‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : ABNA
বুধবার

৩ নভেম্বর ২০২১

৩:৩৫:২৩ PM
1195106

শত্রুর ষড়যন্ত্রের বিপরীতে সতর্ক থাকতে হবে: আয়াতুল্লাহ রামাজানী

উলামায়ে হিন্দে’র মহাসচিব হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীন ‘সাইয়্যেদ কালবে জাওয়াদ নাকাভি’র সাথে সাক্ষাতে আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থার মহাসচিব বলেছেন: আহলে বাইত (আ.)-এর মাযহাবের পরিচয় পরিপূর্ণরূপে তুলে ধরতে হবে। যদি তাঁদের কালাম ও কথার সৌন্দর্য্য সম্পর্কে মানুষ অবগত হয় এবং সেগুলো অনুধাবন করতে পারে তাহলে সুনিশ্চিতভাবে তারা তাঁদেরকে অনুসরণ করবে। ইমাম রেজা (আ.) তাঁর এক সাথীর উদ্দেশ্যে বলেন: ((رحم اللَّه عبدا احیا امرنا)) ‘মহান আল্লাহর রহমত ঐ বান্দার উপর বর্ষিত হোক যে আমাদের বিষয়গুলোকে জীবিত করে’।

হলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): উলামায়ে হিন্দে’র মহাসচিব হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীন ‘সাইয়্যেদ কালবে জাওয়াদ নাকাভি’ আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থায় উপস্থিত হয়ে আয়াতুল্লাহ রেজা রামাজানী’র সাথে সাক্ষাত ও মতবিনিময় করেছেন।

আয়াতুল্লাহ রামাজানী বলেন: সবদিক থেকেই ভারত গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ। বিভিন্ন ধর্ম ও মাযহাবের লোকজন এ ভূখণ্ডে বসবাস করে। এ কারণে এ ভূখণ্ডের বিষয়ে অধিক অধ্যয়ন ও গবেষণা প্রয়োজন।

ইসলাম ধর্মে ভারতীয় আলেমদের অবদান সম্পর্কে তিনি বলেন: ‘মীর হামেদ হুসাইন’-এর মত মহান ব্যক্তিবর্গ ও উলামা’র ইসলাম ধর্মে বিশেষ অবদান রয়েছে। ইরান ও ভারতের মধ্যকার সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বহুদিনের।

তিনি বলেন: মুসলিম দেশসমূহের মধ্যকার সম্পর্কের মাঝে বড় বাধা হল ঔপনিবেশ। আহলে বাইত (আ.)-এর মাযহাবের পরিচয় পরিপূর্ণরূপে তুলে ধরতে হবে। যদি তাঁদের কালাম ও কথার সৌন্দর্য্য সম্পর্কে মানুষ অবগত হয় এবং সেগুলো অনুধাবন করতে পারে তাহলে সুনিশ্চিতভাবে তারা তাঁদেরকে অনুসরণ করবে। ইমাম রেজা (আ.) তাঁর এক সাথীর উদ্দেশ্যে বলেন: ((رحم اللَّه عبدا احیا امرنا)) ‘মহান আল্লাহর রহমত ঐ বান্দার উপর বর্ষিত হোক যে আমাদের বিষয়গুলোকে জীবিত করে’।

তার সংযোজন: ইসলামের সূক্ষ্মতা, এর পরিপূর্ণতা এবং ব্যাপকতার প্রতি তৃষ্ণার্ত মানবসমাজ। যদি ইসলামকে সঠিকভাবে উপস্থাপন ও পরিচয় করানো সম্ভব হয় তাহলে ইসলামের প্রতি আকর্ষণ বাড়বে এবং জনগণ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করবে। আহলে বাইত (আ.)-এর মাযহাবের প্রচার-প্রসারেও আলেমগণের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্ববহ। কেননা এই আলেমরা নিজেদেরকে ধর্ম ও মাযহাবের জন্য উৎসর্গ করেছেন।

ইসলাম ধর্মের অন্যতম শিক্ষা হল আগ্রাসন ও সীমালঙ্ঘনের বিপরীতে দৃঢ় থাকা এবং প্রতিরোধ করা। আহলে বাইত (আ.) আমাদেরকে এ শিক্ষা প্রদান করেছেন যে, কোন অবস্থাতেই আধিপত্ব বিস্তারকারীদের আধিপত্ব যেন বিস্তৃত না হয় এবং নিরাপরাধ মানুষের রক্ত যেন না ঝরে।

হাওযা ইলমিয়া’র প্রবীণ এ শিক্ষক ভার্চুয়াল জগতে আহলে বাইত (আ.)-এর সংস্কৃতি প্রচার-প্রসারের প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেন: ভারতের জনসংখ্যার বিরাট একটি অংশ যুবসমাজ, এ কারণে তাদের দ্বীনি তরবিয়্যতের বিষয়টিকে আরো গুরুত্ব দিতে হবে। মিম্বর থেকে বক্তৃতা ও মাসায়েব পাঠের পাশাপাশি অবশ্যই সাইবার স্পেসে তৎপরত হতে হবে এবং মিম্বরের তৎপরতার পরিধি বাড়াতে হবে।

মজলিসে উলামায়ে হিন্দে’র মহাসচিব হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীন ‘সাইয়্যেদ কালবে জাওয়াদ নাকাভি’ বলেন: ভারত বড় একটি দেশ; এর শহরগুলির দূরত্ব পরস্পর থেকে অনেক বেশী। আগে এক শহর থেকে আরেক শহরে যোগাযোগ কঠিন হলেও বর্তমানেইন্টারনেটের বদৌলতে তা সহজ হয়ে গেছে।

তিনি বলেন: মিম্বরে বসা কিছু কিছু বক্তা বিচ্ছেদ ও বিভেদের কারণ হয় এমন সব বিষয় উত্থাপন করেন। তারা অসত্য বিষয়গুলোকে উত্থাপনের মাধ্যমে ভারতে কঠিন সাম্প্রদায়িকতার জন্ম দিচ্ছেন। আর শত্রুরাও এ সুযোগের অপব্যবহার করছে।

আয়াতুল্লাহ রামাজানি বলেন: আলেম ও মিম্বরের বক্তাদের উচিত গবেষণা ও স্ট্যাডির মাধ্যমে শরীয়তকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা। আলেমদের একটি দল আহলে বাইত (আ.)-এর প্রতি ভালবাসার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করলেও তাঁদেরকে অনুসরণ থেকে বিরত থাকেন। অথচ ঈমান ও ভালবাসা এ দু’টি বিষয়কে পরস্পরের পাশেই থাকতে হবে। মিম্বরগুলো থেকে আহলে বাইত (আ.)-এর মাআরেফ বর্ণনা করতে হবে এবং জনগণের সামনে এ বিষয়টিও স্পষ্ট করতে হবে যে, তাঁরা মূলতঃ ঈমান ও আমলের প্রতি গুরুত্বারোপ করতেন। আহলে বাইত (আ.) যে মৌলিক বিষয়গুলোর কথা বলতেন মিম্বরে বসা আলেমদের উচিত সে বিষয়গুলোর উপর দৃঢ় থাকা যাতে বিভ্রান্তি-বিচ্যুতি এবং বাড়বাড়ি-ছাড়াছাড়ি’র মোকাবিলা করা সম্ভব হয়।

মুসলমানদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টিতে শত্রুদের ভূমিকার বিষয়ে আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থার মহাসচিব বলেন: ব্রিটেন ইসলামি দেশগুলোতে নিজের এজেন্ট এবং ঐ সকল বক্তাদেরকে ব্যবহার করে থাকে যারা আলেম নয়, তাদের প্রধান উদ্দেশ্যে মুসলমানদের মাঝে ফাঁটল ধরানো। বিভেদ সৃষ্টি করতে বুড়ো এ ঔপনিবেশিকের নিজস্ব পরিকল্পনা রয়েছে এবং তারা সর্বত্র অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে। এক্ষেত্রে আলেমগণের উচিত এ ধরণের ষড়যন্ত্রের বিপরীতে সতর্ক থাকা।

ভারত ও পাকিস্তানে শিয়া ও আহলে সুন্নতের মাঝে বিভেদ সৃষ্টির মিশন বাস্তবায়নে কেউ কেউ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে আর্থিক সহযোগিতা পায় বলে মন্তব্য করেন জনাব সাইয়্যেদ কালবে জাওয়াদ নাকাভি।#176