‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
শনিবার

১৮ নভেম্বর ২০২৩

২:৩১:৩৮ PM
1412743

শি'র আমেরিকা সফর: চীন-মার্কিন সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কোন দিকে ?

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকোতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান মতপার্থক্য নিরসনের পাশাপাশি একে অপরের রেড লাইন এবং নীতিকে সম্মান করা এবং উস্কানিমূলক কাজ করা থেকে বিরত থাকার ব্যাপারে দুই নেতা গুরুত্বারোপ করেন।

এই বৈঠকে শি জিনপিং আশা প্রকাশ করেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনের উপর থেকে একতরফা নিষেধাজ্ঞা বাতিল করবে এবং চীনা কোম্পানিগুলির জন্য বাইডেন একটি অনুকূল ব্যবসায়িক পরিবেশ সৃষ্টি করবেন।

যদিও বেইজিংয়ের দৃষ্টিকোণ থেকে শি'র আমেরিকা সফর এবং বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক একটি স্বাভাবিক বিষয় ছিল তবে গণতন্ত্রপন্থী শাসক হিসেবে জাহির করা মার্কিন কর্মকর্তারা এই বৈঠকটিকে দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউস অবশ্যই এর থেকে লাভবান হতে চায়। কারণ মনে হচ্ছে যে আমেরিকা যেটি নিজেকে তথাকথিত বিশ্ব পরাশক্তি বলে মনে করে তারা চীনের প্রভাবকে উপেক্ষা করে অনেক বৈশ্বিক সমস্যা সমাধান করতে এবং এগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারছে না। তই ইউক্রেন সংকটসহ বৈশ্বিক কর্মসূচিকে এগিয়ে নিতে ওয়াশিংটনের এই মুহূর্তে চীনের সহযোগিতার প্রয়োজন। 

রাজনৈতিক ইস্যুতে বিশেষজ্ঞ "লি সু জুয়ান" এ সম্পর্কে বলেছেন: "জো বাইডেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি অচলাবস্থা এবং বিভ্রান্তি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য "শি জিনপিং" এর সাথে দেখা করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন এবং তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যুক্ত রাজনৈতিক চেনাজানা সরকার এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতারা শি জিনপিংয়ের আমেরিকা সফরের আগে এবং পরে অনেক বিজ্ঞাপন দিয়েছে এবং এটি বাইডেনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করেছে।

প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি বাইডেনের সাথে তার বৈঠকে চীনের আঞ্চলিক, অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সংবেদনশীলতা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি তুলে ধরেন এবং জোর দেন যে তাইওয়ান ইস্যুটি বেইজিংয়ের উত্তেজনাপূর্ণ বিষয় এবং ওয়াশিংটন এটি থেকে বিচ্যুত হওয়া উচিত নয়। শির সঙ্গে দেখা করার জন্য বাইডেনের দৃঢ় ইচ্ছার মাধ্যমে কিছু বিশ্লেষক এই দৃষ্টিভঙ্গি প্রত্যাখ্যান করেন না যে তিনি বেইজিংয়ের আচরণ এবং কর্মক্ষমতা যাচাই করতে ওয়াশিংটনের নীতির কাঠামোর মধ্যে কাজ করেছেন। কারণ চীনের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে আমেরিকার সামরিক ও রাজনৈতিক আচরণ এবং পদক্ষেপ বেইজিংকে ক্ষুব্ধ করেছে এবং এসব বিষয় বেইজিং এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করেছে। ওয়াশিংটনের দৃষ্টিকোণ থেকে দুই দেশের মধ্যে এই অচলাবস্থা চলতে থাকলে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সংকট সমাধানে বেইজিংয়ের সাথে বৈশ্বিক বোঝাপড়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সু শু হেসওয়ান বলেছেন: "চীন খুব ভালো করেই জানে যে ওয়াশিংটন চীনের বিষয়ে তার প্রতিশ্রুতির প্রতি অনুগত নয় এবং তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হল চীনকে আটকে রাখার চেষ্টা করা। অন্যদিকে  চীন বাস্তবে দেখিয়েছে যে তারা স্বাধীনভাবে এবং তার জাতীয় স্বার্থের কাঠামোর মধ্যে কাজ করতে মোটেও পিছ পা হয় না।

যাই হোক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যিনি চীনের প্রেসিডেন্টকে একজন স্বৈরশাসক হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন তার বক্তব্যের নিন্দায় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের অবস্থানের মাধ্যমে এটা দেখায় যে চীন সম্পর্কে আমেরিকার দৃষ্টিভঙ্গি ও অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি।  চীন ক্রমেই আমেরিকার জন্য একটি ভয়ানক এবং অপ্রতিরোধ্য প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নিজেকে  তুলে ধরছে। আমেরিকাও এটা ভালোভাবে জানে যে বেইজিং বিশ্বব্যাপী মার্কিন আধিপত্যকে ধ্বংস করছে।#