‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
শুক্রবার

১৮ নভেম্বর ২০২২

৪:০৩:৪৭ PM
1324253

সৌদি যুবরাজের দায়মুক্তি বাইডেন সরকারের আরো এক লজ্জাজনক কলঙ্ক!

মার্কিন সরকারের বিচারবিভাগ প্রতিবাদী সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগচি হত্যার দায় হতে সৌদি যুবরাজকে মুক্ত রাখার রায় দিয়েছে।

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে যাওয়ার পর খাশোগচি'র নিহত হওয়ার ঘটনায় সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের ফেডারেল আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন তার বাগদত্তা খাদিজা চেঙ্গিজ ও আরব বিশ্বের গণতন্ত্র নামের একটি সংস্থা। 

সংশ্লিষ্ট বিচারক গত রাতে (১৭ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার) মার্কিন সরকারকে জানিয়েছেন বিন সালমান সৌদি সরকারের উচ্চ-পদস্থ কর্মকর্তা বা প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় তাকে ওই মামলা হতে নিষ্কৃতি দিতে বিন সালমানের আইনজীবীর আবেদনের প্রেক্ষাপটে ওই আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে।  আর হোয়াইট হাউজও এ বিষয়টি মেনে নিয়েছে।

বিচারক প্রথমে মামলার দায় থেকে বিন সালমানকে মুক্তি দেয়ার বিষয়ে মার্কিন সরকারের মতামত বা পরামর্শ চান। মার্কিন সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে বিন সালমানের উকিলের আবেদনের উত্তর দেয়াটা বাধ্যতামূলক ছিল না। তাই এ বিষয়ে সরকার নিরব থাকতে পারত। কিন্তু বিচারক অবশেষে মামলার দায় থেকে বিন সালমানকে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং মার্কিন সরকারও তা মেনে নিয়েছে!

এ প্রসঙ্গে খাদিজা চেঙ্গিজ টুইটারে লিখেছেন, 'আজ আবারও জামালের মৃত্যু ঘটল। আমরা ভেবেছিলাম আমেরিকায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার সামান্য আলো রয়েছে, কিন্তু আবারও টাকাই প্রাধান্য পেল! এটাই হচ্ছে বর্তমান বিশ্ব যা আমি ও জামাল খাশোগচি জানতাম না!' 

জামাল খাশোগচি তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে গিয়েছিলেন ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে। সেখানে সৌদি নিরাপত্তা বাহিনী যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমানের নির্দেশে তাকে হত্যা করা হয় এবং এরপর তারা খাশোগচির দেহকে করাত দিয়ে কেটে টুকরো টুকরো করে! মার্কিন সরকার বিষয়টি জানার পরও যুবরাজের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি আজও এবং অবশেষে আদালতের পরামর্শমূলক রায়ের ভিত্তিতে তাকে ওই নৃশংস ও পাশবিক হত্যার দায় থেকে মুক্তি দিয়েছে! অথচ সৌদি যুবরাজ যে খাশোগচি হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত তথা তার নির্দেশেই যে এই সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ  তা উল্লেখ করেছে। 

বাইডেন সরকার তার নির্বাচনী ওয়াদায় সৌদি আরবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রিয়াদ-ওয়াশিংটন সম্পর্কের পুনর্মূল্যায়ন করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের কারণে সৌদি সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনে বিশ্বের সবচেয়ে কুখ্যাত সরকারগুলোর অন্যতম হওয়া সত্ত্বেও এই সরকারের বিষয়ে নীতি পরিবর্তন করছে না কথিত মানবাধিকারবাদী মার্কিন সরকার। অথচ মার্কিন সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভুয়া অভিযোগ তুলে ইরানসহ স্বাধীনচেতা দেশগুলোর বিরুদ্ধে নানা পদক্ষেপ নিয়ে আসছে!

ধারণা করা হচ্ছে খাশোগচি হত্যার আইনি দায় থেকে সৌদি যুবরাজকে মুক্ত করার পদক্ষেপের বিনিময়ে ওয়াশিংটন রিয়াদ থেকে আবারও অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামরিক বিষয়ে বিপুল সুবিধা হাতিয়ে নেবে।

মার্কিন সরকার যে মানবাধিকার লঙ্ঘনকে কোনো গুরুত্ব দেয় না তার আরেক বাস্তব প্রমাণ হল নিরপরাধ শিশু ও নারী হত্যাসহ সব ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনে বিশ্বে সবচেয়ে কুখ্যাত দখলদার ইহুদিবাদী সরকারের প্রতি ওয়াশিংটনের সর্বাত্মক অব্যাহত সহায়তা। জাপান, ভিয়েতনাম, কোরিয়া, আফগানিস্তান, ইরান, ইরাক, সিরিয়া, কিউবা ও ভেনিজুয়েলাসহ বিশ্বের বহু দেশে গণহত্যাসহ মানবাধিকার লংঘনের নানা ধরনের রেকর্ডধারী মার্কিন সরকারগুলো গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে কেবল হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতেই অভ্যস্ত। #