‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
বৃহস্পতিবার

৫ অক্টোবর ২০২৩

৭:৪০:৩৯ PM
1398199

আমরা নিউক্লিয়ার যুগে প্রবেশ করছি, পরমাণু শক্তি শান্তিপূর্ণ পথে ব্যবহার করব: হাসিনা

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তিকে শান্তিপূর্ণ পথে ব্যবহার করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ (বৃহস্পতিবার) নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানি ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি।

এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা নিউক্লিয়ার যুগে প্রবেশ করছি। আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ, পরীক্ষিত, রাশান ফেডারেশন এবং প্রেসিডেন্ট এখানে উপস্থিত থেকে বাংলাদেশকে সম্মানিত করেছেন। আমাদের সবাইকে সম্মানিত করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের এই পরীক্ষিত বন্ধুদেশকে আমরা আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। বাংলাদেশ আগামীতে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। এই পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র সেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার আরেকটি পদক্ষেপ।’

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে বাংলাদেশের জনগণ, সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ-রাশিয়ার বন্ধুত্ব অটুট থাকুক।’

সমতা সম্মান বাংলাদেশ-রাশিয়ার বন্ধুত্বের ভিত্তি: পুতিন

ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, বাংলাদেশ মস্কোর পুরোনো পরীক্ষিত বন্ধু। সমতা ও সম্মান এই বন্ধুত্বের ভিত্তি।

প্রেসিডেন্ট পুতিন অনুষ্ঠানে বলেন, রাশিয়া শুধু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন নয়, প্রকল্পের পুরো সময়কাল সব ধরনের কারিগরি সহযোগিতাও করে যাবে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো যৌথ প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নে রাশিয়া সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলেও জানান ভ্লাদিমির পুতিন। 

পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প সরকারের দুর্নীতির আরেকটি প্রমাণ: মঈন খান

এদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, ভারতের তামিলনাড়ুর কুদামকুলীনে একই মডেলের ২০০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ব্যয় ৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারে সম্পন্ন হলেও একই কোম্পানির রূপপুর প্রকল্পের ব্যয় দ্বিগুণেরও বেশি কেন? এটি মূলত সরকারের অব্যাহত দুর্নীতির একটি জ্বলন্ত প্রমাণ।

আজ দুপুরে সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মঈন খান এসব কথা বলেন।

বিএনপির মিডিয়া সেলের উদ্যোগে ‘পরিবেশ ও মানব বিপর্যয়ের আশঙ্কা উপেক্ষা করে দুর্নীতিগ্রস্ত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ- একটি রাষ্ট্রীয় অপরিণামদর্শিতা’- শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

ড. মঈন খান বলেন, কতটা মূল্য দিয়ে আমরা ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র পাচ্ছি, কোন কোন যুক্তির ভিত্তিতে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলো- সেটি একটি ব্যাপক গবেষণার বিষয়। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প যেন বাংলাদেশের দুঃশাসন ও দুর্নীতির এক জাইগান্টিক মনুমেন্ট। বিগত সময়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের আওতাধীন আবাসন ও বালিশকাণ্ডের অবিশ্বাস্য দুর্নীতিই মূল প্রকল্পে দুর্নীতির ব্যাপকতা প্রমাণ করে।

তিনি বলেন, ১২ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলারের প্রাক্কলিত এই প্রকল্প নিশ্চিতভাবে ২০ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে দাঁড়াবে। যার ১২ বিলিয়নের ওপর রাশিয়ার সাপ্লাই ক্রেডিট। আওয়ামী অর্থনৈতিক দুঃশাসনের অন্যতম মাধ্যম হলো- এই সাপ্লাইয়ার্স ক্রেডিট। কীভাবে এই প্রকল্পে বিপুল ব্যয় নিরূপণ হলো, কোন অর্থনৈতিক সমীক্ষার মাধ্যমে এই ব্যয়ের বাণিজ্যিক কার্যকারিতা নিরূপণ করা হয়েছে- সেটা কখনোই জনসম্মুখে আসেনি।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাংলাদেশের মতো জনঘনত্বপূর্ণ একটি দেশের জন্য অপরিণামদর্শিতার একটি জলন্ত উদাহরণ বলে মন্তব্য করেন এই বিএনপি নেতা।#