‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
শনিবার

৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২

১:১৯:১৪ PM
1226099

কাতারকে ন্যাটো বহির্ভূত মিত্র হিসেবে ঘোষণা দিতে চান বাইডেন

কাতারের আমির শেইখ তামিম বিন হামাদ আলে সানির ওয়াশিংটন সফরের একই সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কংগ্রেসে লেখা এক চিঠিতে বলেছেন, তিনি কাতারকে আমেরিকার ন্যাটো বহির্ভূত মিত্র হিসেবে ঘোষণা দিতে চান।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা) : আমেরিকার এ ধরনের মিত্ররা ন্যাটো জোটের অংশীদার না হলেও ওয়াশিংটনের কৌশলগত সামরিক অংশীদার হিসেবে বিবেচিত হয়। এ ধরনের মিত্ররা সামরিক সহায়তা ছাড়াও আর্থিক সহায়তাও পেয়ে থাকে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, কাতারকে ন্যাটো বহির্ভূত  মার্কিন মিত্র হিসেবে সম্ভাব্য ঘোষণার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। প্রথম কারণ হচ্ছে, পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন স্বার্থ রক্ষায় আমেরিকার কাছে কাতারের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। কাতার এখন পর্যন্ত ওয়াশিংটনের স্বার্থ বিরোধী কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স লিখেছে, অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে, কাতার হয়তো এ অঞ্চলে মার্কিন স্বার্থ দেখাশোনার জন্য তাদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করবে।

দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, আরব দেশগুলোর মধ্যে কাতার অত্যন্ত ধনী ও বিপুল সম্পদের অধিকারী একটি দেশ। তাই আমেরিকার কাছ থেকে অর্থ সহায়তার কোনো প্রয়োজন কাতারের নেই এবং অনায়াসে তারা বন্ধু দেশ হিসেবে আমেরিকার কাছ থেকে কম মূল্যে অস্ত্র কিনতে পারে। এ কারণে ক্ষুদ্র ও ধনী এ আরব দেশটি অস্ত্রের জন্য এশিয়ার কোনো দেশের কাছে শরণাপন্ন হয় না। এ ছাড়া বাইরের কোনো বৃহৎ শক্তির সমর্থনেরও প্রয়োজন রয়েছে কাতারের। এ কারণে কাতারে রয়েছে আমেরিকার সর্ববৃহৎ বিমান ঘাঁটি। এ অবস্থায় মার্কিন  প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কাতারকে ন্যাটো বহির্ভুত মিত্রের যে মর্যাদা দিতে যাচ্ছেন তা অনেক তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা কেননা এর মাধ্যমে আমেরিকা চায় কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ করতে।

তৃতীয় কারণ হচ্ছে, পশ্চিম এশিয়ার ঘটনাবলীতে কাতারের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় দেশটি ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। পররাষ্ট্র ক্ষেত্রেও কাতারের বলিষ্ঠ ভূমিকা রয়েছে। এ ছাড়া ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতার প্রতিও কাতারের সমর্থন রয়েছে। তা ছাড়া আফগানিস্তান সংকট সমাধান এবং অন্যান্য সংকটের বিষয়ে আয়োজিত বৈঠকগুলো কাতারেই অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

এ অবস্থায় কাতারকে ন্যাটো বাহির্ভুত মিত্রের মর্যাদা দিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেন কাতারের এ শক্তিশালী অবস্থানকে ওয়াশিংটনের স্বার্থে ব্যবহার করতে চাইছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। কংগ্রেসকে দেয়া চিঠিতে বাইডেন বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন কর্মকাণ্ডের প্রতি কাতারের সমর্থন লাভ এবং দু'দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বিস্তারের লক্ষ্য নিয়েই এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

আরেকটি বিষয় হচ্ছে কাতারের ব্যাপারে আমেরিকার এ সিদ্ধান্তের ফলে সৌদি আরব কার্যত কোণঠাসা হয়ে পড়তে পারে। সৌদি আরবই হচ্ছে এখন পর্যন্ত এ অঞ্চলে আমেরিকার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ আরব মিত্র হিসেবে পরিচিত। কিন্তু বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর সৌদি-মার্কিন সম্পর্কে অনেকটাই পরিবর্তন এসেছে। যাইহোক, আমেরিকা আসলে কি করতে চায় সেটাই এখন দেখার বিষয়। 

342/