‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
সোমবার

৩০ অক্টোবর ২০২৩

৪:১০:৪৫ PM
1406712

ইহুদিবাদী ইসরাইল এবং রাশিয়ার মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার নেপথ্যে

ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের একটি প্রতিনিধি দলের মস্কো সফরের পর ইহুদিবাদী ইসরাইল ও রাশিয়ার মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। এই বিষয়ে ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হামাসের প্রতিনিধি দলের মস্কো সফরের প্রতিবাদে দখলকৃত অঞ্চলে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আনাতোলি ভিক্টোরভকে তলব করেছে।

প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, সংগঠনটির রাজনৈতিক কার্যালয়ের সদস্য মুসা আবু মারজুকের নেতৃত্বে হামাসের একটি প্রতিনিধি দল রাশিয়ার বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক কর্মকর্তার সাথে দেখা করে বৈঠকে করেছেন। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই প্রেক্ষাপটে একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছে যে হামাস প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠকে তারা জিম্মিদের মুক্তি এবং গাজা উপত্যকা থেকে রাশিয়ান নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেছে।

হামাস আন্দোলন ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘর্ষ এবং গাজা যুদ্ধ বন্ধে মস্কোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টার বিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অবস্থানেরও প্রশংসা করেছে। ইউরোপীয় ও এশিয়ান বিষয়ক ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-মহাপরিচালক সাইমন হ্যালপেরিন রুশ রাষ্ট্রদূতকে বলেছেন, ইসরাইল হামাসের প্রতি মস্কোর স্পষ্ট নিন্দার অভাবকে খুব গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে।

ইসরাইল এবং রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক গত কয়েক বছর ধরে উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে  বিশেষ করে এই অঞ্চলের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সংকটের কারণে তেল আবিব এবং মস্কোর মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। সিরিয়ার সঙ্কট এবং রাশিয়ার আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে মস্কোর এই সঙ্কটে প্রবেশের পর এই উত্তেজনাগুলো নানা উত্থান-পতনের মুখোমুখি হয়েছে।। কিন্তু গত এক বছরে ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাশিয়া ও ইহুদিবাদী শাসকের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। ইউক্রেনকে সহযোগিতায় পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর অংশ গ্রহণ বিশেষ করে কিয়েভের প্রতি ওয়াশিংটনের নীতির সাথে সমন্বয়ের ফলে মস্কো ও তেল আবিবের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলেছে।

ইউক্রেনে ইসরায়েল কর্তৃক সামরিক সরঞ্জাম প্রেরণ এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা নীতির সমর্থনসহ আমেরিকান নীতির সমর্থন এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে  ইউক্রেনকে অস্ত্রে সজ্জিত করার জন্য তেল আবিবের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানাতে মস্কো বাধ্য হয়েছিল। 

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউক্রেনে যুদ্ধ বৃদ্ধি এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইসরাইলের অবস্থানের সঙ্গে সঙ্গে এই উত্তেজনা আরও তীব্র হয়েছে। কিছুদিন আগে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠকের পর মস্কো রাশিয়ার শেয়ার বাজার থেকে ইহুদিবাদী গোষ্ঠীকে বের করে দেয়। 

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলি বাহিনীর হামলার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মস্কো কর্তৃপক্ষ সব সময় গাজায় ইসরাইলি সেনাবাহিনীর হামলা বন্ধ  এবং সেখানে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। গাজার জনগণের ওপর ইসরায়েলি বর্ণবাদী শাসকগোষ্ঠীর অব্যাহত বর্বরোচিত হামলার ফলে গত কয়েক সপ্তাহে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ নিহত ও আহত হয়েছে। ইতিমধ্যে, আমেরিকা এবং তার মিত্ররা ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীকে সাহায্য করার জন্য তাদের সমস্ত সম্পদ সেখানে একত্রিত করেছে। রাশিয়ার ঘোষণা ও মধ্যস্থতার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও গাজায় ইসরাইলের বোমাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। এখন হামাসের একটি প্রতিনিধি দলের মস্কো সফরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী কর্তৃপক্ষের ক্ষোভ আরও বেড়েছে।#