‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
শনিবার

১৬ ডিসেম্বর ২০২৩

১:২৬:৩২ PM
1420742

সকল ক্ষেত্রে ইরানের সাথে সম্পর্ক জোরদার করা অত্যন্ত জরুরি: তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ইরানের সাথে আর্থ-রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখা এবং এ সম্পর্ক আরো জোরদার করা অত্যন্ত জরুরি ।

আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-মুখপাত্র হাফেজ জিয়া আহমাদ তাকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া এক বার্তায় কাবুলে ইরানের রাজনৈতিক দফতরের প্রতিনিধি এবং আফগানিস্তান বিষয়ক ইরানের বিশেষ প্রতিনিধি হাসান কাজেমি কোমির সাথে আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মৌলভি আমির খান মোত্তাকির সাক্ষাতের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ওই সাক্ষাতে আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইরানের সাথে সর্বাত্মক সম্পর্ক জোরদারে তার দেশের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এ সাক্ষাতে উভয়পক্ষ  আফগানিস্তান ও ইরানের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন, ইরানে আফগান শরণার্থীদের সমস্যা এবং দ্বিপক্ষীয় রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমস্যার আরো অবনতি হওয়ার কারণে, বিশেষ করে পাকিস্তানের সাথে বৈরী সম্পর্ক সৃষ্টি হওয়ার পর, তালেবান কর্তৃপক্ষ তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য একমাত্র ইরানকেই খোলা জানালা বলে মনে করে। অর্থাৎ ইরানই তাদের একমাত্র অবলম্বন। প্রকৃতপক্ষে, দুই বছর আগে তালেবান গোষ্ঠী আবারো আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে তাদের সাথে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে।

আফগানিস্তানের রাজনৈতিক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মৌলভি মুফলেহ বলেছেন, "তালেবান গোষ্ঠী গুরুতর অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে রয়েছে এবং তালেবান ও পাকিস্তানের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টির পাশাপাশি পাক-আফগান সীমান্ত ক্রসিং ক্রমেই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তালেবান সরকারকে। এ অবস্থায় ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান বরাবরের মতোই আফগানিস্তানের জনগণের একমাত্র বন্ধু ও সাহায্যকারী।"

তালেবান কর্মকর্তাদের মতে, ইরানে আশ্রয়গ্রহণকারী আফগান শরণার্থীদের আইনি ও বিচারিক সমস্যার সমাধান এবং দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।

চার দশকেরও বেশি সময় ধরে ইরান সবসময়ই ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগান জনগণের দ্বিতীয় আবাসস্থল এবং এখনো আফগান অভিবাসীরা ইরানের বিভিন্ন শহরে ইরানি জনগণের সাথে শান্তিতে বসবাস করছে। এ ক্ষেত্রে ইরান এবং আফগানিস্তানের জনগণের মধ্যে কোনও সমস্যা নেই। কেননা এই দেশটি প্রাচীন পারস্য সভ্যতার অংশ এবং আফগানিস্তানের জনগণ সবসময় ইরানকে তাদের সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাহায্যকারী হিসাবে বিবেচনা করে। এখন পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির জন্য শত্রুরা ব্যাপক চেষ্টা চালালেও তাদের সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে।

ইরানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুরুশ আমিরি এ ব্যাপারে বলেছেন, 'আফগানিস্তান ইরানের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। কিন্তু এই দেশটির কোনো সমুদ্র সীমা নেই এবং চারদিক থেকে স্থলবেষ্টিত হওয়ায় বিশ্বের অন্য দেশের সাথে আফগানিস্তানের  যোগাযোগের রুটগুলো অনেক সীমিত। সে কারণে ইরান চ'বাহার সমুদ্র বন্দর এবং রেলপথসহ বেশ কয়েকটি যোগাযোগ রুট স্থাপন করে আফগানিস্তানকে অন্য দেশের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের সুযোগ করে দিয়েছে যাতে দেশটি অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হতে পারে এবং বিভিন্ন সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারে।'

যাই হোক, আফগানিস্তান বিষয়ক ইরানের বিশেষ প্রতিনিধি হাসান কাজেমি কোমি মনে করেন, আফগান মন্ত্রীসভার অর্থনৈতিক বিষয়ক সচিব মোল্লা আবদুল গনি বারাদারের নেতৃত্বে আফগানিস্তানের উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিদলের সাম্প্রতিক ইরান সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা বিস্তারে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। #