‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
শনিবার

৩১ জুলাই ২০২১

৯:৫২:০৪ AM
1165030

শিল্পকারখানা খোলার ঘোষণায় ঢাকামুখী মানুষের উপচেপড়া ভিড়, দাবি শতভাগ টিকা

বাংলাদেশে ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় চলমান কঠোর লকডাউনের মেয়াদ বাড়াতে পরমর্শ দিয়েছে সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সে পরামর্শ উপেক্ষা করেই গতকাল শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক প্রজ্ঞাপন জারি করে আগামীকাল (রোববার) সকাল ৬টা থেকে দেশের সকল রপ্তানিমুখী শিল্প ও কলকারখানা খুলে দেবার সরকারি সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা) : ঈদুল আজহার পরদিন ২৩ জুলাই থেকে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত। কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে দেশের সব শিল্প-কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে শুরু থেকেই গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। শেষ পর্যন্ত তাদের দাবির কাছেই নতিস্বীকার করেছে সরকার। এ ক্ষেত্রে শ্রমিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং ছুটিতে থাকা শ্রমিকদের কর্মস্থলে ফেরার ভোগান্তির বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।

এদিকে, কঠোর লকডাউনের মধ্যে রবিবার থেকে রপ্তানিমুখী কারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের খবর পেয়ে কর্মস্থলে ফিরতে গত রাত থেকেই মহাসড়কে নেমেছে শ্রমিকদের ঢল। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় তারা ছোট ছোট যানে ভেঙ্গে ভেঙ্গে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে বা বৃষ্টি-বাদল উপেক্ষা করেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।

মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় এবং মুন্সিগঞ্জের মাওয়াতে একইভাবে ঢাকামুখী মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। শনিবার ভোর থেকে পদ্মানদীর উভয় স্থানে নৌপথে চলাচলকারী প্রতিটি ফেরিতে ছিল মানুষের গাদাগাদি করা ভিড়। ছিল না স্বাস্থ্য বিধি মানার বালাই। 

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক আবুল হোসাইন রেডিও তেহরানকে বলেন, কারখানা খুলে দেবার সাথে শ্রমিকদের কর্মস্থলে যাতায়াতের জন্য পরিবহন নিশ্চিত করতে হবে, তাদের শতভাগ টিকার আওটায় আনতে হবে এবং তাদের কর্মস্থল ও আবাসস্থলে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। 

দু’দিন আগেও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সরকারের সড়ক-সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলছেন, এখন ভহাবহ করোনা পরিস্থিতিতে জীবিকার চেয়ে জীবন রক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। না হলে ভয়াবহ পরিণতি হবে।

ওদিকে, বাংলাদেশের পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান জানিয়েছেন, আগামীকাল (১ আগস্ট) থেকে কারখানার আশপাশে বসবাসরত শ্রমিকদের নিয়েই কাজ শুরু হবে। আপাতত সীমিত আকারে কাজ চলবে। আমরা চাই না গ্রাম থেকে ঝুঁকি নিয়ে কোনো শ্রমিক কাজে যোগ দিক। যারা গ্রামে আছে, তারা ৫ তারিখের পরেই কাজে যোগ দেবে। এক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না।

এ ছাড়া জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনও জানিয়েছেন,  রবিবার থেকে পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া হলেও ৫ আগস্টের আগে ঢাকার বাইরের শ্রমিকদের পোশাক কারখানায় যোগ দেওয়ার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। এ ক্ষেত্রে শ্রমিকদের চাকরি চলে যাওয়া নিয়ে কোনও চিন্তা করতে হবে না।

শুক্রবার (৩০ জুলাই) রাতে একটি  টেলিভিশন অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের ‌অর্থনীতির কথাও ভাবতে হবে। রফতানিমুখী শিল্পের মধ্যে গার্মেন্টস অন্যতম। ৪০ থেকে ৫০ লাখ শ্রমিক এ খাতে কাজ করে। বাইরে থেকে অর্ডার নিতে হয়। অর্ডার বন্ধ হয়ে গেলে শিল্প ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। অসংখ্য মানুষ কাজ হারাবে। অর্থনীতিতে এর একটা প্রভাব পড়বে।’#

342/