‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
বুধবার

২৮ ডিসেম্বর ২০২২

৫:৫১:০৩ PM
1334103

আঞ্চলিক শান্তি রক্ষায় ইরান-ওমানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের গুরুত্ব

পারস্য উপসাগরের আরব দেশগুলোর মধ্যে ওমান এমন একটি দেশ যারা সবসময় ইরানের সাথে স্থিতিশীল ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। এমনকি আঞ্চলিক নানা সংকট নিরসনে মধ্যস্থতার ভূমিকাও পালন করছে ওমান।

কৌশলগত হরমুজ প্রণালীতে উভয় দেশের অবস্থান এবং অভিন্ন সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বন্ধনের কারণে বহু প্রাচীনকাল থেকেই ইরান ও ওমানের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রয়েছে। ১৯৭১ সালের ২৬ আগস্ট ইরান ও ওমানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। অর্থাৎ ইরানে ইসলামি বিপ্লব বিজয়ের আগে থেকেই এবং ১৯৭৯ সালে বিপ্লবের পরও এই দুই দেশের সম্পর্ক সবসময় ঘনিষ্ঠ ছিল। এমন কোনো বিষয় কখনো সামনে আসেনি যাতে এ দুদেশের সম্পর্কে কোনো সমস্যা তৈরি হয়।

১৯৭২ সালে ওমানের জোফার যুদ্ধে বিচ্ছিন্নতাকামী গোষ্ঠীকে মোকাবেলায় ওমানের সুলতান কাবুসকে সাহায্যের জন্য ইরানের তৎকালীন সরকার ওমানে সৈন্য পাঠিয়েছিল। ইরানের এ পদক্ষেপের কারণে সে সময় ওমানের ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষা পেয়েছিল। জোফার যুদ্ধে ইরানি সেনাবাহিনীর সামরিক অভিযান ওমান রাজ্যের পক্ষে অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করেছিল এবং বিরোধীদের দমনে ভূমিকা রেখেছিল। এ কারণে সুলতান কাবুস মনে করতেন তার ক্ষমতা টিকে থাকার জন্য তিনি ইরানের কাছে ঋণী। যদিও ইরানের তৎকালীন সরকার আমেরিকা ও ব্রিটেনের সহযোগিতায় ওমানের পক্ষে এ পদক্ষেপ নিয়েছিল এবং সেনা অভিযান চালাতে গিয়ে ইরানের সামরিক বাহিনীর জান মালের ক্ষতি হয়েছিল কিন্তু ওমানের সরকার ও জনগণের কাছে ইরানের সেনাবাহিনী সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছিল।

এরপর থেকে ওমান সবসময়ই বৃহৎ প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সুসম্পর্কের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে এবং ইরানসহ প্রতিবেশী সব দেশের সাথে স্থিতিশীল সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। এরই ভিত্তিতে ইরাক-ইরান যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ওমান তেহরানের সঙ্গে আরো ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী হয়। ২০১০ সালের আগস্টে এই দুই দেশ নিরাপত্তা ক্ষেত্রে কৌশলগত সহযোগিতা চুক্তিতে সই করে।

আঞ্চলিক রাজনীতিতে এ দুই দেশ অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে এবং বর্তমানে ইরান ও ওমানের মধ্যে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক বজায় রয়েছে। এমনকি আরব দেশগুলোর সাথে ইরানের সম্পর্ক উন্নয়নেও ওমান গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্ততার ভূমিকা পালন করছে। এরই আলোকে এ দুই দেশের সম্পর্ক আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।

342/