‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Jugantor
মঙ্গলবার

২৪ অক্টোবর ২০২৩

১:৪১:৫৫ AM
1404418

ইসরাইলের বোমায় ২৪ ঘণ্টায় ১৮২ শিশুসহ নিহত ৪৩৬

রোববার রাতেই তারা ৩২০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে বলে সেনাবাহিনী জানিয়েছে। এ হামলার কারণে গাজার চারদিকে কেবল ধ্বংসযজ্ঞ আর বাতাসে লাশের গন্ধ। বিমান হামলায় নিহতদের অধিকাংশই নারী, শিশুসহ সাধারণ ফিলিস্তিনি।


আবনা ডেস্ক: অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের আগ্রাসন থামানোর যেন কেউ নেই। ভয়াবহ মানবিক সংকটের মধ্যেও হামলার ১৭তম দিনে বোমাবর্ষণ আরও তীব্র করেছে ইসরাইল। তাদের এ নির্মম হামলায় ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৮২ শিশুসহ ৪৩৬ ফিলিস্তিনি।

ইসরাইলের অধিকৃত ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা রণক্ষেত্র পরিণত করেছে নেতানিয়াহুর বিমানবাহিনী। এই বর্বরতার বিরুদ্ধে একদিকে আরব দুনিয়ার প্রতিবাদ, অন্যদিকে বিক্ষোভ হলেও তাতে ভ্রুক্ষেপ করছে না ইসরাইল।

তারা বরং ঘোষণা দিয়ে গাজা ভূখণ্ডে বোমা হামলার মাত্রা কয়েকগুণ বাড়িয়েছে। রোববার রাতেই তারা ৩২০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে বলে সেনাবাহিনী জানিয়েছে। এ হামলার কারণে গাজার চারদিকে কেবল ধ্বংসযজ্ঞ আর বাতাসে লাশের গন্ধ। বিমান হামলায় নিহতদের অধিকাংশই নারী, শিশুসহ সাধারণ ফিলিস্তিনি।

ফিলিস্তিনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোয় বলা হচ্ছে, ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার পর থেকে রোববারের বোমা হামলার মাত্রা ছিল সবচেয়ে জোরালো। গাজার বাসিন্দা ২১ বছরের কলেজছাত্র তালা হারজাল্লাহ হামলার ভয়াবহতা সম্পর্কে বলেন, রোববার রাতের ভয়াবহতা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আমরা আক্ষরিক অর্থেই ভয়ে থরথর করে কাঁপছিলাম। আমরা বুঝতে পারছিলাম না এ যাত্রা বেঁচে যাব কি না। প্রতিমুহূর্তেই মৃত্যু যেন আমাদের গ্রাস করছিল। সারা রাত আমরা নামাজ পড়ে কাটিয়েছি। দোয়া করেছি আল্লাহ যেন আমাদের বাঁচিয়ে রাখেন।

ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, কোনো সতর্কবার্তা না দিয়েই বেসামরিক স্থাপনায় বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের আবাসিক এলাকায় কমপক্ষে ২৫টি ইসরাইলি বিমান হামলা রেকর্ড করা হয়েছে।

গাজায় তুমুল হামলা চালানোর পাশাপাশি পশ্চিম তীরে নাবলুস, তুলকারম এবং জেনিনে হামলা চালানোর সময় ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।

স্পেক্টেটর ইনডেস্ক সামাজিক মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে জানিয়েছে, কয়েক ঘণ্টা ধরে গাজায় নিরবচ্ছিন্ন বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। গাজার আলশিফা, আল কুদস এবং ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের কাছে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে বিমান হামলা চালিয়ে একটি আবাসিক ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরাইল। বিধ্বস্ত ভবন থেকে ৩০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

তাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেকে আটকা পড়ে আছেন। রোববার গভীর রাতে জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের আল-শুহাদা এলাকার ওই ভবনে বিমান হামলা চালানো হয়। এছাড়া দক্ষিণ গাজার রাফাহ এলাকায় একটি আবাসিক ভবনে ইসরাইলের বিমান হামলায় নারী, শিশুসহ কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রোববার রাতভর ইসরাইলি বাহিনীর তীব্র বোমা হামলায় এক রাতেই ১৮২ শিশুসহ ৪৩৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ অবস্থায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রক্তের তীব্র সংকটের কারণে হাসপাতালে রক্তদানের আহ্বান জানিয়েছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনীর বোমা হামলায় ১৭ দিনে ২০৫৫ শিশু এবং ১১১৯ জন নারীসহ কমপক্ষে ৪ হাজার ৮৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১৫ হাজার ২৭৩ জন। ইসরাইলের এ অব্যাহত হামলা ও জ্বালানি সংকটে ১২টি হাসপাতাল এবং ৩২টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র সেবাদান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে।

এদিকে মিসরের রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, রাফাহ সীমান্ত দিয়ে তৃতীয় দফা ত্রাণ সোমবার গাজায় পাঠানো হয়েছে। ইনস্টাগ্রামের আরেক পোস্টে এ তথ্য জানিয়ে রেডক্রস বলছে, এ ত্রাণের মধ্যে চিকিৎসা সরঞ্জামসহ প্রয়োজনীয় ত্রাণ রয়েছে। তবে তৃতীয় দফায় ঠিক কতটি ট্রাক ত্রাণ নিয়ে গেছে, সেটা জানায়নি।