‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : ABNA
রবিবার

১১ জুন ২০২৩

৫:৩৬:৩২ PM
1372331

কেনিয়ায় নিযুক্ত ইরানের সাংস্কৃতিক প্রতিনিধির প্রচেষ্টায় দেশটির গণমাধ্যমে ‘ইমাম খোমেনী (রহ.) শতাব্দীর সংস্কারক’ শিরোনামে একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): কেনিয়ায় নিযুক্ত ইরানের সাংস্কৃতিক প্রতিনিধির প্রচেষ্টায় দেশটির গণমাধ্যমে ‘ইমাম খোমেনী (রহ.) শতাব্দীর সংস্কারক’ শিরোনামে একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। প্রবন্ধটি নিম্নরূপ:

১৯৮৯ সালের জুন মাসের ন্যায় এই মাসেও সারা বিশ্বে ইরানিরা ৩রা জুন ১৯৮৯ সালে তেহরানে ওফাতপ্রাপ্ত ইরানের ইসলামী বিপ্লবের মহান নেতা ইমাম খোমেনী (রহ.)-এর মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে দোয়া মাহফিল, আলোচনা সভা এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে বলা যেতে পারে, সম্ভবত তিনি বিংশ শতাব্দীর একজন সবচেয়ে সফল বৈপ্লবিক; যিনি ছিলেন অতুলনীয় এবং অপ্রতিদ্বন্দ্বী।

ইরানি জাতি তার নেতৃত্বেই পশ্চিমা দাসত্ব থেকে মুক্তি পায়। ইমাম খোমেনী (রহ.) ১৯৭৮ সালে পাহলভি রাজবংশের বিরুদ্ধে ইসলামী বিপ্লবের নেতৃত্ব দেন এবং ইরানকে তার অভ্যন্তরে চলা নির্যাতন ও অত্যাচার এবং বৈদেশিক আধিপত্য থেকে মুক্ত করেন। ফলে ইরানের ২৫০০ বছরের রাজতান্ত্রিক শাসনের অবসান ঘটে।

ইমাম খোমেনী (রহ.) ইসলামি ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ বিপ্লব এবং বিশ্ব ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিপ্লবের প্রেরণা জোগান এবং নেতৃত্ব দান করেন।

ইমাম খোমেনী (রহ.)-এর নেতৃত্বে ইসলামী বিপ্লবের বিজয়, বিশ্বে ইসলামী সভ্যতার পুনরুজ্জীবনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে।

ইরানের ইসলামী বিপ্লবকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে সারা বিশ্ব ইরানের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক, মনস্তাত্ত্বিক ও সামরিক যুদ্ধের সূচনা করে। কিন্তু ইমাম খোমেনী (রহ.) তার দৃঢ় ঈমান এবং সাহসিকতার মাধ্যমে এই বিপ্লবকে সুরক্ষিত রাখেন।

অভ্যন্তরীণ নাশকতার পাশাপাশি বিদেশী শক্তির সশস্ত্র আক্রমণ দৃশ্যত এটি ইরাকের সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে হয়েছিল, কিন্তু এর পিছে পশ্চিমাদের পূর্ণ শক্তির সমর্থন ছিল।

ইমাম খোমেনী (রহ.)-এর নেতৃত্বে দীর্ঘ আট বছর ধরে ইরানি জনগণ এককভাবে এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।

বিপ্লবের নেতা ইমাম খোমেনী (রহ.), যার ৩৪ তম মৃত্যুবার্ষিকী এই ৩রা জুন, তিনি ঐ সকল নেতাদের একজন, যিনি ইরান তথা ইসলামী বিশ্বের অধিকাংশের নিপীড়নের কারণ সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পেরেছিলেন।

দেশের প্রায় সকল ক্ষমতাই ইমাম খোমেনী (রহ.)-এর হাতে থাকলেও তিনি ইসলামী শিক্ষার ভিত্তিতে প্রজাতন্ত্র সরকার ব্যবস্থা বেছে নেন এবং জনগণের ইচ্ছায় তা প্রতিষ্ঠা করেন।

বর্তমানে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান তার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ব্যবস্থার নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে লুটেরা ও বাহ্যিক শক্তিগুলোর জোরপূর্বক কোনরূপ হস্তক্ষেপ ছাড়াই প্রকৃত স্বাধীনতা উপভোগ করছে।

ইরানসহ মাত্র কয়েকটি দেশ বৃহৎ আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে এই ধরনের প্রতিরোধ দেখাতে সক্ষম হয়েছে।

তাহলে, কি কারণে ইরানি জনগণকে এরূপ চাপের প্রতিরোধ করতে হয়েছে? যে প্রতিরোধ তারা  আজ অবধি অব্যাহত রেখেছে?

ইমাম খোমেনী (রহ.)-এর সুউচ্চ ব্যক্তিত্ব ছিল তাকওয়ায় পূর্ণ। কোন ব্যক্তি, পদ বা শ্রেণীর প্রতি তার আগ্রহ ছিল না।

ইসলামি ইরান তার শক্তি ও ক্ষমতাকে সরাসরি ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলোর প্রতি আনুগত্য থেকে গ্রহণ করেছে।

ইসলামী বিপ্লবের বিজয়ের পর ইমাম খোমেনী (রহ.) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ইসলামী শাসন ব্যবস্থা, ইরানের জনগণকে এত বড় ত্যাগ স্বীকার করার ক্ষেত্রে সক্ষম করে তুলেছে। শুধু মুসলমানদেরকে নয় বরং সর্বত্র নিপীড়িত মানুষকে অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে উদ্বুদ্ধ করেছে।#176