনাগুলোকে একসঙ্গে মিলিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করা হলে একটি সামগ্রিক ফল বেরিয়ে আসবে।

রুশ এই কর্মকর্তা এটাই বোঝাতে চেয়েছেন যে মার্কিন সরকার পরিকল্পিত কর্মসূচি ও ষড়যন্ত্রের আলোকে আফগানিস্তানে দায়েশকে সাহায্য-সহযোগিতা করে এসেছে।  আসলে আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা মোতায়েনের সুযোগে গত কয়েক বছরে আফগানিস্তানে দায়েশের তৎপরতা ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। মস্কো এর আগেও বার বার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিল, মধ্য এশিয়া অঞ্চলে পৌঁছার লক্ষ্যে এবং এ অঞ্চলে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টির জন্যেই  দায়েশ বা কথিত আইএস আফগানিস্তানে তৎপরতা জোরদার করেছে।  

মস্কো মধ্য এশিয়া অঞ্চলে তার মিত্র দেশগুলোতে দায়েশের বিস্তার ঠেকানোর জন্য নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। এসব পদক্ষেপের মধ্যে তাজিকিস্তান ও কিরগিজিস্তানে রুশ সেনা ঘাঁটিগুলোকে শক্তিশালী করেছে রাশিয়া। রুশ সূত্রগুলো বলছে, মার্কিন সরকার ও তার মিত্ররা নিজ নিজ স্বার্থ ও লক্ষ্য হাসিলের জন্য আফগানিস্তানে মোতায়েন দায়েশ বাহিনীর কাছে অস্ত্রসহ নানা ধরনের সাজ-সরঞ্জাম ও রসদ যুগিয়েছে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত হুমকি বাড়তে না দেয়ার লক্ষ্যে দায়েশের প্রতি এ ধরনের সহযোগিতার ধরন স্পষ্ট করার ও তা খুব দ্রুত বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছে মস্কো।

এর আগে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছিল আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চল দায়েশের লোকজনের আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। এই দেশটিতে দায়েশের উপস্থিতি জোরদারের মাধ্যমে ও তাদের সেখানে সহযোগিতা দেয়ার মাধ্যমে মার্কিন সরকার ভবিষ্যতে আবারও সন্ত্রাস দমনের অজুহাতে সেখানে নিজ সামরিক উপস্থিতির পথ প্রশস্ত করতে চায়।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভাও আফগানিস্তানে দায়েশের প্রতি মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনীর সহযোগিতার বিষয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, এইসব সহযোগিতার মধ্যে অজ্ঞাত পরিচয় হেলিকপ্টারের মাধ্যমে দায়েশ সেনাদের পরিবহন ও তাদেরকে প্রাণঘাতী অস্ত্র দেয়ার ঘটনাও রয়েছে।

রুশ বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান, রাশিয়া ও চীনের বিরুদ্ধে দায়েশকে ব্যবহার করতে চায় মার্কিন সরকার। আর এ জন্যই ওয়াশিংটন মধ্য এশিয়ায় ছড়িয়ে দিতে চায় এই সন্ত্রাসী বাহিনীকে।

বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বলছেন, সামাজিক দিক থেকে আফগানিস্তানে দায়েশের কোনো স্থান নেই। কিন্তু আফগানিস্তানে দায়েশের বিস্তার ঘটিয়ে মার্কিন সরকার চীনের প্রতিবেশী এই দেশ থেকে চীনকে বিতাড়িত করতে চায়।

মার্কিন সরকার সন্ত্রাস দমনের অজুহাত দেখিয়ে আফগানিস্তানে সেনা মোতায়েন করেছিল। কিন্তু দেশটিতে সন্ত্রাসী তৎপরতা এখন সন্ত্রাস-কবলিত দেশগুলোর তালিকার শীর্ষ পর্যায়ের মতই জোরদার হয়েছে। মার্কিন সরকার আফগানিস্তানে মোতায়েন তার সেনাদের ৯৫ শতাংশকেই সরিয়ে নিয়েছে। আর এ অবস্থায় দেশটিতে জোরদার হয়েছে তালেবানের তৎপরতা। তালেবানরা প্রায়ই নতুন নতুন এলাকা ও অঞ্চল দখল করছে। আর এ সুযোগে দায়েশও এই দেশটিতে  তার তৎপরতা বাড়িয়ে দিয়েছে। দায়েশ এ পর্যন্ত আফগানিস্তানে বহু সংখ্যক সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে শত শত নিরীহ ও নিরপরাধ বেসামরিক আফগান নারী পুরুষকে হত্যা করেছে। #

342/