‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
সোমবার

১৬ আগস্ট ২০২১

১১:৫৪:১৪ AM
1170122

'ভারতে প্রত্যেক বছর ১৪ আগস্ট বিভাজন বিভীষিকা স্মৃতি দিবস পালন করা হবে'

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ‘আগামী বছর থেকে প্রত্যেকবছর ১৪ আগস্ট ‘বিভাজন বিভীষিকা স্মৃতি দিবস’ পালন করা হবে। দেশ ভাগের সময়ে যে সমস্ত দেশবাসী অমানবিক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গেছেন, তাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতেই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।’ তিনি আজ (রোববার) স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লায় দেয়া বক্তব্যে ওই মন্তব্য করেন।

এরআগে প্রধানমন্ত্রী ওই ইস্যুতে বলেছিলেন, ‘দেশভাগের বেদনা কোনোদিন ভুলে যাওয়া যায় না। আমাদের লাখ লাখ ভাইবোনেরা অর্থহীন ঘৃণা আর হিংসার কারণে ছিন্নমূল হয়েছেন এবং প্রাণ হারিয়েছেন। দেশবাসীর সেই সংগ্রাম ও বেদনাকে স্মরণ করে এবার থেকে ১৪ আগস্ট দিনটিকে পালন করা হবে দেশভাগের যন্ত্রণার স্মরণ দিবস হিসেবে।’     

প্রধানমন্ত্রী আজ বলেন, ‘প্রতি বছর ১৪ আগস্ট দেশভাগ বিভীষিকা স্মৃতি দিবস হিসেবে পালিত হবে। আমরা স্বাধীনতা উদযাপন করি, কিন্তু দেশভাগের যন্ত্রণা এখনও ভারতের বুকে বিঁধছে। এটি গত শতাব্দীর অন্যতম বড় ট্র্যাজেডি। স্বাধীনতার পরে ওই মানুষগুলোকে দ্রুত ভুলে যাওয়া হয়েছিল। গতকালই ভারত একটি আবেগপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবার থেকে প্রতি বছর ১৪ আগস্ট দেশভাগ বিভীষিকা স্মৃতি দিবস হিসেবে স্মরণ করা হবে। যারা দেশভাগের সময় অমানবিক অবস্থার মধ্যে ছিল, অত্যাচার সহ্য করেছিল, সম্মানসহ শেষকৃত্যও ভাগ্যে জোটেনি। তাদের অবশ্যই আমাদের স্মৃতিতে বেঁচে থাকতে হবে। এই দিনটির  স্থিরকরণ প্রত্যেক ভারতীয়ের পক্ষ থেকে এই ধরনের লোকদের প্রতি সম্মানের সঙ্গে শ্রদ্ধার্ঘ্য।’

প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিং সূর্যেওয়ালা ওই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীকে টার্গেট করে কটাক্ষে বলেছেন, ‘গত ১৪ আগস্টেও পাকিস্তানকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। উত্তর প্রদেশে নির্বাচন আসতেই বিভাজনের কথা মনে পড়েছে। বাহ সাহেব!’

‘যদি নির্বাচন না হয়, তারা পাকিস্তানের প্রতি তাদের ভালোবাসা প্রকাশ করে। নির্বাচন আসার সাথে সাথে তারা ‘দেশভাগ’ এর আশ্রয়ে চলে যায়’ বলেও কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিং সূর্যেওয়ালা মন্তব্য করেছেন।

কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীকে টার্গেট করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করে প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

এদিকে আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে স্বাধীনতা সংগ্রামী মাতঙ্গিনী হাজরাকে অসমের বলে উল্লেখ করায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, ‘এটা মোদির দোষ না। কারণ তাঁরা আরএসএসের থেকে যে শিক্ষা পান, তাতে ভারতের সংস্কৃতি জানা সম্ভব নয়। তাঁরা তো একটাই জিনিস জানেন, তা হল সাম্প্রদায়িক বিভাজন। আর বাংলার সম্বন্ধে তো তাঁদের কোনও ধারণাই নেই।’ তৃণমূল এমপি শান্তনু সেনের মতে, ‘এটা নতুন কিছু নয়। এর আগেও বিজেপি নেতারা মনীষীদের নিয়ে ভুল মন্তব্য করেছিলেন।’  

বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এমপি অবশ্য সাফাই দিয়ে বলেছেন, ‘এটা ছোটখাটো ভুল। ভারতবর্ষে হাজার হাজার এ রকম মহাপুরুষ এসেছেন। তাঁরা দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন। কোনও কারণে ছোটখাটো ভুল হতেই পারে। তাই এটাকে বড় করে দেখার দরকার নেই।’ 

তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ টুইটার বার্তায় বলেছেন,   ‘মাতঙ্গিনী হাজরা অসমের? প্রধানমন্ত্রী কী পাগল হলেন? নিজে জানেন না। আবেগ নেই। অন্যের লিখে দেওয়া ভাষণ পড়ে নাটক করতে গেলে এই হয়। এটা বাংলার প্রতি অপমান। প্রধানমন্ত্রী ক্ষমা চান।’

প্রসঙ্গত, মাতঙ্গিনী হাজরা ১৯৪২ সালে 'ভারত ছাড়ো' আন্দোলনে যোগ দিয়ে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতীয় পুলিশের গুলিতে নিহত হন। তিনি পশ্চিমবঙ্গের তমলুকের বাসিন্দা ছিলেন। 'গান্ধিবুড়ি' হিসেবেও পরিচিত ছিলেন মাতঙ্গিনী হাজরা। #     

342/