‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : parstoday
বুধবার

২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১

১:১৩:৫১ PM
1184263

অবিলম্বে পদত্যাগ করুন, অন্যথায় পালাবার পথ পাবেন না: বিএনপি মহাসচিব

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তারেক রহমানের তত্ত্বাবধায়নে সংগঠনকে সুসংগঠিত করা হচ্ছে। দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হচ্ছে। আর সেজন্যই অবৈধভাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের হৃদ-কম্পন শুরু হয়েছে। তাই মরিয়া হয়ে তারা বিএনপির ওপর চড়াও হচ্ছে, ঘরে ঘরে গিয়ে আক্রমণ, পুলিশি হয়রানি-তল্লাশি চলছে।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা) : আজ (বুধবার) জাতীয় প্রেস ক্লাবে মিলনায়তনে বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ মহানগর আয়োজিত করোনা ও ডেঙ্গু হেল্প সেন্টারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, একদলীয় শাসনব্যবস্থা তৈরি করতে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে, সুচারুভাবে সংবিধান কেটেকুটে তারা নিজেদের মতো করে সাজিয়ে নিয়েছে। এর পর সমস্ত প্রশাসন, বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবাইকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসে দলীয়করণ করেছে। গণমাধ্যমকেও তারা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১৯৭১ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ঘোষণার মধ্য দিয়ে আমরা যে যুদ্ধ করেছিলাম, সেই যুদ্ধের লক্ষ্য ছিল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা; জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়ার। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগের হাতে তা বিনষ্ট হয়েছে। গত ১৪ বছর ক্ষমতায় থেকে তারা বাংলাদেশের সমস্ত অর্জনকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বাংলাদেশকে তারা একটি অকার্যকর ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করছে।

মির্জা ফখরুল উল্লেখ করেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ নয় বছর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারকে পরাজিত করে দেশের জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এখনো গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করতে গিয়ে তিনি গৃহবন্দি হয়ে আছেন। মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে বেআইনিভাবে সাজা দেওয়া হয়েছে। আজ আমাদের সারাদেশে বিএনপির ৩৫ লক্ষাধিক মানুষের ওপর মামলা রয়েছে। আমাদের পাঁচ শতাধিক মানুষকে গুম করা হয়েছে। আমাদের নেতাকর্মীদের থানায় ধরে নিয়ে তাদের পায়ে গুলি করা হয়েছে, নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা কিন্তু ভুলে যাইনি সেসব কথা।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেয়ালের লেখাগুলো পড়ুন, মানুষের মনের কথা বোঝার চেষ্টা করুন। এখনো সময় আছে, পদত্যাগ করেন আপনাদের ব্যর্থতার জন্য। সংবিধানকে লঙ্ঘন করে আপনারা যে অন্যায় করেছেন সেটার জন্য পদত্যাগ করুন। আপনারা জনগণের ভোট আগের রাতে নিয়ে যে অন্যায় করেছেন সেখান থেকে যদি পরিত্রাণ পেতে চান তাহলে অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। অন্যথায় পালাবার পথ খুঁজে পাবেন না।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, এই মুহূর্তে দরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন করবেন, আমরা তা মানি না। এই সরকারকে রেখে কোনো নির্বাচন করা যাবে না। সুতরাং জনগণের দাবি মেনে নিয়ে পদত্যাগ করুন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন, নিজেদের ভালো রাখুন। নইলে দেশে যে এক পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, তার দায়-দায়িত্ব আপনারা বহন করবেন।

এদিকে, আজ দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত ভিন্ন এক আলোচনা সভায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে ভয়ংকর দুঃস্বপ্নের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে ১১ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়ে গেল সেটা নিয়ে সরকার নীরব।

তিনি বলেন, দেশে একদিকে শেখ হাসিনার জন্মদিনের জৌলুস চলছে। অন্যদিকে দেশে নারীর ক্ষমতায়ন হ্রাস পেয়েছে। ওবায়দুল কাদের বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নাকি ব্র্যান্ড? তো প্রধানমন্ত্রী কিসের ব্র্যান্ড? তিনি তো টাকা পাচার করার ব্র্যান্ড, সাহেদ-সাবরিনার উত্থান আর গুম খুনের ব্র্যান্ড? তিনি তো গণতন্ত্র হত্যাকারী ব্র্যান্ড। দিনের ভোট নিশিরাতে করার ব্র্যান্ড। এটাতো ওবায়দুল কাদেরের বলা উচিত ছিল।

রিজভী বলেন, দেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হলে একটি গ্রহণযোগ্য সরকার থাকতে হবে। বর্তমান সরকারের বিদায়ের মধ্য দিয়ে যে নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় নির্বাচন কমিশন হবে সেই কমিশনের অধীনেই কেবল দেশের মানুষের কাঙ্ক্ষিত নির্বাচন হতে পারে।#

342/