শুক্রবার ভেনিজুয়েলার জাতীয় সংসদে দেয়া ভাষণে তিনি এই প্রস্তাব উত্থাপন করে বলেন, তিনি সম্প্রতি ব্রাজিল, কলম্বিয়া এবং আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে নতুন এই জোট গড়ে তোলার ব্যাপারে আলোচনা করেছেন। মাদুরো তার ভাষণে চীন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে বড় ভাই হিসেবে সম্বোধন করেন। তার মতে, বিশ্বে এক নতুন যুগের সূচনা হতে যাচ্ছে।
মাদুরো এই প্রস্তাবের জন্য সঠিক সময়টাকেই বেছে নিয়েছেন। লাতিন আমেরিকায় এখন আবারও বামপন্থীদের শক্তি বাড়ছে। ব্রাজিলসহ কয়েকটি দেশে আবারও তারা ক্ষমতায় ফিরেছে। অন্যদিকে চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বন্দ্বে ক্রমেই নতুন মাত্রা পাচ্ছে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বারবারই বলছেন, তারা একমেরুকেন্দ্রিক বিশ্ব ব্যবস্থা মেনে নেবেন না।
মাদুরোর এই প্রস্তাবের পেছনে আরেকটি কারণ হলো, লাতিন আমেরিকার বামপন্থী সরকারগুলোকে নানা উপায়ে চাপের মুখে রেখেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। 'মনরো ডকট্রিন'র ভিত্তিতে ওয়াশিংটন ১৯ শতকের শুরু থেকে গোটা লাতিন আমেরিকাকে নিজের বাড়ির উঠোন হিসেবে গণ্য করে আসছে। এই ডকট্রিনে গোটা আমেরিকা অঞ্চলে বিদেশি হস্তক্ষেপকে চরম শত্রুতামূলক তৎপরতা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এই নীতির আওতায় ওয়াশিংটন এখনও নিজেকে লাতিন আমেরিকার একচ্ছত্র অধিপতি বলে মনে করে।
মনরো ডকট্রিনের ভিত্তিতে মার্কিন সরকার লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যেমন নিজের অপছন্দনীয় সরকারকে হটিয়ে পছন্দের ব্যক্তি বা সরকারকে ক্ষমতায় বসানোর মতো হঠকারি তৎপরতাও চালিয়ে থাকে। কোনো সরকারের পতন ঘটাতে ব্যর্থ হলে সেখানে তারা নিষেধাজ্ঞাসহ নানা হাতিয়ার ব্যবহার করতে শুরু করে। ভেনিজুয়েলা, কিউবা ও নিকারাগুয়ায় বছরের পর বছর ধরে কঠোরতম নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে মার্কিন প্রশাসন।
ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো রাশিয়া ও চীনকে সঙ্গে নিয়ে মার্কিন আধিপত্য ভাঙার যে পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন তা সত্যিই বাস্তবায়িত হলে আর্থ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বিশ্বে বড় ধরণের পরিবর্তন লক্ষ্য যাবে।#
342/