‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
বৃহস্পতিবার

১৭ নভেম্বর ২০২২

৫:৪৬:২৫ PM
1324008

'রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর বিজয়ের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ"

গতকাল বুধবার ঊর্দ্ধতন মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা ঘোষণা করেছেন যে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের সামরিক বিজয়ের সম্ভাবনা কম এবং ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর প্রতি ওয়াশিংটনের সমর্থন অব্যাহত রয়েছে।

মার্কিন জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের প্রধান জেনারেল মার্ক মিলি বলেছেন: "ইউক্রেন রাশিয়াকে তার সমস্ত অঞ্চল ছেড়ে দিতে বাধ্য করার সম্ভাবনা কম। তিনি আরো বলেন, ইউক্রেনের সামরিক বিজয়ের সম্ভাবনা, সমস্ত ইউক্রেন থেকে রুশ বাহিনীকে বিতাড়িত করা এবং খুব শিগগিরি এসব কাজে সফল হওয়ার সম্ভাবনা সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে তেমন আশার আলো দেখা যাচ্ছে না।" তবে মার্কিন জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ একইসঙ্গে জোর দিয়ে বলেন, "ইউক্রেন তার প্রতিরোধ অব্যাহত রাখবে  এবং ইউক্রেন পিছিয়ে যাবে না।"

রাশিয়ার ওপর ইউক্রেনের সামরিক বিজয়ের ক্ষীণ সম্ভাবনা এবং মস্কো যে অঞ্চলগুলো রাশিয়ার ভূখণ্ডের সাথে যুক্ত করেছে সেগুলিকে মুক্ত করার বিষয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে মার্কিন সামরিক কর্মকর্তার স্বীকারোক্তি থেকে রাশিয়ার প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈরী দৃষ্টিভঙ্গি এবং ইউক্রেনে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ অব্যাহত রাখতে দেশটির সেনাবাহিনীর জন্য সব ধরনের অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে ওয়াশিংটনের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যের প্রতিই ইঙ্গিত দিচ্ছে। ইউক্রেন সংকটের শুরু থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভকে আর্থিক, সামরিক এবং কূটনৈতিক সমর্থন দেয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। অন্যদিকে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই বাইডেন প্রশাসন ইউক্রেনকে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ও সামরিক সহায়তা দিয়েছে। 

মার্কিন কংগ্রেস ইউক্রেনকে ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক এবং মানবিক সহায়তা দেয়ার আইন অনুমোদন করেছে, যা অবশ্যই কিয়েভ সরকারকে ভেঙে ভেঙে এবং ধীরে ধীরে প্রদান করা হবে যার মধ্যে সর্বশেষটি ছিল ১২ বিলিয়ন ডলারের অনুমোদন। এছাড়া ইউক্রেনের জন্য ৪০ বিলিয়ন ডলারের নতুন আর্থিক এবং অস্ত্র সহায়তা এখনও মার্কিন কংগ্রেসের আলোচ্যসূচিতে রয়েছে।

আসলে, ওয়াশিংটন কিয়েভের জন্য বিশাল আকারে মানবিক ও অবকাঠামোগত খরচ সত্ত্বেও ইউক্রেন যুদ্ধের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে চায়। এ প্রসঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন যে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার জন্য যতদিন সময় লাগবে ততদিন পর্যন্ত ওয়াশিংটন ইউক্রেনকে সমর্থন করবে। এছাড়া শীর্ষ মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা আরো বলেছেন যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার জন্য কখন এবং কীভাবে মস্কোর সাথে আলোচনা করতে হবে তা সর্ম্পর্ণভাবেই কিয়েভের উপর নির্ভর করছে। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন এই প্রসঙ্গে বলেছেন: আমেরিকা ইউক্রেনকে সমর্থন করবে যতদিন সময় লাগবে।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধের ফ্রন্টে কিছু সামরিক অগ্রগতি যেমন খেরসন শহর থেকে রুশ সেনাবাহিনীর প্রত্যাহার সত্ত্বেও ক্রেমলিন এখনও বর্তমান যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য মস্কোর দৃঢ় সংকল্পের ঘোষণা দিয়েছে। রুশ প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সম্প্রতি বলেছেন যে তাদের লক্ষ্য অর্জনের পরেও ইউক্রেনে সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকতে পারে। পেসকভ আরো বলেছেন, ইউক্রেনে সামরিক অভিযান তাদের লক্ষ্য অর্জনের পরেই সমাপ্তি ঘোষণা করা হবে। তিনি বলেন,  অবশ্যই শান্তি আলোচনার মাধ্যমে এসব লক্ষ্য অর্জন করা যেতে পারে কিন্তু কিয়েভের  একরোখা অবস্থানের কারণে শান্তি আলোচনা সম্ভব নয়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বারবার বলে আসছেন যে তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেন যুদ্ধে জিততে চান এবং এই কারণে তিনি কিয়েভে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র পাঠিয়েছেন এবং তা   অব্যাহত রেখেছেন। ফলে ইউক্রেন যুদ্ধের পরিধি বাড়ানো এবং সেখানে বিপর্যয়কর পরিণতির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করা উচিত। আমেরিকার এসব পদক্ষেপ রাশিয়া এবং ন্যাটোর মধ্যে সরাসরি সংঘর্ষের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলবে এবং একটি বড় যুদ্ধের দিকে ক্রমশ এগিয়ে যাবে।#

342/